নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
এবারের বিশ্বকাপে বাংলাদেশের শুরুটা হলো বীরোচিত রেকর্ড গড়ার মধ্য দিয়ে। প্রথমে তামিম-সৌম্যের উড়ন্ত শুরু, এরপর সাকিব-মুশফিকের রেকর্ড জুটি আর শেষদিকে মাহমুদউল্লাহর ঝড়ো ফিনিশিং। সব মিলে বিশ্বকাপ তো বটেই যে কোনো ধরণের ওয়ানডে ক্রিকেটেই দলীয় সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড গড়ে বাংলাদেশ। জিততে হলে দক্ষিণ আফ্রিকাকেও গড়তে হত রেকর্ড। বিশ্বকাপে যে ৩৩০ তাড়া করে জয়ের কোনো রেকর্ড নেই।
বিশ্বকাপে তিনশ রান তাড়া করেই জয়ের রেকর্ড নেই দক্ষিণ আফ্রিকার। বিশ্বমঞ্চে রান তাড়ায় তাদের রেকর্ডটা ভারতের বিপক্ষে। ২০১১ বিশ্বকাপে ভারতের দেওয়া ২৯৬ রানের চ্যালেঞ্জে তারা সফল হয়েছিল। আর বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ রান তাড়ার রেকর্ডটা ইংল্যান্ডের। ২০১১ বিশ্বকাপে আয়ারল্যান্ডের দেওয়া ৩২৭ রানের লক্ষ্য তাড়া করে জয় পায় ইংলিশরা।
লন্ডনের কেনিংটন ওভাল গতকাল যেন রূপ নেয় মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে। ২৩ হাজার দর্শক ধারণক্ষম গ্যালারির প্রায় ৮০ শতাংশ দর্শকই লাল-সবুজের প্রতিনিধি। মুহূর্মুহু আওয়াজে সাকিব-মুমফিকদের প্রেরণা দিয়েছেন ইংল্যান্ডের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে আসা প্রবাসী বাংলাদেশীরা। দেশ থেকে খেলার দেখতে যাওয়া দর্শকরা তো ছিলেনই।
টস ভাগ্যে হারলেও অধিনায়ক মাশরাফির অনুমানটা সঠিক ছিল, ‘এই পিচে রান আসবে’। এরপরও একটা শঙ্কা ছিলই। এর আগে উপমহাদেশের দুই দল প্রথমে ব্যাট করে বড় ব্যবধানে হেরেছে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বাউন্সারের সামনে তো রেকর্ড ব্যবধানে হেরে বিশ্বকাপ শুরু করে পাকিস্তান। শ্রীলঙ্কাও নিউজিল্যান্ডের পেসের সামনে দাঁড়াতে পারেনি। উইন্ডিজ ও কিউদের পেস বোলিং অ্যাটাকের চেয়ে প্রোটিয়া বোলিং আক্রমণ কম শক্তিশালী নয়। যদিও উনজুরির কারণে এদিন ছিলেন না ডেল স্টেইন। কিন্তু লুঙ্গি এনগিদি, কাগিসো রাবাদা আন্দিলে ফেহলুকায়োদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ের সঙ্গে সবাই পরিচিত। আর ইমরান তাহিরের জাদুকরী ঘুর্ণী বল তো ছিলই। কিন্তু সবকিছুকে কী দারুণভাবেই না সামলে নেয় টাইগার ব্যাটসম্যানরা।
তামিম-সৌম্যের ব্যাটে ৮ ওভারে ৬০ রানের উদ্বোধনী জুটি পেয়ে যায় বাংলাদেশ। তামিম ইকবালের (১৬) শুরুটা ছিল সাবধানী। আউটও হয়েছেন ফেহলুকায়োর লাফিয়ে ওঠা বলে উইকেটে পিছনে ক্যাচ দিয়ে। তবে সৌম্যের (৩০ বলে ৪২) ব্যাটে ছিল আত্মবিশ্বাসের ছাপ। দলীয় ৭৫ রানে আউট হওয়ার আগে দুর্দান্ত কিছু শট উপহার দিয়ে ভক্তদের মুগ্ধ করেন এই ওপেনার।
এরপরই আসে সাকিব-মুশফিকের সেই রেকর্ড জুটি। গত বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ১৪১ রানের গড়েছিলেন সাকিব ও মাহমুদউল্লাহ। এবার তার চেয়ে এক রান বেশি করে বিশ্বকাপে যে কোনো উইকেটে সর্বোচ্চ জুটির রেকর্ড গড়েন তারা। সব মিলে এটি তাদের রেকর্ড পঞ্চম শতরানের জুটি। ৮৪ বলে ৮ চার ও ১ ছয়ে ৭৫ রান করা সাকিব তাহিরের বলে বোল্ড হলে জুটি বিচ্ছিন্ন হয়। তার আগে তামিম ইকবালের পর দেশের দ্বিতীয় ক্রিকেটার হিসেবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এগারো হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন সাকিব। পরে বল হাতে একটি উইকেট নিয়ে থাকলে এক দিনের ক্রিকেটে দ্রুত ৫ হাজার রান ও ২৫০ উইকেটের রেকর্ডের মালিকও বনে গেছেন বিশ্বসেরা এই অলরাউন্ডার।
মিথুন বিদায় নেন ২১ বলে ২১ করে। খানিক বাদে ৮০ বলে ৮ চারে ৭৮ রান করে ডিপ পয়েন্ট ক্যাচ দেন মুশফিক।
বাকি সময়টা ছিল মাহমুদউল্লাহ শো। ষষ্ঠ উইকেটে মোসাদ্দেক হোসেনকে নিয়ে ৬৬ রানের জুটির পর শেষ ওভারে মিরাজকে নিয়ে ১৪ রান যোগ করেন মাহমুদউল্লাহ। ২০ বলে ২৬ করেন মোসাদ্দেক, ৩৩ বলে ৩ চার ও ১ ছয়ে ৪৬ রানের অপরাজিত থাকেন মাহমুদউল্লাহ। বাংলাদেশও পেয়ে যায় ৬ উইকেটে ৩৩০ রানের রেকর্ড সংগ্রহ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ : ৫০ ওভারে ৩৩০/৬ (তামিম ১৬, সৌম্য ৪২, সাকিব ৭৫, মুশফিক ৭৮, মিঠুন ২১, মাহমুদউল্লাহ ৪৬*, মোসাদ্দেক ২৬, মিরাজ ৫*; এনগিদি ৪-০-৩৪-০, রাবাদা ১০-০-৫৭-০, ফেলুকোয়ায়ো ১০-১-৫২-২, মরিস ১০-০-৭৩-২, মারক্রাম ৫-০-৩৮-০, তাহির ১০-০-৫৭-২, ডুমিনি ১-০-১০-০)।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।