Inqilab Logo

সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ঢেলে দে লুটেপুটে খাই

রেলওয়ের দক্ষিণ-পশ্চিমের অধিকাংশ পরিত্যক্ত সম্পত্তি বেহাত

মিজানুর রহমান তোতা | প্রকাশের সময় : ১৩ জুন, ২০১৯, ১২:০৪ এএম

‘কাজীর গরু কেতাবে আছে, গোয়ালে নেই’-এর মতোই দক্ষিণ-পশ্চিমের রেলওয়ের সম্পত্তির অবস্থা। আর এমন কথা বললেন খোদ রেলওয়েরই একজন কর্মকর্তা। ওই কর্মকর্তার কথায়, কে কোনভাবে কোথা থেকে কিভাবে লীজ নিয়ে যুগ যুগ ভোগদখল করছে তার কোন হিসাব নেই।

রেলওয়ের ভূমি অফিস সূত্র জানায়, রেলওয়ের অব্যবহৃত সম্পত্তি লীজ দেওয়া আছে। তবে পরিত্যক্ত রেলওয়ে স্টেশনের আশেপাশে ও রেল লাইনের দুইধারের কিছু জমি বেদখলে গেছে। উদ্ধারে অভিযান চালানোর পরিকল্পনা করা হচ্ছে। পশ্চিঞ্চলীয় রেলের পাকশি ডিভিশনের স্টেট অফিস সূত্র জানায়, এ অঞ্চলে রেলওয়ের মোট ৩৭ হাজার ১৯৮ একর জমি রয়েছে। যার মধ্যে ৩০ হাজার রেলওয়ের অপারেশনাল কাজে ব্যবহার হয়। বাকি জমি পরিত্যক্ত ও লীজ দেওয়া আছে। কোথায় কিভাবে কারা লীজ গ্রহীতা তার বিস্তারিত তথ্য জানাতে অপারগতা প্রকাশ করেছে সংশ্লিষ্ট দপ্তর। নদ-নদীর জমির মতোই রেলওয়ের জমি লীজের নামে বংশ পরম্পরায় ভোগ দখল করে আসছে লীজ গ্রহীতারা। যার বেশীরভাগই অনিয়ম ও জাল কাগজপত্রের মাধ্যমে ভোগদখল হচ্ছে বলে বিস্তর অভিযোগ রয়েছে। এক্ষেত্রে রেলওয়ের স্টেট অফিসের একশ্রেণির অসাধু কর্মকর্তা অর্থের বিনিময়ে দখলদারদের সুযোগ করে দেন। সূত্র জানায়, ২০১৪ সালে ‘রেলওয়ে সম্পত্তি (অবৈধ দখল উদ্ধার) আইন ২০১৪’ নিয়ে আলোচনার সময় প্রধানমন্ত্রী রেলওয়ের জমি অবৈধ দখলদারদের কাছ থেকে উদ্ধার করতে উচ্ছেদ কার্যক্রম পরিচালনার কঠোর নির্দেশ দেন। তারপর সংশ্লিষ্ট বিভাগ নড়েচড়ে বসে। বিভিন্নস্থানে অভিযানও হয়। কিন্তু পরবর্তীতে আবার ঝিমিয়ে গেছে।

রেলওয়ের ভূমি কর্মকর্তা ইউসুফ আলী বললেন, ব্যবস্থাপনার অভাব ও জনবল সঙ্কটের কারণে রেলওয়ের বেহাত হওয়া জমি উদ্ধার করা যাচ্ছে না। রেলওয়ের পাকশী বিভাগীয় প্রকৌশলী এবং বিভাগীয় মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারের দপ্তর সুত্র জানায়, যশোর, খুলনা, নওয়াপাড়া, ঝিকরগাছা, বেনাপোল, নাভারণ, সিঙ্গিয়া, মেহেরুল্লাহনগর, বারোবাজার, কালীগঞ্জ, আবদুলপুর, চুয়াডাঙ্গা, কুষ্টিয়া, ভেড়ামারা, ঈশ্বরদী ও রাজশাহীসহ ছোট বড় স্টেশন এলাকায় একরের পর একর জমি লীজের নামে প্রভাবশালীরা ভোগদখল করে আসছে।

যশোরের চুড়ামনকাঠি মেহেরুল্লানগর স্টেশনটি পরিত্যক্ত। স্টেশন ঘরের জানালা দরজা ও টিন চুরি গেছে বহু আগে। এরকম পরিত্যক্ত স্টেশনের সংখ্যা অসংখ্য। যার আশেপাশের জমি প্রভাবশালীরা দখল করে চাষাবাদ করছে। পশ্চিম জোনে শত শত কিলোমিটার দীর্ঘ রেলপথে যাতায়াত করলে স্পষ্ট দেখা যাবে ট্রেন লাইনের প্রায় গা ঘেষে অনেক জমি যে যার মতো ভোগদখল করছে। যশোর রেলওয়ে স্টেশনের গা ঘেষে গড়ে উঠেছে বস্তি ও দোকানপাট। ট্রেন লাইনের দুই ধারে নির্দিষ্ট এলাকার ফাঁকা জায়গা থাকে। যার অধিকাংশই বেহাত হয়ে গেছে। চোখের সামনে রেলওয়ের সম্পত্তি দখল হলেও কার্যত কোন ব্যবস্থা নেই।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রেল

২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ