Inqilab Logo

সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আফগানিস্তান দেখালো, সম্ভব

ইমরান মাহমুদ | প্রকাশের সময় : ৩ জুন, ২০১৯, ১২:০৭ এএম

উপমহাদেশের দুই পরীক্ষিত দল যা পারেনি আফগানিস্তান তা করে দেখিয়েছে। ইংল্যান্ড বিশ্বকাপে এ পর্যন্ত খেলা এশিয়ার দুই সাবেক বিশ্ব চ্যাম্পিয়নই যেখানে অলআউট হয়েছে দেড়শ’র নীচে সেখানে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন আস্ট্রেলিয়ার শক্তিশালী লাইনআপের বিরুদ্ধেও ক্রিকেটের নবীনতম সদস্য হয়েও আফগানিস্তান লড়াই করলো বুক চিতিয়ে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে পাকিস্তান যেখানে গুটিয়ে গেছে মাত্র ১০৫ রানে, নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে শ্রীলঙ্কার ব্যাটিং লাইনআপ যখন মুখথুবড়ে পড়ে মাত্র ১৩৯ রানে সেখানে ব্যাট হাতে স্টার্ক, কামিন্স, জাম্পাদের মত দাপুটে বোলিংকে ঠেকিয়ে দুইশোর্ধ (২০৭) সংগ্রহ তুলেছে যুদ্ধ বিদ্ধস্ত দেশটি। ঐ দুটি ম্যাচেই যেখানে দুই ইনিংস শেষ হয়েছে ৪০ ওভারের নীচে, সেখানে এই মামুলি লক্ষ্য তাড়াতেও ৩৪.৫ ওভার পর্যন্ত যেতে ৩টি উইকেট হারাতে হয়েছে ৫ বারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের। অবশেষে ম্যাচটি ৭ উইকেটে হারলেও, এশিয়ার বাকি সদস্যদের দেখিয়ে দিয়েছে, সম্ভব। এভাবেও লড়াই করা যায়। এই শিক্ষা নিয়ে আগামীকাল স্বাগতিক ইংল্যান্ডের বিপক্ষে কাজে লাগাতে পারে পাকিস্তান।
লক্ষ্য মাত্র ২০৮। এবারের বিশ্বকাপে আগের ম্যাচগুলো থেকে অনুপ্রেরণা নিয়ে সাত তাড়াতাড়ি ম্যাচ শেষের চেষ্টায় অস্ট্রেলিয়া। ঝড়ো উদ্বোধনী ঝুটিতে উড়ন্ত শুরু করে ৫ বারের বিশ্বচাম্পিয়নরা। অ্যারন ফিঞ্চ যেখানে ছিলেন আগ্রাসী সেখানে স্বভাববিরুদ্ধ ধীর খেলেছেন নিউল্যান্ড টেস্ট কেলেঙ্কারীর পর এই প্রথম জাতীয় দলের জার্সি গায়ে নামা ডেভিড ওয়ার্নার। সেই একই কান্ডে নির্বাসিত থাকা সাবেক অধিনায়ক স্টিভেন স্মিথকে নিয়ে করে যেতে পারেন শেষটা। তবে জয় থেকে মাত্র ৩ রান আগে মুজিব উর রহমানের বলে হজরতুল্লাহ জাজাইয়ের তুলুবন্দী হন স্মিথ। এসেই মুখোমুখি হওয়া প্রথম বলে চার মেরে দলকে জয়ের বন্দরে ভেড়ান গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। ওয়ার্নার অপরাজিত ছিলেন ৮৯ রানে। ছক্কাহীন তার ইনিংসটি ৮টি চরে সাজানো। অবধারিতভাবে ম্যাচসেরার পুরস্খারও ওঠে এই ওপেনারের হাতে।
এর মাঝে কিছুটা সাবধানী হতে গিয়েই গুলবাদিন নাইবের শিকারে পরিণত হয়েছেন ফিঞ্চ। তার আগে ৪২ বলে ফিফটি তুলে থেমেছেন ৬৬ রানে। তার ঝলমলে ইনিংসটি ৬টি চার ও ৪টি ছক্কায় মোড়ানো। পরে ওয়ার্নারও খেলেছেন হাত খুলে খেলেছেন। তুলে নিয়েছেন নিজের ১৮তম ফিফটি। ফিঞ ফিরে যাওয়ায় একটু ধীরে চলো নীতিতে এগুচ্ছিল অস্ট্রেলিয়া। সেই স্লো চলা ম্যাচে প্রাণ ফেরানোর চেষ্টা করেছিলেন রশিদ খান। দুর্দান্ত এক গুগলিতে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলেন উসমান খাজাকে (১৬)। তবে এশিয়ার নতুন এই ‘অঘটন ঘটন পটিয়সু’দের সাফল্য ঐ পর্যন্তই।
এর আগে ব্রিস্টলের কাউন্টি গ্রাউন্ডে গতকাল স্কোরবোর্ডে রান যোগ হওয়ার আগেই মোহাম্মাদ শাহজাদের স্টাম্প ছত্রভঙ্গ করে দেন মিচেল স্টার্ক। পরের ওভারে এসে আরেক ওপেনার হজরতুল্লাহ জাজাইকে উইকেটের পিছনে ক্যাচ বানান প্যাট কামিন্স। ফিফটি জুটিতে রহমত শাহ ও হাশমতউল্লাহ শহিদি যখন ধ্বস থেকে বের হওয়ার মুখে তখনই ১৯ রানের ব্যবধানে দুজনকেই তুলে নেন অ্যাডাম জাম্পা। ৭৭ রানে রান আউট হয়ে দলকে আরো খাঁদে ফেলে দেন মোহাম্মাদ নবী। এরপর আসে ষষ্ঠ উইকেটে গুলবাদিন নবী ও নাজিবুল্লাহ জদরানের ইনিংস সর্বোচ্চ ৮৩ রানের জুটি। দু’জনই মার্কাস স্টয়নিসের একই ওভারে উইকেটের পিছনে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন। ৪৯ বলে ৫১ করেন নাজিবুল্লাহ, ৩১ রান আসে অধিনায়ক গুলবাদিনের ব্যাট থেকে।
নবম উইকেটে পাল্টা আক্রমণ শুরু করেন রশিদ খান (১১ বলে ২৭) ও মুজিবুর রহমান (৬ বলে ১২)। মাত্র ১৪ বলে এই জুটির ৩৯ রানের কল্যাণে দলীয় সংগ্রহ দুইশ পেরোয়। তিন উইকেট নেন জাম্পা, ২টি করে নেন কামিন্স ও স্টয়নিস।

সংক্ষিপ্ত স্কোর
আফগানিস্তান : ২০৭/১০ (৩৮.২ ওভার) (শাহজাদ ০, জাজাই ০, রহমত ৪৩, শহিদি ১৮, নবী ৭, নাইব ৩১, নাজিবুল্লাহ ৫১, রাশিদ ২৭, দৌলত ৪, মুজিব ১৩, হামিদ ১*; কামিন্স ৪০/৩, জাম্পা ৬০/৩, স্টয়নিস ৩৭/২, স্টার্ক ৩১/১, নেইল ৩৬/০)।
অস্ট্রেলিয়া : ৩৪.৪ ওভারে ২০৫/৩ (ফিঞ্চ ৬৬, ওয়ার্নার ৮৯*, খাজা ১৫, স্মিথ ১৮, ম্যাক্সওয়েল ৪*; মুজি ৪৫/১, হামিদ ১৫/০, দৌলত ৩২/০, গুলবাদিন ৩২/১, নবি ৩২/০, রশিদ ১/৫২)।
ফল : অস্ট্রেলিয়া ৭ উইকেটে জয়ী।
ম্যাচসেরা : ডেভিড ওয়ার্নার (অস্ট্রেলিয়া)।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বিশ্বকাপ ক্রিকেট

১৬ জুলাই, ২০১৯
১৫ জুলাই, ২০১৯

আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ