নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
মানসপটে জ্বলজ্বলে একটি স্মৃতি। ২০০৫ ন্যাটওয়েস্ট সিরিজে সেই সময়ের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ও প্রবল পরাক্রমশালী অস্ট্রেলিয়াকে ৫ উইকেটে হারিয়েছিল বাংলাদেশ। দেশের ক্রিকেটের অন্যতম গৌরবময় সেই ম্যাচটির ১৪ বছর পূর্ণ হলো গত মঙ্গলবার। অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে সেদিন ক্রিকেট বিশ্বে তোলপাড় ফেলে দিয়েছে বাংলাদেশ। অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে এবার বাংলাদেশের লড়াই বিশ্বকাপে। ১৪ বছর আগের ম্যাচ থেকে দুই দল মিলিয়েই আজকের ম্যাচে থাকছেন কেবল মাশরাফি বিন মুর্তজা।
সেদিন বিপজ্জনক অ্যাডাম গিলক্রিস্টকে ম্যাচের দ্বিতীয় বলেই ফিরিয়ে বাংলাদেশকে বিশ্বাস জুগিয়েছিলেন সেই সময়ের তরুণ ফাস্ট বোলার। আজ তিনিই অধিনায়ক। স্মরণীয় সেই জয়ের পর উদযাপনের পুরোটাই মনে পড়ে মাশরাফির। ১৪ বছর আগের সেই স্মৃতি ফিরিয়ে আনার ভাবনায় বাংলাদেশ অধিনায়ক ফিরে তাকালেন সেই দিনটিতে, ‘সম্ভবত অ্যাডাম গিলক্রিস্টের উইকেটটি নিয়েছিলাম আমি। রাতে হঠাৎ দেখলাম হোটেলের সামনে একটি লিমুজিন দাঁড়িয়ে। দলের অনেককে নিয়ে তখন লিমুজিনে চেপে চষে বেড়ানো হলো কার্ডিফ। দারুণ স্মৃতি অবশ্যই। তবে আমি সবসময়ই বিশ্বাস করি, অতীতের কিছু ভবিষ্যতে সাহায্য করে না। শুধু প্রেরণা যোগাতে পারে। কার্ডিফে আগে সবসময় ভালো করেছি, এবার করতে পারিনি। নতুন দিন, নতুন ম্যাচে প্রথম বল থেকেই শুরু করতে হয়। যেটা বলছিলাম, স্মৃতিটি দারুণ। সেই দিন ও রাতের সবকিছুই আমার মনে আছে। আশা করি সেই দিনটিই ফিরে আসবে আগামীকাল (আজ)। তবে সেটির জন্য আমাদেরকে নিজেদের সেরা খেলাটা খেলতে হবে।’
সেই জয়ের পর ওয়ানডেতে অস্ট্রেলিয়াকে আর হারাতে পারেনি বাংলাদেশ। টেস্ট খেলুড়ে দেশগুলোর মধ্যে কেবল অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গেই বাংলাদেশের নেই একাধিক জয়। মাশরাফি সেখানে নিজেদের দায় কিছুটা দেখছেন। তবে এটাও মনে করিয়ে দিচ্ছেন, ম্যাচ খেলার সুযোগও খুব বেশি হয়নি অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে, ‘অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে অনেক দিনের বিরতি হয়ে গেছে (জয়ের)। তাদের সঙ্গে আমাদের ম্যাচও খুব বেশি হয়নি, এটাও সত্যি কথা। সা¤প্রতিক অতীতে, আমাদের দল যখন বিশ্বাস করতে শুরু করেছি যে আমরা যে কোনো দলকে হারাতে পারি, তার পর অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে খুব বেশি ম্যাচ খেলার সুযোগ পাইনি। আবার এটাও ঠিক, যে কয়টা পেয়েছি, কাজে লাগাতে পারিনি। কালকে বড় টুর্নামেন্টে বড় ম্যাচ, এদিকেই মন দেওয়া উচিত।’
বিশ্বকাপে এবার ব্যাটে-বলে ঝলক দেখালেও ফিল্ডিংয়ে নিজেদের সেরাটা দিতে পারেনি বাংলাদেশ। প্রতি ম্যাচেই হাত ফসকে বেরিয়েছে ক্যাচ। ভুল জাজমেন্টের কারণে এক রানের জায়গায় হয়েছে দুই রান। বাউন্ডারি ঠেকাতেও ক্ষিপ্রতার অভাব দেখা গেছে প্রায়ই।
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচে ডিপ ফিল্ডিংয়ের হতশ্রী দশা দেখা গেছে করুণভাবে। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে কেন উইলিয়ামসনের রান আউট মিস তো এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় আফসোসের নাম। অস্ট্রেলিয়ার মতো প্রতিপক্ষের বিপক্ষে তাই এই জায়গাকে বাংলাদেশ অধিনায়ক দেখছেন সবচেয়ে গুরুত্ব দিয়ে, ‘দেখেন এই টুর্নামেন্টে আমরা ফিল্ডিংয়ের জন্য ম্যাচ জিতেছি, ফিল্ডিংয়ের জন্য ম্যাচ হেরেছি। ফিল্ডিং সব সময় একটা দিক যেটা আপনি চাইলেই উন্নতি করতে পারেন। ফিল্ডিং খুব গুরুত্বপূর্ণ বিশেষ করে অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড বা ইংল্যান্ড এরকম দলের বিপক্ষে খেলা হয়। এরা অনেক রান আটকে দেয় ফিল্ডিং দিয়ে। কাজেই আমরা যদি হাত ফসকাই তাহলে সমস্যা হয়ে যাবে।’
ট্রেন্ট ব্রিজে ফিল্ডিং কেবল গড়পড়তাভাবে নয়, মাঠের হিসাব মাথায় নিয়েও করতে হবে। দুপুরে অনুশীলনে এসে মাশরাফি আবিষ্কার করেছেন এই মাঠের ফিল্ডিংয়ের কিছু জটিল দিক, ‘এই মাঠের চার পাঁচটা কর্নার আছে। যদি দেখেন কোন দিক ছোট, কোন দিক একটু ঘোরানো গভীর থাকে। ওখানে যদি বলগুলো যায় তাহলে দুইয়ের জায়গায় তিন হওয়ার সুযোগ আছে। ওসব জায়গায় যারা ফিল্ডিং করবে, তাদের মানিয়ে নেওয়ার ব্যাপার থাকবে।’
২০১১ সালের এপ্রিলে বাংলাদেশে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে পর অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে কেবল দুটি ম্যাচই ছিল বাংলাদেশের। তার একটি ২০১৫ বিশ্বকাপে পরিত্যক্ত হয়ে যায় টস না হয়েই। ২০১৭ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ওভালের ম্যাচটিতে অবশ্য হারের শঙ্কায় ছিল বাংলাদেশ, সেটিও পরে ভেস্তে যায় বৃষ্টিতে। আজও আছে বৃষ্টির চোখ রাঙানি। তবে সেদিকে না তাকিয়ে ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঘটাতেই বেশি মনোযোগ মাশরাফির।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।