নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
বাংলাদেশ পুরো আসরে জিতবে একটি ম্যাচ, তাও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে! এমন টুইট করে হইচই ফেলে দিয়েছিলেন সাবেক কিউই অধিনায়ক ব্রেন্ডন ম্যাককালাম। তবে ম্যাককালামের প্রেডিকশনকে ভুল প্রমাণ করে বাংলাদেশ নিজেদের প্রথম ম্যাচেই হারিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকাকে। আর তার পর থেকেই তাকে নিয়ে ফেসবুক-টুইটারে বিদ্রুপ মন্তব্য আর উশৃঙ্খল ট্রলে মেতে উঠেছে টাইগার সমর্থকরা।
সাম্প্রতিক ফর্ম বিবেচনায় শ্রীলঙ্কার চেয়ে বহু শক্তিশালী দল দক্ষিণ আফ্রিকা। সেই দক্ষিণ আফ্রিকাকে বাংলাদেশ পরাজিত করে যখন হুংকার দিয়েছে, বিতর্কিত প্রেডিকশন করা ম্যাককালাম কী বলছেন? ম্যাচ শেষে টুইটার বার্তায় ম্যাককালাম দাবি করেন, প্রেডিকশন অনুযায়ী আজ (গত ২ জুন) বাংলাদেশ জিতলেও পয়েন্ট টেবিল বা দলগুলোর জয়-পরাজয়ের সংখ্যায় তার প্রেডিকশনের চেয়ে খুব বেশি হেরফের হবে না। এছাড়া এই ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার জয়ও কামনা করেছিলেন ম্যাককালাম।
টুইট বার্তায় তিনি বলেন, ‘মন কেড়ে নেওয়ার মত পারফরম্যান্স দেখাল বাংলাদেশ, দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে। আমি আশা করছিলাম দক্ষিণ আফ্রিকা জিতবে, কিন্তু বাংলাদেশ ভালো খেলেছে। আমার প্রেডিকশন সম্পর্কে বলব, এই অনুমানকে ভুল প্রমাণ করে দেওয়া বার্তাগুলোর জন্য ধন্যবাদ। এটাই হয়ত শেষ ভুল নয়। তবে শেষমেশ আমার প্রেডিকশন অনেকটা নির্ভুলই থাকবে (পয়েন্ট টেবিল বা জয়-পরাজয়ের সংখ্যার দিকে ইঙ্গিত করে)। আমার প্রেডিকশনের বাইরে সবাই কিন্তু জিতে যেতে পারবে না!’
তবে তাতেও টাইগার সমর্থকদের ট্রল থেকে বাঁচতে পারেন নি এই কিউই গ্রেট। একের পর এক তির্জক মন্তব্যে ভরে উঠেছে নিউজ লিঙ্ক, অনেকেই আবার অতিউৎসাহী হয়ে শুধু ্ম্যাককালামকেই নয়, তার দেশ নিউজিল্যান্ডকে নিয়েও বাজে মন্তব্য করেন। যা একেবারেই কাম্য নয়।
এই একই ম্যাচে আরেকটি ঘটনা তো বাংলাদেশী দর্শকদেরও লজ্জায় ফেলে দিয়েছে। বাংলাদেশের দেয়া বিশ্বকাপের রেকর্ড ৩৩১ রান তাড়ার লক্ষ্যে ব্যাট করছে দক্ষিণ আফ্রিকা। ৩৫তম ওভারের খেলা চলছে। জয়ের জন্য ১৬ ওভারে তখনও প্রোটিয়াদের প্রয়োজন ১৩৩ রান। রান বাড়ানোর তাগিদে থেকেই মুস্তাফিজুর রহমানের একটি বল কাট করতে চেয়েছিলেন ৩১ রান করা ডেভিড মিলার।
ঠিকমতো ব্যাটে বলে না হলে বলটি চলে যায় থার্ডম্যানে দাঁড়ানো মাহমুদউল্লাহর নাগালে। কিছুটা চেষ্টা করলে হয়তো বা ফিফটি ফিফটি সুযোগটিকে ক্যাচে পরিণত করতে পারতেন এই অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার। তবে ১৯ ঘণ্টা রোজা রেখে খেলছেন, ম্যাচও বাংলাদেশের নিয়েন্ত্রণে আর নিজেও ভুগছেন কাঁধের চোটে, সব মিলিয়ে প্রায় ৫জন ক্রিকেটার আছেন কম বেশি চোটে, দলকে আর নতুন কোন ঝুঁকিতে না ফেলার চিন্তাতেই হয়তো খুব একটা চেষ্টা করেননি ক্যাচটি তালুবন্দী করতে।
আর তাতেই ক্ষেপে ভুত ওভালের গ্যালারিতে থাকা প্রবাসী বাঙালী দর্শকরা! হাত গলে বেরিয়ে যাওয়ার পরই তাকে উদ্দেশ্য করে ভেসে আসে তীর্জক মন্তব্য এমনকি অস্রাভ্য গালিও! যার কড়া প্রতিবাদ না করে শুধু আঙুল ঠোটের কাছে নিয়ে ‘শান্ত্ব’ থাকতে বলেছেন মাহমুদউল্লাহ। টিভি ক্যামেরায় এই দৃশ্য দেখা গেছে বার বার।
যেখানে টাইগার সোয়েব আলী যে কি না এবারের বিশ্বকাপের ফাইনালেই হাতে পেতে যাচ্ছেন ‘গ্লোবাল ফ্যান’ পুরস্কারের স্মারক, সারা গায়ে হলুদ-সাদা-সবুজে মুড়িয়ে আসেন ডোরাকাটা রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার সাজে, তাকে অনুসরণ করে তৈরী হয়েছে আরেক টাইগার মিলনের মতো সমর্থক, সেখানে এমন কিছু উশৃঙ্খল সমর্থকের কারণে সারা বিশ্বেই বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ভুলুণ্ঠিত হয়। বিশেষ করে ক্রিকেট ব্যান্ডিংয়ের যুগে বাংলাদেশের নামের সঙ্গে অতপ্রতোভাবে জড়িয়ে ক্রিকেটের নাম, ক্রিকেটারদের নাম। আর তাদের সঙ্গেই যদি এমন আচরণ হয়, তাতে আমাদের ক্রিকেট কিংবা ক্রিকেটারদেরই নয় বরং দেশের ভাবমূর্তিও ক্ষুন্ন করছি।
জানি ক্রিকেট আমাদের আবেগের জায়গা, ভালোবাসার জায়গা। বাংলাদেশ জিতলে জিতে যায় ১৬ কোটিং বাঙালি, হেরে গেলে বিষাদে ডুবে থাকে গোটা লাল-সবুজের ৫৬ হাজার জমিন। এগুলোও আমাদের আবেগের বহিঃপ্রকাশ বই আর কিছু নয়। কিন্তু খণিকের সেই আবেগের কারণে যারা আমাদের উপলক্ষ্য এনে দেয় রঙিল উদযাপনের, উজ্জ্বীবিত করে এক হবার মন্ত্রে, তাদের সঙ্গে এমণ আচরণ করে আমরা শুধু আমাদের ক্রিকেটকে, ক্রিকেটারদেরকেই নয় বরং যে ক্রিকটের কারণে আমাদের দেশের নাম আজ বিশ্বে সমাদৃত সেটিকেই ভুন্ডুল করছি।
ম্যাচটি বাংলাদেশ জিতেছে। উদযাপনের এই ক্ষণে একটিবার কি ভেবেছেন বিদেশ বিভুঁইয়ে, পরিবার পরিজন ছেড়ে, ঈদের আগে যারা আমাদের এমন উপলক্ষ্য এনে দিল ঐ দর্শকের সেই অশ্লীল বাক্যটির কথা মনে হলে তার বা তাদের কি অবস্থা?
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।