Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ভারতীয় মিডিয়ার রিপোর্ট : ওভালে প্রতিধ্বনিত হলো বাংলার বাঘদের গর্জন

স্পোর্টস ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৩ জুন, ২০১৯, ১০:৫৬ এএম

ইংল্যান্ডের মাটিতে গৌরবের নতুন ইতিহাস রচনা করল বাংলাদেশ। আফ্রিকার সিংহের গর্জন ম্লান হয়েছে বাংলার বাঘদের কাছে। ইংল্যান্ডের পর বাংলাদেশের কাছে হেরেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। পর পর দুটি ম্যাচ হেরে বিশ্বকাপে অনেকটা ব্যাকফুটে চলে গিয়েছে প্রোটিয়ারা। রোববার ওভালে প্রতিধ্বনিত হয়েছে বাংলার বাঘদের গর্জন। গতকাল বিশ্বকাপ ক্রিকেটের ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকাকে বাংলাদেশ বধ করার পর ভারতের মিডিয়ায় এসব কথা বলা হয়েছে। এ খবর দিয়ে অনলাইন আনন্দবাজার পত্রিকা লিখেছে, ইংল্যান্ডের মাটিতে গৌরবের নতুন ইতিহাস রচনা করল বাংলাদেশ। চলতি বিশ্বকাপে পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা ১৫০ রানের গণ্ডি অতিক্রম করতে পারেনি প্রথম ম্যাচে।

সেখানে নিজেদেরই রেকর্ড ভেঙে ৩৩১ রানের লক্ষ্যমাত্রা রেখে ২১ রানে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে দিল বাংলাদেশ। এই অসাধারণ জয়ের কারণ কী?  রবিবার টস জিতে দক্ষিণ আফ্রিকা প্রথমে বাংলাদেশকে ব্যাট করতে পাঠায়। শুরুতে সৌম্য সরকার দ্রুত ৪২ রান করে ইনিংসে গতি এনে দেন। শাকিব আল হাসান ও মুশফিকুর রহিম ১৪২ রানের পার্টনারশিপ করেন। এরকম পার্টনারশিপের পর এ বারের বিশ্বকাপ জমে উঠেছে বলছেন ক্রিকেটপ্রেমীরা। দুই সিনিয়র ক্রিকেটার বাংলাদেশকে শক্ত ভিতের উপরে দাঁড় করিয়ে দেন। এই কারণেই আত্মবিশ্বাস আরও বেড়ে যায় ‘বাংলার বাঘ’দের। শাকিব ৮৪ বলে ৭৫ রানের ইনিংস খেলেন। মুশফিকুর ৮০ বলে ৭৮ রান করেন। দুই ব্যাটসম্যান ফিরে যাওয়ার পরে বাংলাদেশের ইনিংসকে এগিয়ে নিয়ে যান মাহমুদুল্লাহ ও মোসাদ্দেক। মাহমুদুল্লাহ ৩৩ বলে ৪৬ রান করে অপরাজিত থেকে যান। মোসাদ্দেক খুব সামান্য বলেই ২৬ রান করায় বাংলাদেশ শেষ করে ৩৩০ রানে। দক্ষিণ আফ্রিকার  এডেন মারক্রামের উইকেট তুলে ম্যাচের নায়কও শাকিব। এর ফলে ওয়ান ডে ক্রিকেটে দ্রুততম (১৯৯ ম্যাচ) পাঁচ হাজার রান ও আড়াইশো উইকেট দখল করলেন তিনি। টস জিতে বাংলাদেশকে ব্যাট করতে পাঠিয়েছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক ফ্যাফ ডুপ্লেসি। কিন্তু সেই সিদ্ধান্ত ভুল ছিল। শুরু থেকেই দক্ষিণ আফ্রিকার বোলারদের উপরে আগ্রাসী মেজাজে ব্যাট চালাতে শুরু করেন বাংলাদেশের দুই ওপেনার তামিম ইকবাল (২৯ বলে ১৬ রান) ও সৌম্য সরকার (৩০ বলে ৪২ রান)। দক্ষিণ আফ্রিকার বোলাররা সে অর্থে এ দিন সফল হতে পারলেন না। পঞ্চম ওভারে লুঙ্গি এনগিডির বলে দু’বার পুল করে চার মেরে শুরুটা করেন সৌম্য।  মনোবল ভেঙে যায় সেখানেই। কাগিসো রাবাডাদের বিরুদ্ধে ব্যাট হাতে  জ্বলে উঠেছেন বাংলাদেশের তারকারা। শেষ দিকে মোহাম্মদ মিঠুনও ২১ বলে ২১ রান করেন। কুইন্টন ডি’কক (২৩) ও এডেন মারক্রাম (৪৫) শুরুটা ভাল করেছিলেন। কিন্তু শাকিব ও মুস্তাফিজুরদের সামনে স্থায়ী হতে পারেন নি দীর্ঘক্ষণ। ফাফ ডু’ প্লেসি (৬২) ও জে পি ডুমিনিরাও (৪৫) ম্যাচ বের করে আনার চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু মেহেদী হাসান-সহ বাংলাদেশের বোলাররা যথেষ্ট নিয়ন্ত্রিত বোলিং করেছেন, তাই আফ্রিকার সিংহের গর্জন ম্লান হয়েছে বাংলার বাঘদের কাছে।

জি নিউজের শিরোনাম- ২০১৯: রেকর্ড রান তুলে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে বিশ্বকাপ শুরু বাংলাদেশের। এতে বলা হয়, চমক দিয়ে ২০১৯ বিশ্বকাপে শুরু বাংলাদেশের। ওভালে প্রথম ম্যাচেই রানের রেকর্ড। দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে প্রথমে ব্যাটিং করে বাংলাদেশ ৬ উইকেট হারিয়ে ৩৩০ রান তোলে। বিশ্বকাপে তো বটেই একদিনের ক্রিকেটে এটিই বাংলাদেশের সর্বোচ্চ দলগত রান। সেই সঙ্গে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ২১ রানে হারিয়ে বিশ্বকাপ অভিযান শুরু করল এশিয়ার টাইগাররা। রবিবার টস জিতে প্রথমে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেন দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক ফাফ দু প্লেসি। হাসিম আমলা, ডেল স্টেইন এদিনও খেলেন নি। শুরু থেকেই লুঙ্গি এনগিডি ও রাগিসো রাবাডাদের বিরুদ্ধে আক্রমণের পথই বেছে নেন দুই বঙ্গ ওপেনার তামিম ইকবাল ও সৌম্য সরকার। তামিম ১৬ রানে আউট হলেও চালিয়ে খেলতে থাকেন সৌম্য। কিন্তু ৩০ বলে ৪২ রান করে প্যাভিলিয়নে ফিরলেন সৌম্য সরকার। এরপর ওভালের বাইশ গজে সাকিব আল হাসান ও মুশফিকুর রহিম জুটি বাংলাদেশকে বড় রান গড়তে সাহায্য করেন। তৃতীয় উইকেটে ১৪২ রানের পার্টনারশিপ। ৮৪ বলে ৭৫ রান করলেন সাকিব। আর মুশফিকুর করলেন ৮০ বলে ৭৮ রান। মহম্মদ মিঠুন অবস্য ২১ রানে ফিরে গেলেন। এরপর মাহমুদুল্লাহ ও মোসাদ্দেক হোসেন জুটি ৩০০ রানের গণ্ডি টপকাতে সাহায্য করেন। ২০ বলে ২৬ রান করে আউট হন মোসাদ্দেক হোসেন। মাহমুদুল্লাহ ৩৩ বলে ৪৬ রানে অপরাজিত থাকেন। শেষ পর্যন্ত ৬ উইকেট হারিয়ে ৩৩০ রান তোলে বাংলাদেশ। দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে ২টি করে উইকেট নেন ফেলুকাওয়া, ক্রিস মরিস এবং ইমরান তাহির।

৩৩১ রানের টার্গেট নিয়ে ব্যাট করতে নেমে ধীর ব্যাটিং শুরু করেন কুইন্টন ডি'কক এবং মার্করাম। ২৩ রানে ডি'কক কে রান আউট করে দক্ষিণ আফ্রিকা ইনিংসে প্রথম ভাঙন ধরান মুশফিকুর রহিম। এরপর মার্করাম ৪৫ রানে বোল্ড হন সাকিবের বলে। একদিনের ক্রিকেটে ২৫০ তম উইকেট এটি সাকিব আল হাসানের। অধিনায়ক ফাফ দু প্লেসি ৫৩ বলে ৬২ রান করেন। ডেভিড মিলার ৩৮, ভান দান দুসেন ৪১ এবং জেপি দুমিনি ৪৫ রান করলেও শেষ রক্ষা হয়নি। শেষ পর্যন্ত ৫০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ৩০৯ রান তোলে দক্ষিণ আফ্রিকা। বাংলাদেশের হয়ে মুস্তাফিজুর রহমান ৩টি এবং মোহাম্মদ সইফুদ্দিন ২টি উইকেট নেন। ম্যাচের সেরা হয়েছেন আইসিসি-র একদিনের ক্রিকেটে এক নম্বর অল রাউন্ডার সাকিব আল হাসান। ইংল্যান্ডের পর বাংলাদেশের কাছে হার। পর পর দুটি ম্যাচ হেরে বিশ্বকাপে বেশ খানিকটা ব্যাকফুটে চলে গেল প্রোটিয়ারা। 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বিশ্বকাপ ক্রিকেট

১৬ জুলাই, ২০১৯
১৫ জুলাই, ২০১৯

আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ