নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
বিশেষ সংবাদদাতা : বিকেএসপিতে আবাহনী-প্রাইম ব্যাংকের ম্যাচে তারকাদের পাশাপাশি কোচ খালেদ মেহমুদ সুজনের দিকেও রাখতে হয়েছে নজর। গত বছর প্রাইম ব্যাংকের ট্রফি জয়ে অবদান রাখা এই কোচকে এবার হারিয়ে প্রাইম ব্যাংক করেছে বিলাপ। পেশাদারিত্বে নিজের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণের দায়টা ছিল সুজনের, সেই পেশাদারিত্বে এবারো জয় হয়েছে সুজনের। গতবার আবাহনীকে শেষ ম্যাচে হারিয়ে প্রাইম ব্যাংকের এই কোচ করেছেন উৎসব। গতকাল প্রাইম ব্যাংককে ৫ উইকেটে হারিয়ে আবাহনী বদলা নিয়ে সুপার লীগের সম্ভাবনা করেছে উজ্জ্বল, এখানেও তৃপ্তির হাসি সেই খালেদ মেহমুদ সুজনের।
উত্তাপ ছড়ানো ম্যাচটিতে প্রাইম ব্যাংকের আইকন সাব্বির রহমান রুম্মান ব্যর্থ (০), ব্যর্থ ভারত থেকে উড়িয়ে আনা উন্মুখ চাঁদ (২)। তারপরও তিন মিডল অর্ডার সোহান (৪৬), তাইবুর পারভেজ (৪৩) এবং শুভাগতহোমের (২৯) ব্যাটিংয়ে শেষ পর্যন্ত টেনেটুনে ২৪০/৯ স্কোরে থেমেছে প্রাইম ব্যাংক। নবম রাউন্ডে সাকিবকে পেয়ে স্বপ্ন দেখা আবাহনীর শক্তিটা দশম রাউন্ডে পেয়েছে বৃদ্ধি ইউসুফ পাঠানের অন্তর্ভুক্তিতে। নামেই নয়, কাজেই সে প্রমাণ পেয়েছে আবাহনী।
আইপিএল ইউসুফ পাঠানের ব্যাটিং ঝড় দেখেছে, দেখেছে সাকিবের সঙ্গে এক ম্যাচে পাঠানের বড় পার্টনারশিপ। সেই চেনা পার্টনারশিপের একজন (সাকিব) দিয়েছেন বোলিং নির্ভরতা। চার স্পেলের বোলিংয়ে (৪/৩৫) এ এই বাঁ হাতি স্পিনার প্রাইম ব্যাংকের চ্যালেঞ্জিং পুঁজির পথে তৈরি করেছে প্রতিবন্ধকতা। যে চারটি স্পেলের মধ্যে দ্বিতীয় স্পেলে (৩-১-৪-২) প্রাইম ব্যাংককে ব্যাকফুটে নামিয়ে দিয়েছেন এই বাঁ হাতি স্পিনার। সাকিবের অফারে আবাহনীতে খেলতে আসা কোলকাতা নাইট রাইডার্সের সেই ইউসুফ পাঠান ঢাকার প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লীগের অভিষেকেই মাতিয়েছেন (৪৭ বলে ৭ চার ২ ছক্কায় ৬০) আবাহনীকে!
গত পরশু রাত ১১টায় ঢাকায় নেমে গতকাল সাত-সকালে ম্যাচ খেলতে যেতে হয়েছে ইউসুফ পাঠানকে বিকেএসপিতে। গত ৩ দিন দিল্লি, কোলকাতা হয়ে ঢাকায়Ñবিশ্রামের ফুরসতই পাননি। নেমেই ঢাকার ট্র্যাফিক জ্যামের সঙ্গে পরিচিতও হয়েছেন। অথচ এসবও পারফরমেন্সে হয়নি প্রতিবন্ধক। এসেই জয় করেছেন আবাহনী সমর্থকদের মন। প্রাইম ব্যাংকের বিপক্ষে ২৪৪ রানের টার্গেটে ব্যাটিংয়ে নেমে স্কোরশিটে ৫৬ উঠতে ২ ওপেনারকে হারিয়ে আবাহনী যখন বিপদের শংকা দেখছে,তখন বিকেএসপির আকাশে কালো মেঘ কেটে সূর্যের হাসি দেখেছে আবাহনী ইউসুফ পাঠানের ব্যাটিংয়ে।
আবাহনীকে বিভ্রান্ত করতে অফ স্পিন দিয়ে শুভাগতহোমের শুরু দারুন বোলিং করেছেন (৩/৩৮) প্রাইম ব্যাংকের এই অধিনায়ক। সেই শুভাগতহোমকে ওয়েলকাম বাউন্ডারি দিয়ে শুরু ইউসুফ পাঠানের, ২৬তম ওভারে বাঁ হাতি স্পিনার রায়হানউদ্দিনকে বাগে পেয়ে তিন চার ১ ছক্কায় মাতিয়েছেন মাঠ। ওই ছক্কায় লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে ২২তম ফিফটি উদযাপনের দিনে থেমেছেন ৬০ রানে (৪৭ বলে ৭ চার ২ ছক্কা) । লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে ৪ হাজারী ক্লাবের সদস্যপদের দিনে আবাহনীকে নির্ভরতা দিতে ৩য় উইকেট জুটিতে নাজমুল হোসেন শান্তকে নিয়ে ৯৪ রানের পার্টনারশিপে দিয়েছেন নেতৃত্ব। মূলত ৮৫ বলে ৯৪ রানের এই পার্টনারশিপেই জয়ের পথ হয়েছে সুগম আবাহনীর। বাকি কাজটা সেরেছেন আবাহনীর দ্য ফিনিশার মোসাদ্দেক সৈকত। চলমান প্রিমিয়ার ডিভিশনে দুর্দান্ত ফর্মে থাকা এই মিডল অর্ডার সর্বশেষ ৬ ম্যাচে উদযাপন করেছেন তিনটি ফিফটি, তিনটিই নট আউট। গতকাল প্রাইম ব্যাংক অফ স্পিনার মেহেদী মারুফকে পর পর দুই ছক্কায় বিকেএসপিতে উপর্যুপরি দ্বিতীয় জয়ের নায়ক এই ফিনিশার। গতকাল তার ঝড়েই (৪৯ বলে ৪ চার ৪ ছক্কায় ৬৪) ৩৩ বল হাতে রেখে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন প্রাইম ব্যাংককে হারিয়ে সুপার লীগের পথে শক্ত বাধা অতিক্রম করেছে আবাহনী (১০ ম্যাচে ৬ষ্ঠ জয়)। অন্য দিকে এই ম্যাচ হেরে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন প্রাইম ব্যাংকের সুপার লীগের স্বপ্নটা ধূসর হতে বসেছে (১০ ম্যাচে ৫ম হার)।
আবাহনী-প্রাইম ব্যাংক
প্রাইম ব্যাংক : ২৪০/৯ (৫০.০ ওভারে), মেহেদী মারুফ ২৬, শেহনাজ ২৪, রুম্মান ০, উন্মুখ চাঁদ ২, সোহান ৪৬, তাইবুর পারভেজ ৪৩, শুভাগতহোম ২৯, মুনীর ২৫*, সাকিব ৪/৩৫, সাকলায়েন সজীব ৩/৩৭, মোসাদ্দেক সৈকত ১/৪৮, নাজমুল শান্ত ১/৩১।
আবাহনী লি. : ২৪৩/৫ (৪৪.৩ ওভারে), তামীম ৪০, অভিষেক মিত্র ১২, নাজমুল শান্ত ৩২, ইউসুফ পাঠান ৬০, সাকিব ৩, মোসাদ্দেক সৈকত ৬৪*, শুভাগতহোম ৩/৩৮, নাজমুল ২/৫১।
ফল : আবাহনী ৫ উইকেটে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ : মোসাদ্দেক সৈকত (আবাহনী)।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।