Inqilab Logo

মঙ্গলবার ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯ আশ্বিন ১৪৩১, ২০ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

অনুশীলনের জন্য হাহাকার

স্পোর্টস রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৮ জুন, ২০১৯, ১২:০৫ এএম

টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচে জেতার পরদিন বিশ্রাম দেওয়া হয়েছিল পুরো দলকে। তারপর দিন ছিল ঈদ। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচের আগের ওই দিন সন্ধ্যায় অবশ্য রাখা হয়েছিল দলের অনুশীলন। কিন্তু লন্ডনের বৃষ্টি সেই অনুশীলন পন্ড করে দেয়। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে হারের ক্ষত নিয়ে পরদিনই আসতে হয়েছে কার্ডিফে। স্বাভাবিকভাবে ভ্রমণ থাকায় ছিল না অনুশীলন।

ইংল্যান্ডের বিপক্ষে নামার আগে নিজেদের ভুলত্রুটি শোধরে নেওয়ার জন্য গতকাল দিনটাই হাতে ছিল মাশরাফিদের। কিন্তু বেরসিক বৃষ্টির ওসব হিসাব মাথায় থাকলে তো। বৃষ্টি থাকায় বাংলাদেশ দল সোফিয়া গার্ডেনসে আসে আধঘণ্টা দেরিতে। মাঠে নেমে অনুশীলন করা যাবে না তাই আসেননি দলের বেশিরভাগই। ইনডোরে ব্যাটিং করেছেন মোহাম্মদ মিঠুন, সাব্বির রহমান আর মুশফিকুর রহিম। অধিনায়ক এসেছিলেন কেবল সংবাদ সম্মেলনে অংশ নিতে।

প্রথম ম্যাচের পর আর অনুশীলনে নামতে না পারা পুরো দলের জন্য সমস্যা না দেখলেও, অধিনায়ক নিজেসহ যারা ছন্দ পেতে ভুগছেন তাদের জন্য একটা ঘাটতিই থেকে যাচ্ছে, ‘আসলে এটা অনেক ক্ষেত্রে হয়। আমরা টুর্নামেন্টের ভেতরে চলে আসছি। অনুশীলন করে যে খুব বেশি জিনিস বদল করা যায় ত নয়। তবে কিছু কিছু খেলোয়াড়ের জন্য কখনো অনুশীলন করা খুব গুরুত্বপূর্ণ। যদি আমার কথা বলেন, আমার যে জিনিসগুলা তলিয়ে দেখা দরকার, যে জিনিসগুলো মাঠে হচ্ছে না ঠিক করা দরকার। অবশ্যই তামিমও সেটা অনুভব করছে।’

কার্ডিফের মাঠে এক পাশ দিয়ে থাকে বাতাস। সেই বাতাসে মানিয়ে বল করতে হয়। সেজন্যই মাঠে নেমে দরকার ছিল প্রস্তুতির। গত দুই ম্যাচে খরুচে বল করে উইকেট ফেলতে পারেননি মাশরাফি। প্রভাব রাখতে পারেননি ম্যাচেও। প্রস্তুতির এই ঘাটতি তাই অধিনায়ককে রেখেছে অস্বস্তিতে, ‘বাতাসের সঙ্গেও মানিয়ে নেওয়া দরকার ছিল। যা না করতে পারা আমাদের জন্য ইতিবাচক আভাস না। আবার এই পরিস্থিতিতে কিছু করারও না। কেবল আত্মবিশ্বাসটা ঠিক রাখা জরুরী।’

এমনই এক ম্যাচের আগে বাগড়া দিল বৃষ্টি ঠিক যখন স্বাগতিক ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ‘হ্যাটট্রিকের স্বপ্নে বিভোর মাশরাফির দল।
শেষ দুটি বিশ্বকাপেই বাংলাদেশের কাছে হেরেছে ইংল্যান্ড। ২০১৫ সালের বিশ্বকাপে তো টাইগারদের কাছে হেরে টুর্নামেন্ট থেকেই বিদায় নিয়েছে তারা। তাই উপমহাদেশের এ দেশটির শক্তিমত্তা সম্পর্কে খুব ভালো করেই জানে দলটি। এছাড়া সা¤প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের উত্থানটাও দেখেছেন খুব কাছ থেকে। তাই টাইগারদের এখন ছোট দল ভাবা তো দূরের কথা, উল্টো ভয়ঙ্কর প্রতিপক্ষ হিসেবেই মানছেন ইংলিশ অধিনায়ক ইয়ন মরগান।

বিশেষ করে বাংলাদেশের সিনিয়র খেলোয়াড়দের সমীহ করছেন মরগান। পঞ্চপাÐব খ্যাত পাঁচ খেলোয়াড়কে এক প্রকার ভয়ই পাচ্ছেন তিনি। কারণ এ পাঁচ খেলোয়াড় মিলেই খেলেছেন ৯৯০টি ম্যাচ। যা ইংল্যান্ডের সিনিয়র পাঁচ খেলোয়াড়ের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ। মরগান ছাড়া কেউই খেলেননি দুইশর বেশি ম্যাচ। একশর বেশি ম্যাচ খেলেছেন আর কেবল জো রুট ও জস বাটলার। সেখানে বাংলাদেশের তিন খেলোয়াড় খেলেছেন দুইশর বেশি ম্যাচ। আর দুইজনের প্রায় দুইশ ছুঁইছুঁই। তাই তাদের অভিজ্ঞতা যে ম্যাচের বড় ধরণের প্রভাব ফেলতে পারে তা মানছেন ইংলিশ অধিনায়ক।

সব মিলিয়ে কঠিন প্রতিদ্ব›িদ্বতামূলক ম্যাচই আশা করছেন মরগান, ‘এটা অনেক কঠিন একটি ম্যাচ হতে যাচ্ছে। তারা খুব ভালো দল এবং আমার মনে হয় লোকজন তাদের ছোটো করে কমিয়ে দেখে। কিন্তু আমরা সেটা করব না। তাদের এ দলটি অনেক ক্রিকেট খেলেছে। তাদের সিনিয়র খেলোয়াড়দের অভিজ্ঞতা অনেক, যেটা আমাদের সিনিয়র খেলোয়াড়দের চেয়েও বেশি। তাই অবশ্যই তারা আমাদের জন্য হুমকিজনক। আশা করি আমরা ভালো খেলব এবং তাদের বিপক্ষে জয় পাব।’

তবে বিশ্ব ক্রিকেটে বাংলাদেশের উত্থানটা খুব বেশি দিন হয়নি। এক যুগ আগেও মিনসে দল হিসেবেই পরিচিত ছিল। মরগানের চোখে বাংলাদেশের বড় হওয়ার শুরুটা ২০০৫ সালে। সেবার তাদের মাঠে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ঐতিহাসিক জয়টিই টাইগারদের বদলে যেতে সহায়তা করছে বলে মনে করেন তিনি, ‘আমার মনে আছে তাদের শুরু দিকে কথা, যেটা তারা ২০০৫ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে করেছিল। তখন থেকেই তারা অনেক ক্রিকেট খেলে আসছে এবং দিন দিন ভালো দল হচ্ছে।’

এছাড়া শেষ দুই বিশ্বকাপে বাংলাদেশের বিপক্ষে হারের কথাও ভুলে যাননি মরগান। বিশেষকরে ২০১৫ সালের কথা। অস্ট্রেলিয়ার মাঠে যে সেবারও তার নেতৃত্বেই খেলেছিল ইংলিশরা। সে জয়টি কোন অঘটন ছিল না বলেও জানান ইংলিশ অধিনায়ক, ‘আমরা তাদের কাছে ২০১৫ সালের বিশ্বকাপে হেরেছি। সেদিনের জয়টি প্রাপ্য তাদের ছিল।’

ইংলিশদের কাছে হেরেছে সেই ২০০৭ সালে। আজ কার্ডিফে জয়ের হ্যাটট্রিকই লক্ষ্য মাশরাফি-সাকিবদের। বাংলাদেশ ক্রিকেটের সবচেয়ে সুখকর স্মৃতিগুলোর একটি। বৃষ্টি না হলে সেই সুখের ভেলায় বাংলাদেশ আরেকবার ভাসাতে পারে লাল-সবুজের পতাকা।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বিশ্বকাপ ক্রিকেট

১৬ জুলাই, ২০১৯
১৫ জুলাই, ২০১৯

আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ