পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
জাতীয় নির্বাচনের আগের ঈদ থেকে নির্বাচনের পরের ঈদ মাত্র এক বছরের ব্যবধানে আওয়ামী লীগের চার ভাগের তিন ভাগ এমপি প্রার্থী হাওয়া হয়ে গেছে। গতবার জাতীয় নির্বাচনের আগ মুহূর্তের ঈদে ব্যাপক উচ্ছাস ছিল আওয়ামী লীগের এমপি প্রার্থীদের মাঝে। তৃণমূলে ছিল এমপি প্রার্থী সেব নেতাদের ভীড়। প্রত্যেক নেতাকর্মীদের সঙ্গে দেখা করা, ঈদ উপহার দেয়া, ইফতারসহ নানা সামাজিক অনুষ্ঠানে তারা ব্যস্ত ছিলেন। নেতাকর্মীদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করেছেন। বিপদে আপদে কাছে থাকার ওয়াদাও দেন তারা।
কিন্তু এবার তৃণমূলে এসব নেতাদের ছায়াও দেখা যাচ্ছে না। তৃণমূল নেতাকর্মীরা তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেও তাদের দেখা পাচ্ছেন না। নেতাকর্মী ও স্থানীয় অসচ্ছলদের ঈদ উপহার দেয়ার ভয়ে অনেকের মোবাইল বন্ধ। দলের মনোনয়ন না পাওয়ায় মৌসুমী পাখির মত রীতিমত উধাও হয়ে গেছেন এসব এমপি প্রার্থীরা। তাই এবার তৃণমূল আওয়ামী লীগ নেতাদের মধ্যে ঈদ উচ্ছাস গতবারের চেয়ে অনেকটা কম।
জানা যায়, একাদশ সংসদ নির্বাচনে চার হাজার ২৩ জন নেতা ৩০০ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছিলেন। প্রতিদ্ব›িদ্বতা করার লক্ষ্যে বিশেষ করে গত ঈদে নির্বাচনী এলাকায় সরব ছিলেন তারা। নিজেদের অবস্থান তারা তুলে ধরেছেন নেতাকর্মীদের সঙ্গে একাত্ম হয়ে। কিন্তু এবারের ঈদে নির্বাচনী এলাকাগুলোতে তাদের অনুপস্থিতি চোখে পড়ার মতো। এবার ঈদে এমপিসহ প্রায় হাজার খানেক নেতা তৃণমূলে যোগাযোগ করছেন। আর বাদ বাকি সবাই পুরোপুরি হাওয়া।
দেশব্যাপী প্রায় অর্ধশতাধিক আসনে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গতবারের এমপি প্রার্থী নেতারা রমজানের শুরুতে দুই-একদিনের জন্য এলাকায় গিয়েছেন কয়েকজন। অনেকেই দেশের বাইরে ঈদ করছেন, আর কিছু অংশ দেশেই আছেন কিন্তু নেতাকর্মীরা তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেও তাদের দেখা পাচ্ছেন না। নেতাকর্মীদের ঈদ উপহার দেয়ার ভয়ে অনেকে মোবাইল ফোন বন্ধ রেখেছেন বলেও জানা যায়।
অভিযোগ আছে, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা যারা হত নির্বাচনে এমপি প্রার্থী ছিলেন অথচ মনোনয়ন পাননি তাদের অনেকেই তৃণমূলের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন না এই ঈদে। অনেকেই রমজানের অনেকটা সময় ওমরাহ করতে সউদী আবরে ব্যয় করেছেন ফলে নেতাকর্মীরা তাদের সাক্ষাত পাননি। আবার দেশে আসার পরও নেতাকর্মীরা ঈদে তাদের পাশে পাচ্ছেন না। অনেক নেতার ফোন রিসিভ না করা এবং মোবাইল ফোন বন্ধ রাখারও অভিযোগ করছেন তৃণমূল নেতারা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক তৃণমূল নেতা জানান, মনোনয়ন না পেয়ে তৃণমূলের নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন না গতবারের মনোনয়ন না পাওয়া এমপি প্রার্থীরা। কিন্তু এলাকায় নেতাকর্মী যারা বিগত সময়ে সেই নেতার জন্য মিছিল করেছেন, পোস্টার লাগিয়েছেন তাদের কারো খোঁজ রাখছেন না তথা কথিত সেই মৌসুমী এমপি প্রার্থীরা।
একদিকে এমপির অনুসারী নেতাকর্মীদের ঈদ উপহার দিচ্ছেন এমপিরা। অন্য দিকে যারা এমপির বিপরীতে রাজনীতি করেছেন তারা তাদের কর্মীদের ঈদে কিছুই দিতে পারছেন না। অন্যদের দেখাদেখি কর্মীরাও নেতাদের কাছে বিভিন্ন আবদার করছেন এবং ঈদ উপহার পাওয়ার আশা করছেন। এলাকার যারা গরীব দুঃখী, অসচ্ছল, যাদের গতবার ঈদ সামগ্রী উপহার দেয়া হয়েছিল তারাও খোঁজ নিচ্ছেন সেই এমপি প্রার্থী এবার কিছু দেবেন কিনা। কিন্তু সেই এমপি প্রার্থী নেতার এবার কোন খোঁজ নেই। আর সেই নেতার হয়ে এলাকায় যারা রাজনীতি করেছেন, বর্তমানেও করেন তাদেরও কোন খোঁজই রাখছেন না নেতারা। ফলে অস্বস্তিকর পরিস্থিতির মধ্যে পড়েছেন সেই নেতার স্থানীয় অনুসারীরা।
এদিকে কিছুটা ভিন্ন চিত্রও আছে। কিছু এলাকায় নির্বাচনের আগে এবং পরে একই রকম সময় দেন মনোনয়ন না পাওয়া এমপি প্রার্থীরা। রমজান মাসে নেতাকর্মীদের পাশে থেকে ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি করছেন।
আবার কিছু জটিলতাও রয়েছে কিছু এলাকাতে। বর্তমান এমপি তার বিরোধী কাউকে এলাকায় কাজ করতে দিচ্ছেন না। গত রোববার কুমিল্লা-১ আসনে স্থানীয় এমপি সুবিদ আলী ভূঁইয়া এবং আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক ইঞ্জি. আব্দুস সবুরের প্রতিদ্ব›িদ্বতার কারণে উপজেলা আওয়ামী লীগের ইফতারে ১৪৪ ধারা জারি করেছে প্রশাসন। এছাড়া আরো অনেক এলাকায় এমপিরা তার প্রতিদ্ব›িদ্ব আওয়ামী লীগের অন্য প্রার্থীদের মাঠে নামার কোন সুযোগ দিচ্ছেন না।
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের একজন সাংগঠনিক সম্পাদক ইনকিলাবকে বলেন, মনোনয়ন না পাওয়া এমপি প্রার্থীরা তৃণমূলে ভীড় জমাচ্ছেন না এটা স্বাভাবিক বিষয়। গতবার নির্বাচনের আগে ঈদ থাকায় সবাই তৃণমূলে বেশি সময় দিয়েছেন, পাশে থাকার চেষ্টা করেছেন। এবার তার কর্মকান্ড কম থাকবে এটাই স্বাভাবিক। তিনি বলেন, আরো দু বছর গেলে নির্বাচনের ইস্যু জমে উঠলে তৃণমূলে এমপি প্রার্থীদের যাতায়াত বাড়বে। তখন আবারো তৃণমূলের রাজনীতি বা ঈদ রাজনীতি জমে উঠবে।
এদিকে প্রতি বছর প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা ঈদের দিন নেতাকর্মীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। এবার তিনি ঈদ করছেন ফিনল্যান্ডে। জাপান সফর শেষে তিনি এখন সউদী আরক সফর শেষে ফিনল্যান্ডে আসেন তিনি। আগামী ৮ জুন তার দেশে ফিরে আসার কথা। তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঈদের ছুটিতে জনগণের পাশে থাকার জন্য দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন বলে দলের শীর্ষ নেতারা জানিয়েছেন।
আওয়ামী লীগ সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক জানান, মানুষ শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগকে আরেক দফায় বিপুল ভোটে নির্বাচিত করেছে। নতুন সরকারের এটাই প্রথম ঈদ। তাই এ সময় মানুষের কাছে যেতে হবে। তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাতে হবে। সর্বস্তরের মানুষকে উন্নয়নমূলক কার্যক্রমে সম্পৃক্ত করতে হবে। স্বাধীনতাবিরোধীদের চক্রান্ত রুখতে হবে।
এদিকে গতকাল আওয়ামী লীগের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, পবিত্র ঈদ-উল ফিতর-এর দিন বঙ্গবন্ধু এভিনিউস্থ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আওয়ামী লীগ ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার পক্ষে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও জাতীয় নেতৃবৃন্দ সকাল ১১:৩০ মিনিট থেকে দেশের সুশীল সমাজের প্রতিনিধি ও ক‚টনীতিক ব্যক্তিত্ব এবং ১২.৩০ মিনিট থেকে রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মী এবং সর্বস্তরের জনসাধারণের সাথে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।