Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

পঞ্চগড় এক্সপ্রেস কেমন চলছে

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৩০ মে, ২০১৯, ১২:০৬ এএম

ঢাকা-পঞ্চগড় রেলপথে যাত্রা শুরু করেছে স্বল্প বিরতিহীন ট্রেন পঞ্চগড় এক্সপ্রেস। গত ২৫ মে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ট্রেনটির উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনের দিন থেকেই ট্রেনটি ঢাকা-পঞ্চগড় রুটে যাতায়াত করছে। প্রথম দিন মাত্র শ’খানেক যাত্রী নিয়ে পঞ্চগড় থেকে ঢাকায় আসে ট্রেনটি। ঘোষণা হওয়ার পর থেকে ট্রেনটির যাত্রাবিরতির জন্য আন্দোলন করে এই রুটের কয়েকটি এলাকার বাসিন্দারা। এর মধ্যে রয়েছে, নাটোর, সান্তাহার, আক্কেলপুর, জয়পুরহাট, বিরামপুর, ফুলবাড়ী ও পীরগঞ্জ। শুধু তাই নয়, উদ্বোধনের দিন রেললাইনে অবরোধ দিয়ে ট্রেনটি থামিয়ে দেয়া হয়।

পঞ্চগড় থেকে ঢাকার দূরত প্রায় ৬শ’ কিলোমিটার। এটিই বাংলাদেশের সবচেয়ে দীর্ঘ রেলপথ। এ পথে একটা বিরতিহীন ট্রেনের দাবি ছিল মানুষের দীর্ঘদিনের। বর্তমান রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন সাধারণ মানুষের সেই দাবিকে সন্মান জানিয়ে এ ট্রেন চালু করেছেন। এতে পঞ্চগড় তথা দেশের সর্বউত্তরের যাত্রীরা মহাখুশি। কিন্তু প্রশ্ন হলো, প্রায় এক হাজার আসনের পঞ্চগড় এক্সপ্রেসে কী যাত্রী হবে? রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, গত পাঁচ দিনে ট্রেনটির যাত্রী সংখ্যার কোনো উন্নতি হয়নি। প্রতিটি আসন তো দুরের কথা মোট আসনের চার ভাগের এক ভাগও যাত্রী পায়নি ট্রেনটি। জানতে চাইলে রেলের একজন কর্মকর্তা বলেন, নতুন ট্রেনটিতে কেমন যাত্রী হচ্ছে তা ট্রাফিক বিভাগ ভালো বলতে পারবে। তবে গত পাঁচ দিনে কাঙ্খিত যাত্রী মেলেনি এটা সত্য। একজন রেল কর্মচারি জানান, গত মঙ্গলবার ঢাকা থেকে যাওয়ার সময় পার্বতীপুরে ১২/১৪জন যাত্রী নেমেছেন। তবে পঞ্চগড়ে নেমেছেন ৫০/৬০ জন। দিনাজপুরে নেমেছেন এর চেয়ে কিছু কম যাত্রী।

আবার ওই দিন পঞ্চগড় থেকে ঢাকার দিকে আসার সময় বেশিরভাগ যাত্রীই পঞ্চগড় থেকে উঠে ঠাকুরগাঁও অথবা দিনাজপুরে নেমেছেন। ওই দিন পার্বতীপুর থেকে উঠেছেন হাতেগোনা কয়েকজন যাত্রী।

রেলওয়ে সূত্র জানায়, ট্রেনটির সাথে কিছু কিছু স্থানে কানেকটিং ট্রেনের গুরুত্ব দেয়া হয়নি। বিশেষ করে পার্বতীপুরে চিলাহাটি ও রংপুরের সাথে কানেকটিং ট্রেন দিলে যাত্রী আরও বাড়তো। তবে আশ্চর্য্যরে বিষয় হলো, চিলাহাটি থেকে পার্বতীপুরের দিকে আসা তিতুমীর এক্সপ্রেস এমনিতেই এই ট্রেনের সাথে সংযোগ পেতো। এই ট্রেনটি চিলাহাটি থেকে পার্বতীপুরে আসে বিকাল ৪টায়। আর পঞ্চগড় এক্সপ্রেস পার্বতীপুর থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছাড়ে বিকাল ৩ টা ৫৫ মিনিটে। অর্থাৎ মাত্র পাঁচ মিনিটের জন্য চিলাহাটি, নীলফামারী, সৈয়দপুর, ডোমার, ডিমলার যাত্রীরা ঢাকামুখি বিরতিহীন এই ট্রেন থেকে বঞ্চিত করার হয়েছে। রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, গত কয়েকদিন ধরেই পঞ্চগড় এক্সপ্রেস পার্বতীপুর থেকে ছাড়ার সময় তিতুমীরকে আউটারে দাঁড় করিয়ে রাখা হচ্ছে। একজন কর্মকর্তা জানান, আগে তিতুমীর পার্বতীপুরে আসতো বিকাল ৩টা ২৫ মিনিটে। পঞ্চগড় এক্সপ্রেস চালু হওয়ার পর এটির সময় পিছিয়ে বিকাল চারটা করা হয়েছে। আগের সময় ঠিক থাকলেও এই ট্রেনের যাত্রীরা অনায়াসে পার্বতীপুরে নেমে পঞ্চগড় এক্সপ্রেস ধরতে পারতো। তাতে যাত্রীর সংখ্যা অনেক বাড়তো।

স্বল্প বিরতিহীন এই ট্রেনে দিনাজপুরবাসীর জন্য টিকিট সর্বমোট ৪৫ শতাংশ সংরক্ষিত। দিনাজপুর রেলওয়ে স্টেশনের জন্য ৩০ শতাংশ এবং পার্বতীপুর রেলওয়ে স্টেশনের জন্য ১৫ শতাংশ। বাকি টিকিটের মধ্যে পঞ্চগড়ের জন্য ৩০ এবং ঠাকুগাঁওয়ের জন্য ২৫ শতাংশ সংরক্ষিত। তার মানে পঞ্চগড়ের যাত্রী হতে হবে সবচেয়ে বেশি।
ট্রেনটির সাপ্তাহিক কোনো বিরতি নেই। ঢাকা থেকে এটি ছাড়ে রাত ১২টা ১০ মিনিটে। ঢাকা বিমানবন্দরে রাত ১২টা ৪২ মিনিটে, পার্বতীপুরে পৌঁছে সকাল ৭টায়, দিনাজপুরে সকাল ৭টা ৩৭ মিনিটে, ঠাকুরগাঁওয়ে সকাল ৮টা ৫৫ মিনিটে, পঞ্চগড়ে পৌঁছায় সকাল ৯টা ৪০ মিনিটে।

পঞ্চগড় থেকে ছাড়ে বেলা সোয়া ১টায়, ঠাকুরগাঁওয়ে ১টা ৫৩ মিনিটে, দিনাজপুরে ৩টা ২ মিনিটে, পার্বতীপুরে ৩টা ৫৫ মিনিটে, ঢাকা বিমানবন্দরে রাত ১০টা ৩ মিনিটে, ঢাকার কমলাপুরে পৌঁছায় রাত ১০টা ৩৫ মিনিটে।
পঞ্চগড় এক্সপ্রেসে মোট কোচসংখ্যা ১২। এর মধ্য এসি কেবিন ১টি, এসি চেয়ার ১টি, শোভন চেয়ার ৭টি, পাওয়ার কার + নামাজ ঘর + শোভন চেয়ার ১টি, গার্ড রেক + খাবার কোচ ২টি। ট্রেনটিতে মোট আসন পঞ্চগড় থেকে ৮৯৬টি ও ঢাকা থেকে ৮৭১টি।

ঢাকা থেকে পঞ্চগড় পর্যন্ত শোভন চেয়ার ৫৫০ টাকা, এসি কেবিন ১ হাজার ৯৪২ টাকা, এসি চেয়ার ১ হাজার ৫৩ টাকা। ঢাকা থেকে ঠাকুরগাঁও পর্যন্ত শোভন চেয়ার ৫২০ টাকা, এসি কেবিন ১ হাজার ৮৩৩ টাকা, এসি চেয়ার ৯৮৯ টাকা। ঢাকা থেকে দিনাজপুর পর্যন্ত শোভন চেয়ার ৪৬৫ টাকা, এসি কেবিন ১ হাজার ৬৪৯ টাকা, এসি চেয়ার ৮৯২ টাকা। ঢাকা থেকে পার্বতীপুর পর্যন্ত শোভন চেয়ার ৪৪০ টাকা, এসি কেবিন ১ হাজার ৫৬৩ টাকা, এসি চেয়ার ৮৪০ টাকা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ট্রেন


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ