Inqilab Logo

শুক্রবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

পশ্চিমবঙ্গে আবারও তৃণমূল-বিজেপি সংঘর্ষ

বোমাবাজি ও গোলাগুলিতে নিহত ২, পুলিশ কমিশনার প্রত্যাহার,১৪৪ ধারা জারি

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২১ জুন, ২০১৯, ১০:১১ এএম

ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের ব্যারাকপুর অঞ্চলে বিরোধীদল বিজেপি এবং ক্ষমতাসীন তৃণমূল কংগ্রেস সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে অন্তত দু'ব্যক্তি নিহত হয়েছে। এদের মধ্যে একজন ১৭-বছর বয়সী কিশোর। গুলির আঘাত নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন আরও তিনজন।
কর্মকর্তারা বলছেন, দীর্ঘক্ষণ ধরে গুলি বিনিময় আর বোমাবাজি চলার পটভূমিতে স্থানীয় প্রশাসন ভাটপাড়া আর জগদ্দল এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ভাটপাড়ায় একটি নতুন থানা উদ্বোধন হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তার আগেই শুরু হয় বোমাবাজি। মুহুর্মূহু গোলাগুলির আওয়াজ শোনা যাচ্ছিল। এ সময়ে সব দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়। রাস্তায় কোন গাড়ি ছিল না। একশো চুয়াল্লিশ ধারা জারি হওয়ায় রাস্তাঘাট জনশূন্য হয়ে পড়ে।
রাজ্যের স্বরাষ্ট্র সচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ‘ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের বেশ কিছু এলাকায় আইন শৃঙ্খলতাজনিত যে পরিস্থিতি উদ্ভূত হয়েছে, সে ব্যাপারে সরকার সিরিয়াস ভিউ নিচ্ছে। কিছু সমাজবিরোধী আর অপরাধী সেখানে সক্রিয় হয়ে উঠেছে। স্থানীয়দের সঙ্গে বহিরাগতও জড়িত আছে। এর ফলে স্বাভাবিক জনজীবন আর আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ডেসপারেট হচ্ছে। পুলিশের মহানির্দেশক আর সিনিয়ার অফিসারদের সেখানে পাঠানো হয়েছে। র‌্যাপিড অ্যাকশন ফোর্স গেছে।’
এই সংঘর্ষের জন্য বিজেপি এবং তৃণমূল কংগ্রেস উভয়েই পরস্পরকে দোষারোপ করছে।
তৃণমূল কংগ্রেসের উত্তর চব্বিশ পরগণার নেতা ও মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেছেন, ওই অঞ্চলে নির্বাচনের ফল বেরনোর সন্ধ্যে থেকেই বিজেপি একতরফা ভাবে মারামারি করছে। পুলিশকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কোনও রাজনীতির রঙ না দেখে গ্রেপ্তার করতে - সে বিজেপির নেতাই হোক বা যেই হোক।
দুই দলের এই হানাহানিতে ঘটনাস্থলেই মারা যান ১৭ বছরের কিশোর রামবাবু সাউ। তিনি ফুচকা বিক্রি করতেন। হাসপাতালে মৃত্যু হয় ধর্মবীর সাউ নামে আরেক ব্যক্তির। এই ঘটনায় ছয় জন পুলিশও আহত হয়েছেন।
রাজ্য বিজেপি নেতা মুকুল রায় বলেছেন, ব্যারাকপুর অঞ্চলের মানুষ অর্জুন সিংকে বিপুল ভোটে জিতিয়েছেন, ভাটপাড়া কেন্দ্রের মানুষ তার ছেলে পবন সিংকে জিতিয়েছেন, এই জনাদেশ কিছুতেই মমতা ব্যানার্জী মেনে নিতে পারছেন না। সেজন্যই বারে বারে ভাটপাড়াকে অশান্ত করে তুলছেন পুলিশকে দিয়ে। এর সব দায় দায়িত্ব নিতে হবে মুখ্যমন্ত্রীকে।"
পুলিশ অবশ্য বলছে কার গুলিতে ওই দুজনের মৃত্যু হল, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। রাতে ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনারকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।

মমতা ব্যানার্জী নির্দেশ দিয়েছেন তিনদিনের মধ্যে ওই অঞ্চলে শান্তি ফেরাতে হবে। নির্বাচনের আগে থেকেই ব্যারাকপুর লোকসভা কেন্দ্রের নানা অঞ্চলে উত্তেজনা তৈরি হয়। সেখানকার তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক অর্জুন সিং দল বদল করে বিজেপিতে যোগ দেন আর তাকেই লোকসভা ভোটে প্রার্থী করা হয়। একই সঙ্গে তার ছেলেকে ভাটপাড়া বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনেও প্রার্থী করে বিজেপি।
তৃণমূল কংগ্রেসের কাছে এই দুটি ভোটই হয়ে উঠেছিল প্রেস্টিজ ফাইট। কিন্তু বিজেপি দুটি কেন্দ্রেই জিতে যায় বড়সড় মার্জিনে। তারপর থেকে প্রায় প্রতিদিনই অশান্তি চলছে ওই এলাকায়। সূত্র ঃ এনডিটিভি, এইসময় ও বিবিসি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: তৃণমূল-বিজেপি
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ