পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
চট্টগ্রামের মীরসরাই উপজেলার উপক‚লীয় জোন ও বিভিন্ন স্থানে সাগরের মোহনায় নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে অবাধে চলছে গলদা-বাগদা চিংড়ির রেণু আহরণ। এ রেণু আহরণ করতে গিয়ে প্রতিনিয়তই ধ্বংস হচ্ছে হাজারো প্রজাতির মাছ ও জলজ প্রাণী।
সরেজমিনে দেখা যায়, নিষিদ্ধ মশারি ও ঠেলা জাল দিয়ে জেলেরা লাখ লাখ চিংড়ি রেণু আহরণ করে বিক্রি করছে স্থানীয় ব্যাপারীদের কাছে। ব্যাপারীরা সেগুলো দ্বিগুণ দামে বিক্রি করছে খুলনা, বাগেরহাট ও যশোরসহ দেশের বিভিন্ন চিংড়ি ঘের মালিকদের কাছে।
ফেনী নদীর মুহুরী রেগুলেটরের দু’পাশে, চর খোন্দকার, ইছাখালী ও উপকূল, সোনাগাজীর জেলেপাড়া, সুজাপুর, থাক খোয়াজ লামছি, ছোট সøুইচ গেট, ভাঙ্গাবেড়ী, চর খোয়াজের লামছিসহ বেশ কিছু স্থানে গিয়ে চিংড়ির আহরণ ও মৎস্য প্রজাতির এ ধ্বংসলীলা দেখা যায় প্রতিবছর এপ্রিল থেকে জুলাই পর্যন্ত। অথচ প্রজনন মৌসুম থাকায় এ সময়টাতে নদীতে মাছ ধরার প্রতি রয়েছে সরকারি নিষেধাজ্ঞা। ফেনী নদীর মুহুরী সেচ প্রকল্প এলাকা থেকে শুরু করে চট্টগ্রামের মীরসরাই এর ইছাখালী, বানচন্দ খাল পর্যন্ত এবং ছোট ফেনী নদীর কাজীর হাট সøুইচ গেট থেকে দক্ষিণে সন্দীপ চ্যানেল পর্যন্ত বিশাল উপক‚লীয় এলাকায় প্রতিদিনই লাখ লাখ চিংড়ি পোনা আহরণ করা হচ্ছে। এসব স্থান ঘুরে দেখা যায়, জেলে, শিশু ও বৃদ্ধ সবাই মশারি এবং ঠেলা জাল নিয়ে চিংড়ি রেণু আহরণ করছে। জেলেরা শুধু বাগদা-গলদা চিংড়ির রেণু সংগ্রহ করে অন্যান্য মাছের রেণু ও জলজ প্রাণী ফেলে দিচ্ছেন।
পোনা আহরণের জন্য এসব জেলেরা প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়ায় গড়ে তুলেছে অবৈধভাবে অসংখ্য টিনের ঘর। ফেনী থেকে ঢাকা, খুলনা, বাগেরহাট ও সাতক্ষীরা জেলার চিংড়ি ঘেরগুলোতে পোনা পাঠানো হয়। শুধু সোনাগাজী এলাকা থেকেই প্রতিদিন লক্ষাধিক চিংড়ি পোনা ঢাকা ও খুলনা অঞ্চলে সরবরাহ করা হয়।
নদীর মুহুরী প্রজক্টের ফেনী রেগুলেটর এলাকার মাছ ব্যবসায়ী জাহিদুল ইসলাম জানান, চিংড়ির রেণু পোনা আহরণ করতে দু’মাসের জন্য এ এলাকায় এসেছেন অনেকেই। স্থানীয় মহাজনের মাধ্যমে তিনি নদী থেকে এ পোনা আহরণ করে প্রতি পিস ৫০ পয়সা ধরে বিক্রি করেন। চিংড়ি রেণু আহরণে ধ্বংস হচ্ছে জলজ প্রাণী।
আব্বাস হোসেন নামে আরেকজন বলেন, চিংড়ির রেণু সংগ্রহ করার সময় কোরাল, কাঁকড়া, বাইলা, মলা, ডেলা, চেউয়া, তফসে, বাটা, চাপিলা, কুচিয়া, টেংরা, পোয়া, লইট্টা, ভেটকি, ইলিশ, কাচকিসহ আরও অনেক প্রজাতির পোনা আসে। তারা শুধু চিংড়ি পোনা আহরণ করে বাকিগুলো ফেলে দেন। প্রতিটি চিংড়ির ভালো দামে বিক্রি করতে পারেন।
এসব অঞ্চলের মাছ ব্যবসায়ীরা বলছেন, আমরাও বুঝি আমরা মাছের জাত ধ্বংস করছি। কিন্তু কী করবো? এই সময় কোনো কাজ না থাকায় জীবনের তাগিদে বাধ্য হয়ে এই রেণু আহরণ করছি। তারা আরও বলেন, খুলনা, বাগেরহাট যশোর এলাকার ঘের মালিকরা স্থানীয় সোনাগাজী ও মীরসরাই এলাকার আড়তদারদের মাধ্যমে চিংড়ি রেণু সংগ্রহ করে। আড়তদাররা হকারের মাধ্যমে জেলেদের কাছ থেকে রেণু সংগ্রহ করে। সবাই নির্দিষ্ট হারে কমিশন পায়। প্রাথমিক পর্যায়ে প্রতিটি পোনা ৫০ পয়সায় বিক্রি করলেও খুলনা পর্যন্ত যেতে তার দাম পড়ে তিন টাকার মতো।
স্থানীয়রা জানায়, এক সময় এ অঞ্চলে অনেক মাছ পাওয়া যেতো। এভাবে চিংড়ির আহরণ করতে গিয়ে মাছের প্রজাতি ধ্বংস হয়ে গেছে, এর ফলে নদীতে আর আগের মতো মাছ পাওয়া যায় না। এলাকার সাধারণ মানুষ বলছে, প্রাকৃতিক উৎস থেকে বেপরোয়াভাবে এই রেণু ধরা বন্ধ করার দরকার। অনেকে অভিযোগ করেন, স্থানীয় প্রশাসনকে ‘ম্যানেজ’ করেই অবাধে চলছে এ রেণু সংগ্রহ।
মীরসরাই উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মাহমুদুর রহমান চৌধুরী বলেন, আমরা শীঘ্রই এই বিষয়ে মুহুরী নদীর মোহনায় অভিযান পরিচালনা করবো। তবে পোনা আহরণের অধিকাংশ অংশ ফেনী এলাকায় হওয়ায় ফেনীস্থ মৎস্য বিভাগের জরুরি পদক্ষেপ বেশী প্রয়োজন বলে তিনি মনে করেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।