নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
ফিল্ডিংটা হলো যাচ্ছেতাই। কিন্তু ব্যাটিং আর বোলিং এতটাই দুর্দান্ত হলো যে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারাতে কোনো বেগই পোহাতে হলো না পাকিস্তানকে। সুযোগ পেয়েই ব্যাটিংয়ে জ্বলে উঠলেন হারিস সোহেল। মোহাম্মাদ আমির আর ওয়াহাব রিয়াজের হাত থেকে বের হয়েছে আগুনের গোলা। প্রতিপক্ষকে দূরহ ঘুর্ণীরজালে বেঁধেছেন শাদব খান। প্রোটিয়াদের সব আশা নিভিয়ে দুর্দান্তভাবে বিশ্বকাপে ঘুরে দাঁড়িয়েছে পাক বাহিনী।
লন্ডনের ঐতিহাসিক লর্ডসে পাকিস্তানের ছুড়ে দেওয়া ৩০৯ রানের লক্ষ্যে ২৫৯ রানে আটকে যায় দক্ষিণ আফ্রিকা। সরফরাজ আহমেদের দলের ৪৯ রানের জয়ের নায়ক হারিস। সুযোগটা কী দারুণভাবেই না কাজে লাগালেন এই মিডল অর্ডার। এরপরও আক্ষেপ একটাই! ১১ রানের জন্য যে লর্ডসের ঐতিহাসিক অনার্স বোর্ডে নামটা লেখা হলো না!
টানা তিন ম্যাচ ব্যর্থতার কারণে পাকিস্তান একাদশ থেকে শোয়েব মালিককে বাদ দিয়ে নেওয়া হয় হারিসকে। সুযোগ পেয়েই খেলেছেন ঝড়ো ইনিংস। টপ অর্ডারে বাকিরাও ছিলেন সফল। দলও গড়ে ৭ উইকেটে ৩০৯ রানের বড় সংগ্রহ। ক্রিকেট তীর্থে তিনশোর্ধো রান তাড়া করে জয়ের রেকর্ড মাত্র একটি। ২০০২ সালে ন্যাটওয়েস্ট সিরিজের ফাইনালে
ইংল্যান্ডের ৩২৫ তাড়া করে জিতেছিল ভারত।
এমন চ্যালেঞ্জিং লক্ষ্যে শুরুটা যেমন হওয়ার তেমন হয়নি দক্ষিণ আফ্রিকার। নিজের প্রথম বলেই হাশিম আমলাকে লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলেন মোহাম্মাদ আমির। আম্পায়ার আউট না দিলেও রিভিউ যায় পাকিস্তানের পক্ষে। দ্বিতীয় উইকেটে কুইন্টন ডি ককের সঙ্গে ৮৭ রানের জুটি গড়েন অধিনায়ক ফাফ ডু প্লেসিস। কিন্তু রান আসেনি প্রত্যাশা অনুযায়ী। নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে চাপ ধরে রাখেন আমির-ওয়াহাব-শাদবরা। ডি ককের লড়াই শেষ হয় শাদবের বলে ব্যক্তিগত ৪৭ রানে। ৭৯ বলে ৬৩ করা ডু প্লেসিসকে উইকেটের পিছনে ক্যাচে পরিণত করেন আমির। এরপর ফিফটি জুটি এসেছে একটি। পঞ্চম উইকেটে একাধিক জীবন পেয়ে মিলার-ডুসেন জুটি যোগ করেন ৫৩। আসলে তার তাড়ায় কখনোই মনে হয়নি দক্ষিণ আফ্রিকা লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবে। আন্দ্রিলে ফেহলুকায়োর ৩২ বলে ৪৬ রানের ইনিংস পরাজয়ের ব্যবধান কমিয়েছে মাত্র।
বাজে ফিল্ডিংয়ের কারণে ৪৯ রানে আমিরের ২ উইকেট নেয়াটা ব্যয়বহুল মনে হতে পারে। দুর্দান্ত সব সুইং, কাটারে ব্যাটসম্যানদের দুর্বোধ্য হয়েই ছিলেন এই বাঁ-হাতি। ৪৬ রানে ৩ উইকেট নিয়ে লেজ ছেঁটে দেন রিয়াজ। দারুণ ঘুর্নীতে টপ ও মিডিল অর্ডারে সময়মত ছোবল মারা শাদব নেন ৫০ রানে ৩ উইকেট। পুরো ৫০ ওভার খেলেও তাই ৯ উইকেটে ২৫৯ রানে আটকে যায় প্রোটিয়া ইনিংস।
টসজয়ী পাকিস্তানের ব্যাটিংয়ের শুরুটাও ছিল উড়ন্ত। দুই ওপেনারের আত্মবিশ্বাসী ব্যাটিংয়ে ১৫ ওভারে আসে ৮১ রানের জুটি। দুজনই ফেরেন ইমরান তাহিরের শিকার হয়ে ব্যাক্তিগত ৪৪ রানে। ইমাম-উল হককে নিজের হাতেই ক্যাচ বানিয়ে তাহির পরিণত হন বিশ্বকাপে দেশের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারী বোলারে। অ্যালান ডোনাল্ডকে (৩৮) পেছনে ফেলে বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে সবচেয়ে বেশি উইকেট এখন এই লেগ স্পিনারের।
রানের দেখা পেয়েছেন বাকি ব্যাটসম্যানরাও। তবে থিতু হয়ে আউট হয়েছেন মোহাম্মাদ হাফিজ। ১৪৩ রানে ৩ উইকেট হারানোর পর বাবর আজম ও হারিস সোহেল জুটি যোগ করে ৮১ রান। ৮০ বলে ৬৯ করে ফেরেন বাবর। এসেই আক্রমনাত্মক ব্যাটিং করা হারিস আউট হন শেষ ওভারে। তার আগে ৫৯ বলে নয় চার ও তিন ছক্কায় খেলেন ৮৯ রানের ঝড়ো ইনিংস। দলও পেয়ে যায় ৭ উইকেটে ৩০৮ রানের বড় সংগ্রহ।
শুরুর দিকে প্রোটিয়া পেসাররা ছিলেন নির্বিষ। শেষদিকে তিন উইকেট নিয়ে সেরা বোলার বনে যান লুঙ্গি এনগিদি।
ছয় ম্যাচে পাকিস্তানের এটি দ্বিতীয় জয়। পয়েন্ট তালিকায় তারা উঠে এসেছে সাতে। সাত ম্যাচে পাঁচ হারে বিধ্বস্ত দক্ষিণ আফ্রিকার বাকি দুই ম্যাচে শ্রীলঙ্কা ও অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সম্মান বাঁচানোর চ্যালেঞ্জ। বাকি তিন ম্যাচে পাকিস্তানের প্রতিপক্ষ নিউজিল্যান্ড, আফগানিস্তান ও বাংলাদেশ।
পাকিস্তান : ৫০ ওভারে ৩০৮/৭ (ইমাম ৪৪, ফখর ৪৪, বাবর ৬৯, হাফিজ ২০, সোহেল ৮৯, ইমাদ ২৩, ওয়াহাব ৪, সরফরাজ ২*, শাদাব ১*; রাবাদা ১০-০-৬৫-০, এনগিদি ৯-০-৬৪-৩, মরিস ৯-০-৬১-০, ফেহলুকায়ো ৮-০-৪৯-১, তাহির ১০-০-৪১-২, মারক্রাম ৪-০-২২-১)। দক্ষিণ আফ্রিকা : ৫০ ওভারে ২৫৯/৯ (আমলা ২, ডি কক ৪৭, ডু প্লেসি ৬৩, মারক্রাম ৭, ফন ডার ডাসেন ৩৬, মিলার ৩১, ফেহলুকায়ো ৪৬*, মরিস ১৬, রাবাদা ৩, এনগিদি ১, তাহির ১*; হাফিজ ২-০-১১-০, আমির ১০-১-৪৯-২, আফ্রিদি ৮-০-৫৪-১, ওয়াসিম ১০-০-৪৮-০, ওয়াহাব ১০-০-৪৬-৩, শাদাব ১০-১-৫০-৩)। ফল : পাকিস্তান ৪৯ রানে জয়ী। ম্যান অব দ্য ম্যাচ : হারিস সোহেল।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।