পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
দেশের সংসদীয় ইতিহাসে একটি অনন্য নজির স্থাপিত হয়েছে। অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের অসুস্থতার কারণে জাতীয় সংসদে তার পক্ষে বাজেটের বড় অংশই উত্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা। তিনি বিকাল ৪ টা ১০ মিনিট থেকে ৪টা ৪০ পর্যন্ত ৩০ মিনিট বাজেট বক্তব্য পাঠ করেন। তার বক্তব্য শেষ হতেই সরকার ও বিরোধী দলের সংসদ সদস্যরা দীর্ঘক্ষণ টেবিল চাপড়িয়ে প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানান।
গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা তিনটায় হলুদ ও সবুজে ছাপা শাড়ী পরা স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদ অধিবেশন শুরু হয়। এর আগে প্রধানমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রীসহ অন্যান্যরা অধিবেশন কক্ষে প্রবেশ করেন। বাজেট পেশ উপলক্ষে অধিবেশন কক্ষ ছিলো কানায় কানায় পূর্ণ। সংসদ গ্যালারি থেকে ভিআইপি লাউঞ্চ সর্বত্রই ছিল উপচে পড়া ভীড়। বেলা ৩ টা ২৫ মিনিটে সম্পূর্ণ ডিজিটাল পদ্ধতিতে নিজের জীবনের প্রথম বাজেট প্রস্তাবনা পড়া শুরু করেন অর্থমন্ত্রী। বর্তমান আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের প্রথম ও দেশের ৪৮তম বাজেটের শিরোনাম ‘সমৃদ্ধ আগামীর পথযাত্রায় বাংলাদেশ, সময় এখন আমাদের, সময় এখন বাংলাদেশের।
প্রচন্ড অসুস্থ্যতার কারণে বাজেট বক্তব্যে উপস্থাপন ঠিককমত করতে পারছিলেন না অর্থমন্ত্রী। পাশ থেকে প্রধানমন্ত্রী, সংসদ উপনেতা, সাবেক কৃষিমন্ত্রী, শেখ সেলিম তাঁকে বারবার সহযোগিতা করছিলেন। কিন্তু বিকাল চারটার দিকে একটু বেশিই অসুস্থ্যতা অনুভব করেন অর্থমন্ত্রী। তিনি ওষুধ গ্রহণের জন্য স্পিকারের কাছে ৫/৭ মিনিটের সময় প্রার্থণা করেন। ওই সময়ে উপস্থিত কয়েকজন চিকিৎসক এমপি এসে তাঁর শারিরীক অবস্থা পরীক্ষা করেন। পরে চোখে ওষুধ দেওয়ার পরও শারিরীক অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় ৫-৭ মিনিট পরে অর্থমন্ত্র্ ীনিজেই বাকি বাজেট বক্তব্য উপস্থাপনের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অনুরোধ জানান। এতে অধিবেশনের চিত্রই পাল্টে যায়। সরকার ও বিরোধী দলের সংসদ সদস্যরা টেবিল চাপড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বাকি বাজেট উপস্থাপনের প্রস্তাবকে পূর্ণ সমর্থন জানান। এ সময় প্রধানমন্ত্রী দাঁড়িয়ে প্রস্তাবিত বাজেটের বাকি অংশটুকু উপস্থাপনের জন্য স্পিকারের অনুমতি প্রার্থনা করেন। জবাবে স্পিকার অনুমতি দিয়ে বলেন, আপনি দাঁড়িয়ে বা বসে বাজেট উপস্থাপন করতে পারেন।
প্রতি বছর বাজেট উত্থাপনের আগে রেওয়াজ অনুযায়ি এই বৈঠকটি সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত হয়। মন্ত্রীপরিষদে অনুমোদন পাওয়ার পর বাজেট বিলে স্বাক্ষর করেন প্রেসিডেন্ট মো. আব্দুল হামিদ। উৎসবমুখর সংসদে বাজেট বক্তৃতা শুনতে আসেন প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদ। সংসদে নিজ কক্ষে বসে বাজেট উপস্থাপন প্রত্যক্ষ করেন তিনি। এরআগে প্রেসিডেন্টকে সংসদ ভবনে স্বাগত জানান সংসদ নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ছাড়াও প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, প্রধানমন্ত্রীর অর্থ উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান, প্রতিরক্ষা বিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী, বিদ্যুত জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক-ই ইলাহী, প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা, মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম, প্রধানমন্ত্রীর মূখ্য সচিব নজিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রীর কন্যা সায়মা ওয়াজেদ হোসেন পুতুল, ক‚টনীতিক, সামরিক ও বেসামরিক উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বাজেট বক্তৃতা প্রত্যক্ষ করেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে কালো সুটকেস হাতে বেলা পৌনে ৩টায় বাজেট অধিবেশনে প্রবেশ করেন অর্থমন্ত্রী। প্রচন্ড অসুস্থতা মধ্যেও অর্থমন্ত্রী হাসপাতাল থেকে সরাসরি সংসদ ভবনে আসেন। তারপরও তাঁর মুখে ছিল উচ্ছ¡াস। কিন্তু শারিরীক অসুস্থ্যতার কারণে দলের সিনিয়র মন্ত্রী ও নেতারা তাঁকে সহযোগিতা করতে দেখা যায়। বাজেট বক্তৃতার মাঝে মাঝে সরকার ও বিরোধী দলের সদস্যরা টেবিল চাপড়ে অর্থমন্ত্রীকে উৎসাহ যোগান।
কঠোর নিরাপত্তা বাজেট পেশ উপলক্ষে জাতীয় সংসদ ভবন এলাকায় নেওয়া হয়েছিল বাড়তি নিরাপত্তা। বৈধ পাশ ছাড়া আর কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি সংসদ ভবন এলাকায়। এমনকি দর্শক গ্যালারীতে পাস ইস্যুতেও ছিল কড়াকড়ি। র্যাব-পুলিশসহ গোয়েন্দা সংস্থার বিপুল সংখ্যক সদস্য পুরো ভবনে নিরাপত্তা ঘেরাটোপ গড়ে তোলেন। বাজেট বক্তৃতার পরে আমন্ত্রিত অতিথিরা যাতে নির্বিঘেœ বের হতে পারেন সেজন্য সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজার পিজিয়ন হলের গেটটিও খোলা রাখা হয়েছিল।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।