Inqilab Logo

সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বাঁচা-মরার লড়াইয়ে পাকিস্তান

জাহেদ খোকন | প্রকাশের সময় : ২২ জুন, ২০১৯, ৯:৪২ পিএম

আইসিসি ওয়ানডে বিশ্বকাপে বাঁচা-মরার লড়াইয়ে রোববার দক্ষিণ আফ্রিকার মুখোমুখি হচ্ছে পাকিস্তান। ক্রিকেটের মক্কা খ্যাত লর্ডসে বাংলাদেশ সময় বিকেল সাড়ে ৩টায় শুরু হবে ম্যাচটি। ইংল্যান্ড-ওয়েলস বিশ্বকাপে টিকে থাকতে হলে এ ম্যাচে জিততেই হবে পাকিস্তানকে। শুধু তাই, সেমিফাইনালে আশা বাঁচিয়ে রাখতে হলে পরের তিন ম্যাচেও জয়ের বিকল্প নেই সরফরাজ বাহিনীর। সর্বশেষ ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে সব বিভাগেই ব্যর্থ হয়েছিল পাকিস্তান। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ভাল না খেললে কপালে দুঃখ আছে তাদের।

অন্যদিকে গত বুধবার নিউজিল্যান্ডের কাছে হারের পর শেষ চারে খেলার আশা প্রায় শেষ দক্ষিণ আফ্রিকার। গেল তিন ম্যাচে ভাল বল করলেও তারা পর্যাপ্ত রান তুলতে পারেনি। পাকিস্তানকে হারিয়ে পরের দু’ম্যাচ জিতলেও লাভ নেই প্রোটিয়াদের। তারপরও বলা যায় নিজেদের নামের প্রতি সুবিচার করতেই পাকিস্তানকে ছেড়ে কথা বলবেন না ফফ ডু প্লেসিস’রা। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে পাকিস্তানের বিপক্ষে ঘরের মাঠে পাঁচ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ ৩-২ ব্যবধানে জিতেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। ইংল্যান্ডেও সেই জয়ের ধারাবাহিকতায় থাকতে চাইবে তারা। তাই ধারণা করা হচ্ছে এবারের বিশ্বকাপের ৩০তম এই ম্যাচটিতে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে।

এবার বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে ৭ উইকেটের বড় ব্যবধানে হারলেও পরের ম্যাচেই ইংল্যান্ডকে ১৪ রানে হারিয়ে ক্রিকেটবিশ্বকে চমকে দেয় পাকিস্তান। তাদের তৃতীয় ম্যাচটি শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বৃষ্টিতে ভেসে যাওয়া দু’দলই এক পয়েন্ট করে পায়। তবে চতুর্থ ম্যাচে ব্যাটিং ব্যর্থতার জন্য বর্তমান চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়ার কাছে ৪১ রানে হারে পাকিস্তান। আর পঞ্চম ম্যাচে তো ভারতের বিপক্ষে কোমড় সোজা করে দাঁড়াতেই পারেননি মোহাম্মদ আমিররা। ব্যাটিং, বোলিং ও ফিল্ডিংয়ে অসহায় আতœসমর্পণ করেন তারা। বৃষ্টি আইনে পাকিস্তান ম্যাচ হারে ৮৯ রানে। এখন পর্যন্ত প্রতিটি ম্যাচেই দারুণ বল করলেও সতীর্থদের কাছ থেকে বিশেষ সাহায্য পাননি পাক পেসার মোহাম্মদ আমির। ইংল্যান্ড ম্যাচ বাদ দিলে ব্যাটসম্যানরাও কিছু করে দেখাতে পারেননি। ফলে পাঁচ ম্যাচে মাত্র ৩ পয়েন্ট পেয়ে তালিকার নবমস্থানে আছে পাকিস্তান। পয়েন্ট টেবিলে নিজেদের অবস্থানের উন্নতি ঘটাতে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে জ্বলে ওঠা ছাড়া বিকল্প কিছু নেই পাকিস্তানের। টুর্নামেন্টে ধারাবাহিকভাবে ব্যর্থ শোয়েব মালিকের বদলে এ ম্যাচে হয়তো খেলতে পারেন হরিস সোহেল।

এদিকে চোকার খ্যাত দক্ষিণ আফ্রিকা বরাবরের মতো বিশ্বকাপে এবারো ব্যর্থ। তবে অন্যসব আসরের তুলনায় এই বিশ্বকাপে প্রোটিয়ারা একটু বেশীই খারাপ করছে। এখন পর্যন্ত চার হার ও এক জয় পেয়েছে তারা। একটি ম্যাচ বৃষ্টিতে ভেসে যায়। ফলে ছয় ম্যাচে ৩ পয়েন্ট নিয়ে তালিকার অষ্টমস্থানে রয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। স্বাগতিক ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ১০৪ রানের বড় হারে এবার বিশ্বকাপ শুরু করেন হাশিম আমলারা। পরের ম্যাচে বাংলাদেশের কাছে হারে ২১ রানে। তৃতীয় ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে ৬ উইকেটে হেরে ব্যাকফুটে চলে যায় দক্ষিণ আফ্রিকা। টানা তিন হার তাদেরকে খাদের কিনারয় পৌঁছে দেয়। সেখান থেকে উদ্ধার পেতে নিজেদের চতুর্থ ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে মাঠে নামলে বৃষ্টির কল্যানে এক পয়েন্ট পায় প্রোটিয়ারা। পরের ম্যাচে আফগানদের বৃষ্টি আইনে ৯ উইকেটের বড় ব্যবধানে হারিয়ে বিশ্বকাপে প্রথম জয় পেলেও সর্বশেষ ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৪ উইকেটে হেরে যায় দক্ষিণ আফ্রিকা। রোববার পাকিস্তানের বিপক্ষেই বিশ্বকাপে ফের জয়ের ধারায় ফিরতে চাইবে তারা। দেখা যাক কতটা সফল হয় প্রোটিয়ারা।

এ ম্যাচে চোখ থাকবে পাকিস্তানের বাবর আজম ও দক্ষিণ আফ্রিকার হাশিম আমলার উপর। বাবর আজম অতীতে বারবার ঝলসে উঠলেও এই টুর্নামেন্টে ধারাবাহিকভাবে বড় স্কোর করতে ব্যর্থ হয়েছেন। ইংল্যান্ড ম্যাচে ঝকঝকে ৬৩ করেছিলেন পাকিস্তানের সেরা এই ব্যাটসম্যান। দক্ষিণ আফ্রিকার শক্তিশালী বোলিং আক্রমণের সামনে দায়িত্ব নিতেই হবে তাকেই। বিপরীতে হাশিম আমলা গত দু’ম্যাচে ভাল শুরু করলেও এই বিশ্বকাপে এখনো নিজের সেরা ফর্ম দেখাতে পারেননি। তাই আজ তার কাছ থেকে দলের প্রত্যাশা থাকবে অনেক। কারণ আমলার সর্বশেষ সেঞ্চুরি যে পাকিস্তানের বিপক্ষেই।

ম্যাচের আগে আবহাওয়ার খবরে বলা হয়েছে, রোববার লন্ডনের আকাশে কখনো রোদ, কখনো মেঘ থাকবে। আর্দ্রতার পরিমাণও বাড়বে-কমবে সারাদিন ধরে। এখানে সর্বশেষ ওয়ানডে ম্যাচটি হয়েছিল গত জুলাইয়ে। সেদিন ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধে ফায়দা তুলেছিলেন স্পিনাররা। শুকনো পিচে আজ সেটাই হওয়ার সম্ভাবনা বেশী।


স্কোয়াড:

পাকিস্তান: সরফরাজ আহমেদ (অধিনায়ক, উইকেটরক্ষক), শোয়েব মালিক (সহ-অধিনায়ক), ফখর জামান, ইমাম-উল-হক, আসিফ আলি, বাবর আজম, মোহাম্মদ হাফিজ, শাদাব খান, ইমাদ ওয়াসিম, হাসান আলি মোহাম্মদ আমির, শহিন আফ্রিদি, ওয়াহাব রিয়াজ, মোহাম্মদ হাসনাইন ও হরিস সোহেল।


দক্ষিণ আফ্রিকা: ফাফ ডু প্লেসিস (অধিনায়ক), কুইন্টন ডি'কক (সহ-অধিনায়ক, উইকেটরক্ষক), হাশিম আমলা, এইডন মার্করাম, র‍্যাসি ফান ডর ড্যুসেন, ডেভিড মিলার, পল ডুমিনি, অ্যান্ডিলি ফেহ্লুকোয়ায়ো, ডোয়েন প্রিটোরিয়স, বেউরন হেন্ড্রিক্স, কগিসো রাবাদা, লুঙ্গি ঙ্গিডি, ক্রিস মরিস, ইমরান তাহির ও তবরেজ শামসি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বিশ্বকাপ ক্রিকেট

১৬ জুলাই, ২০১৯
১৫ জুলাই, ২০১৯

আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ