নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
সাউদাম্পটনের রোজ বোলের এই উইকেটের পরিচয় পাওয়া গিয়েছিল আগেই। দুই দিন আগে এই মাঠেই আফগানদের হারাতে তিরঘাম ছুটে গিয়েছিল বিশ্বকাপ ফেভারিট ভারতের। সেই স্লো উইকেটে দারুণ ব্যাটিং করল বাংলাদেশ। মুশফিকুর রহিম ও সাকিব আল হাসানের ফিফটিতে বিশ্বকাপে নিজেদের সপ্তম ম্যাচে আফগানিস্তানকে ২৬৩ রানের চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেয় মাশরাফির দল।
উইকেটের ধারণ জেনেই টস জিতে বল বেছে নেন আফগান অধিনায়ক। বোলিংটা তাদের মন্দ হয়নি। রানের জন্য লড়াই করতে হয়েছে টাইগার ব্যাটসম্যানদের। থিতু হয়েও ইনিংস টেনে লম্বা করতে পারেননি তামিম ইকবাল, লিটন দাশ, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদরা। তবে সাবিক ও মুশফিকের সঙ্গে কার্যকরী জুটিতে প্রত্যেকেই রেখেছেন অবদান। আফগানিস্তানের ফিল্ডিংটা আরেকটু ভালো হলে অন্তঃত ২০-২৫ রান তারা সেভ করতে পারত।
বাংলাদেশের ইনিংসের প্রাণ বলা যায় মুশফিকুর রহিমের ৮৭ বলে চার বাউন্ডারি ও এক ছক্কায় করা ৮৩ রানের ইনিংসটি। এই ইনিংস দিয়েই তামিম ও সাকিবের পর তৃতীয় বাংলাদেশী হিসাবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১১ হাজার রানের মাইলফলক পেরিয়েছেন মুশফিক। এসময় দায়ীত্বশীল ব্যাটিংয়ে সাকিব ও মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে গড়েন দুটি ফিফটি ও মোসাদ্দেকের সঙ্গে একটি চল্লিশোর্ধো রানের জুটি।
সাকিবের ৬৯ বলে এক বাইন্ডারিতে করা ৫১ রানের ইনিংস বলে দেয় এই উইকেটে রান তোলা কতটা কঠিন। এই ইনিংস দিয়েই বিশ্বকাপে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে এক হাজার রানের মাইলফলক পেরিয়েছেন সাকিব। ফিরেছেন আসরে সর্বোচ্চ (৪৭৬) রান সংগ্রাহকের তালিকার শীর্ষে। এদিনই সাকিব-মুশফিক জুটি ছাড়িয়েছে তিন হাজার রানের মাইলফলক।
এমন দিনে ৫০তম ওয়ানডে ম্যাচটা স্বরণীয় করে রাখতে পারেননি কেবল সৌম্য সরকার। পরিস্তিতির বিচারে এদিন পাঁচে ব্যাটে নেমে স্বস্তিতে ছিলেন না। স্পিনের বিপক্ষে ভুগতে ভুগতে শেষ পর্যন্ত লেগ বিফোঁর হন মুজিব-উর রহমানের বলে। রিভিউ নিয়েও বাঁচতে পারেননি। ম্যাচে তিন উইকেট নিয়ে এই মুজিবই সময়মত আফগানদের ব্রেক থ্রু এনে দেন। সৌম্যের আগের ওভারে সাকিবকেও লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলেন এই স্পিনার। তারও আগে শুরুটা হয় দলীয় ২৩ রানে লিটনকে শর্ট কাভারে ক্যাচ বানিয়ে। অবশ্য ওপেনে নামা লিটনের এই ক্যাচ নিয়ে যথেষ্ঠ বিতর্ক আছে। হাশমতউল্লাহ শহিদি ক্যাচটা নেয়ার আগে বল মাটি স্পর্শ করেছে কি-না তা ছিল অনিশ্চিত। গ্রাউন্ড আম্পায়ার ‘সফট সিগনালে’ আউট দেখিয়ে টিভি আম্পারের স্বরণাপন্ন হন। সেখানে বার বার রিপ্লে দেখে গ্রাউন্ড আম্পায়ারের সিদ্ধান্তে বহাল থাকেন টিভি আম্পায়র আলিম দার। অথচ রিপ্লে দেখে মনে হচ্ছিল ক্যাস নেয়ার সময় বল মাটি স্পর্শ করেছে। সৌম্যের লেগ বিফোরে নেওয়া রিভিউয়েও প্রশ্নবিদ্ধ সিদ্ধান্ত দেন এই পাক আম্পায়ার।
রানে ফিরতে তামিম লড়েছেন এদিনও। নড়বড়ে ব্যাটিংয়ে ৫৩ বলে ৩৬ করে ক্লিন বোল্ড হয়ে যান মোহাম্মাদ নবির বলে। এর আগে অবশ্য সাকিবের সঙ্গে দ্বিতীয় উইকেটে গড়েন ৫৯ রানের জুটি। আর শেষ দিকে মুশফিকের সঙ্গে ৩৩ বলে গড়েন ৪৪ রানের মূল্যবান জুটি গড়েন দলে ফেরা মোসাদ্দেক হোসেন। দৌলাতকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে ৪৯তম ওভারে আউট হন মুশফিক। স্কোরবোর্ডের চেহারা তখন তৃপ্তিদায়কই হওয়ার কথা। শেষ পর্যন্ত ব্যাটিং করা মোসাদ্দেকের ২৪ বলে ৩৫ রানের ক্যামিও বাংলাদেশকে এনে দেয় ৭ উইকেটে ২৬২ রানের সংগ্রহ। যাকে নিয়ে বাংলাদেশের বেশি ভয় ছিল সেই রশিদের ১০ ওভারে আসে ৫২ রান। ৩৯ রানে ৩ উইকেট নিয়ে সফল বোলার মুজিব।
এই পিচেই ২২৪ রানের পুঁজি নিয়েও ১১ রানে জিতেছিল ভারত। দারুণ জয়ে সেমিফাইনালের পথে আরেক ধাপ এগিয়ে যাওয়া তাই বাংলাদেশের জন্য সহজ ছিল বলাই যায়।
এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত অবশ্য ভালোই লড়ছিল আফগানরা। ১৬ ওভারে তাদের রান ছিল ১ উইকেটে ৬০। রহমত শাহকে তুলে নিয়ে ৪৯ রানের উদ্ভোধনী জুটি বিচ্ছিন্ন করেন সাকিব।
বাংলাদেশ : ৫০ ওভারে ২৬২/৭ (লিটন ১৬, তামিম ৩৬, সাকিব ৫১, মুশফিক ৮৩, সৌম্য ৩, মাহমুদউল্লাহ ২৭, মোসাদ্দেক ৩৫, সাইফ ২*; মুজিব ১০-০-৩৯-৩, দওলত ৯-০-৬৪-১, নবি ১০-০-৪৪-১, গুলবাদিন ১০-১-৫৬-২, রশিদ ১০-০-৫২-০, রহমত ১-০-৭-০)।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।