নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
ক্রিকেটের ইতিহাসে যত বিস্ময়, অর্ধেক তার করিয়াছে পাকিস্তান; বাকি অর্ধেক বিশ্ব। বললে নিতান্তই ভুল হবে না। ক্রিকেটে কত ম্যাচেই তো রাতকে বানিয়েছে দিন, আবার দিনকে বানিয়েছে রাত। বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে লজ্জাজনক হারে টানা ১১ ম্যাচ পরাজয়ের সম্মুখীন দলটিই হারিয়ে দিলো বিশ্বকাপ জেতার অন্যতম দাবিদার স্বাগতিক ইংল্যান্ডকে। আজ টন্টনে বিশ্বকাপের ১৭তম ম্যাচে সেই পাকিস্তানের মুখোমুখি বর্তমান বিশ্বচ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া।
বিশ্বকাপে ৩ ম্যাচে দুই জয় ও এক হারে ৪ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট টেবিলে অস্ট্রেলিয়ার অবস্থান চার। অন্যদিকে সমান ম্যাচ খেলে এক জয়, এক হার ও একটি পরিত্যক্ত ম্যাচের সুবাদে পাকিস্তানের পয়েন্ট ৩। পয়েন্ট টেবিলে তাদের অবস্থান আটে। অস্ট্রেলিয়া তাদের প্রথম ম্যাচে আফগানিস্তানের বিপক্ষে জয় পায় ৭ উইকেটে। পরের ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে জেতে ১৫ রানের ব্যবধানে। শেষ ম্যাচে অবশ্য ভারতের বিপক্ষে ৩৬ রানের হার নিয়েই মাঠ ছাড়ে অ্যারন ফিঞ্চের দল। অন্যদিকে পাকিস্তানের শুরুটা হয় বিভীষিকাময়। মাত্র ১০৫ রানে গুটিয়ে গিয়ে ক্যারিবীয়ানদের বিপক্ষে হারে ৭ উইকেটে। তার পরের ম্যাচে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ১৪৮ রান করে চমকে দেয় বিশ্বকে। শেষ পর্যন্ত ম্যাচটি ১৪ রানে জিতে নেয় সরফরাজ আহমেদের দল। তৃতীয় ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বৃষ্টির বাধায় পরিত্যক্ত হলে ১ পয়েন্ট নিয়ে মাঠ ছাড়ে ১৯৯২ বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা।
মুখোমুখি লড়াইয়ে পাকিস্তানের যোজন যোজন এগিয়ে অস্ট্রেলিয়া। দুই দল এ পর্যন্ত ম্যাচ খেলেছে ১০৩টি। অস্ট্রেলিয়ার জয় ৬৭ ম্যাচে, পাকিস্তান জয় পেয়েছে ৩২ম্যাচে, একটি ম্যাচ টাই হয়েছে ও তিনটি পরিত্যক্ত। পাকিস্তানের বিপক্ষে অস্ট্রেরিয়ার জয়ের হার ৬৭.৫০ শতাংশ। বিশ্বকাপের দেখায়ও এগিয়ে ৫ বারের চ্যাম্পিয়নরা। মুখোমুখি ৯ লড়াইয়ে পাঁচবারই শেষ হাসি অজিদের। বাকি চারবার জয় দেখেছে পাকিস্তান।
এখানেই শেষ নয়, ২০১৪ সালের অক্টোবরের পর এখন পর্যন্ত ১৪ বারের দেখায় পাকিস্তানের জয় মাত্র একটি ম্যাচে! শেষ পাঁচ ম্যাচের সিরিজে সবকয়টি ম্যাচেই হারে পাকিস্তান। পরিসংখ্যান বিশ্লেষণে আশায় বুক বাঁধতেই পারে অস্ট্রেলিয়া। তবে ভয় একটিই। কারণ, দলটি যে পাকিস্তান। কখন কি করে, সে সম্পর্কে নিজেরাও জানে না। পাঁচবারের চ্যাম্পিয়নদের আরেকটু আতঙ্কে রাখলেন পাকিস্তানের গত ম্যাচের সেরা খেলোয়াড় মোহাম্মদ হাফিজ। একদিন আগেই শোনা গেছে এই অলরাউন্ডারের কন্ঠে আত্মবিশ্বাসের সুর, ‘আমি মনে করি সব দলকেই হারানো সম্ভব। অস্ট্রেরিয়া ভালো ক্রিকেট খেলছে, তবে তাদের হারানো অসম্ভব নয়।’ অভিজ্ঞ এই অলরাউন্ডার আরও বলেন, ‘অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে আমাদের রেকর্ড ভালো না। তবে এখন আমরা নতুন সময় পার করছি। বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডকে হারিয়েই আমরা আত্মবিশ্বাস খুঁজে পেয়েছি।’
হাফিজের কথায় ভয় না পেলেও সতর্ক হতে পারে অস্ট্রেলিয়া। কারন ইংল্যান্ডের বিপক্ষেও পাকিস্তানের অতীত রেকর্ড ছিলো খুবই বাজে। সবশেষ পাঁচ ম্যাচের সিরিজেও হোয়াইটওয়াশের লজ্জা দিয়েছিলো ইংলিশরা। তবে বিশ্বমঞ্চে তা কড়ায় গন্ডায় শোধ করে দিয়েছে ২০১৭ সালে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিজয়ী দলটি।
পাকিস্তানের জন্য প্রধান চ্যালেঞ্জ ব্যাটিংয়ে অ্যারন ফিঞ্চ-ডেভিড ওয়ার্নারকে বেঁেধ রাখা। এরপর স্টিভেন স্মিথ, গেøন ম্যাক্সওয়েল থেকে নাথান কোল্টার নাইল পর্যন্ত ব্যাসম্যানদের রুখে দিতে হবে ইমরান খানের উত্তরসূরীদের। বল হাতে আগুণ ঝড়ানো মিচেল স্টার্কও প্যাট কামিন্স হতে পারে পাকিস্তানি ব্যাসম্যানদের জন্য বিষফোঁড়া। তবে এমন বারুদে ম্যাচের আগে অজি শিবিরে বড় দুঃসংবাদ মার্কাস স্টয়নিসের বাদ পগা। গোড়ালির চোটের কারণে পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলা হচ্ছে না এই পেসারের। তার বদলে দেশ থেকে ইংল্যান্ডে উড়িয়ে আনা হয়েছে মিচেল মার্শকে।
অন্যদিকে পকিস্তানের হয়ে ফখর জামান-ইমাম উল হক নিজেদের দিনে যে কোন প্রতিপক্ষের জন্য ত্রাস। বাবর আজম, মোহাম্মদ হাফিজ ও শোয়েব মালিকও বদলে দিতে পারেন ম্যাচের গতি। বল হাতে ইংল্যান্ডকে নাকাল করা ওয়াহাব রিয়াজ, মোহাম্মদ আমির গতি ও বাউন্সে নাকানিচুবানি দিতে বেশ পারদর্শী। এছাড়া শাদাব খানের লেগ স্পিন আক্রমনের সাথে হাফিজ-মালিকও অন্যরকম ভীতি তৈরি করে প্রতিপক্ষ শিবিরে।
ম্যাচের গতিপথ কোন দল নিয়ন্ত্রণ করবে, তা সময়ই বলে দেবে। কিন্তু চমৎকার একটি ম্যাচের আভাস পাওয়া যাচ্ছে এখনই। তবে যেহেতু অস্ট্রেরিয়ার প্রতিপক্ষ পাকিস্তান, তাই একটি প্রশ্ন থেকেই যায়। ম্যাচটি কি রোমাঞ্চকর হবে? নাকি হবে রহস্যময়?
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।