Inqilab Logo

মঙ্গলবার ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ২০ কার্তিক ১৪৩১, ০২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

রিফাত হত্যা মামলার নথি হাইকোর্টে

মিন্নির আপিল শিগগিরই

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৬ অক্টোবর, ২০২০, ১২:০৮ এএম

রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত তার স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি শিগগিরই আপিল করবেন। এ কথা জানিয়েছেন তার কৌঁসুলি জেড আই খান পান্না। গতকাল রোববার দুপুরে মিন্নির বাবা মোজাম্মেল হোসেন রায়ের কপি এবং স্বাক্ষরিত ওকালতনামা নিয়ে তার চেম্বারে হাজির হন।

গতকাল সকালেই মিন্নিসহ মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত ৬ আসামির ডেথ রেফারেন্সের (মৃত্যুদন্ড কার্যকর সংক্রান্ত অনুমোদন) নথি হাইকোর্ট প্রশাসনে পৌঁছেছে বলে জানা গেছে। আইনজীবীরা জানান, ফৌজদারি মামলায় বিচারিক আদালত যখন আসামিদের মৃত্যুদন্ড দেন তখন ওই দন্ড কার্যকরের জন্য হাইকোর্টের অনুমোদনের প্রয়োজন হয়। এজন্য সংশ্লিষ্ট বিচারিক আদালত ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৭৪ ধারা মোতাবেক মামলার সব নথি হাইকোর্টে পাঠান। ওই নথির ভিত্তিতে পরবর্তী বিচার কার্যক্রম চলে। এটিকে বলা হয়, ‘ডেথ রেফারেন্স’। সরকারপক্ষ মৃত্যুদন্ড কার্যকরের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে আদালতে আবেদন জানান।

অন্যদিকে আসামিপক্ষও বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল কিংবা জেল আপিল করেন। উভয়পক্ষের আবেদনের ওপর শুনানি গ্রহণ করেন হাইকোর্ট। এর আগে বিচারিক আদালতের মামলার নথি হাইকোর্টে এলে ডেথ রেফারেন্স শাখা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে পেপারবুক প্রস্তুত করে। পেপারবুক প্রস্তুত হলে শুনানির জন্য কার্যতালিকায় ওঠে। মিন্নির পক্ষের আইনজীবী জেড আই খান পান্না ভিডিও বার্তায় বলেন, মামলার কাগজপত্র সবেমাত্র পেয়েছি। আমরা অতি শিগগিরই আপিল ফাইল করতে যাচ্ছি। দেশবাসীর কাছে দোয়া চাই যেন ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়।

গতকাল মিন্নির বাবা মোজাম্মেল হোসেন কিশোর সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ভবনে জেড আই খান পান্নার চেম্বারে আসেন। এ সময় তিনি সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, মোবাইলে একদিন কথা হইছিল মিন্নির সঙ্গে। ফিজিক্যালি দেখা হয়নি। ওইদিন মিন্নি কথাই বলতে পারেনি। কান্নায় ভেঙে পড়েছে। ‘ও আব্বু’ বলার পর আর কোনো কথাই বলতে পারেনি সে। এর আগে গত ৩০ সেপ্টেম্বর বরগুনার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আছাদুজ্জামান আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করেন। রায়ে প্রাপ্তবয়স্ক ১০ আসামির মধ্যে ৬ জনকে মৃত্যুদন্ডাদেশ দেন। একই সঙ্গে তাদের ৫০ হাজার টাকা করে অর্থদন্ড দেন। বাকি ৪ আসামিকে খালাস দেন। মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্তরা হলেন, মো. রাকিবুল হাসান রিফাত ওরফে রিফাত ফরাজী, আল কাইয়ুম ওরফে রাব্বী আকন, মোহাইমিনুল ইসলাম সিফাত, রেজোয়ান আলী খাঁন হৃদয় ওরফে টিকটক হৃদয়, মো. হাসান এবং আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি। খালাসপ্রাপ্তরা হলো, মো. মুসা (পলাতক), রাফিউল ইসলাম রাব্বি, মো. সাগর এবং কামরুল ইসলাম সাইমুন।

প্রসঙ্গত: ২০১৯ সালের ২৬ জুন বরগুনা সরকারি কলেজ রোডের ক্যালিক্স একাডেমির সামনে স্ত্রী মিন্নির সামনে রিফাত শরীফকে কুপিয়ে জখম করে নয়ন বন্ড ও রিফাত ফরাজীর সহযোগীরা। গুরুতর অবস্থায় রিফাতকে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে নেয়া হয়। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রিফাত মারা যান। এ ঘটনায় রিফাতের বাবা দুলাল শরীফ বাদী হয়ে সাব্বির আহম্মেদ ওরফে নয়ন বন্ডকে প্রধান আসামি করে ১২ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত আরও পাঁচ-ছয়জনের বিরুদ্ধে বরগুনা থানায় হত্যা মামলা করেন। এ মামলায় প্রথমে মিন্নিকে প্রধান সাক্ষী করা হয়েছিল। কিন্তু তদন্তে মিন্নির সংশ্লিষ্টতা খুঁজে পাওয়ায় চার্জশিটে তাকে আসামি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এ ঘটনার পর ২ জুলাই বুড়িরচর ইউনিয়নের পুরাকাটা ফেরিঘাট এলাকায় পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয় প্রধান আসামি নয়ন বন্ড (২৫)।



 

Show all comments
  • মোঃ দুলাল মিয়া ৫ অক্টোবর, ২০২০, ২:৩৮ এএম says : 0
    মিন্নি কে দেষ দিয়ে মনে হয় ভুল হবে। একটি মেয়ে কয়জনকে পিরাবে।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ