নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
বিশেষ সংবাদদাতা : পেন্ডুলামের কাঁটার মতো দুলেছে বিকেএসপিতে আবাহনী-প্রাইম দোলেশ্বরের ম্যাচটি। শেষ ১২ বলে ২২Ñ আবাহনীর এই লক্ষ্যটা একপর্যায়ে কঠিনই মনে হচ্ছিল। ২৭তম ওভারের প্রথম তিন বলে প্রাইম দোলেশ্বরের পেস বোলার আল আমিন যখন ২ রান করেছেন খরচ, তখন জয়ের আবহ প্রাইম দোলেশ্বরের। কিন্তু পরের ২ বলে দৃশ্যপটে পরিবর্তনÑ মোসাদ্দেক সৈকতের পরপর ২ বাউন্ডারিতে শেষ ওভারে আবাহনীর টার্গেট ১১। এই ওভারের প্রথম তিন বলে ১ রানের বেশি নিতে পারেনি আবাহনী, উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন শাহাজাদা। শেষ তিন বলে আবাহনীর লক্ষ্যটা যখন ১০ রান, তখন জয়ের স্বপ্ন দেখেছে প্রাইম দোলেশ্বর। তবে রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে সেই ফরহাদ রেজাই শেষ ২ বলে প্রাইম দোলেশ্বরের স্বপ্ন চুরমার করে দিয়েছেন। তার ৫ম বলে মিড উইকেটের ওপর দিয়ে মোসাদ্দেক সৈকত লিস্ট ‘এ’ ক্যারিয়ারে উদযাপন করেছেন ষষ্ঠ ফিফটি (৩৪ বলে ৬ চার ২ ছক্কা), শেষ বলকে কভার দিয়ে বাউন্ডারিতে উৎসবের উপলক্ষ এনে দিয়েছেন আবাহনীর। বাউন্ডারি রোপের কাছাকাছি দাঁড়িয়ে উৎসবের অপেক্ষায় থাকা আবাহনীর সমর্থক, ক্রিকেটাররা উঁচিয়ে তুলেছেন সৈকতকে, কাঁধে নিয়ে দিয়েছে ল্যাপ অব অনার! কারণ, রোমাঞ্চকর ম্যাচে ৪ উইকেটে রুদ্ধশ্বাস জয়ের নায়ক যে মোসাদ্দেকই (৩৫ বলে ৭ চার ২ ছক্কায় নট আউট ৫৭)।
সকাল থেকে থেমে থেমে বৃষ্টিতে বিকেএসপিতে যে ম্যাচটি মাঠে গড়ানো নিয়ে ছিল শঙ্কা, সেই ম্যাচ গড়িয়েছে নির্ধারিত সময়ের ৪ ঘণ্টা পর (বেলা ১টায়)। টসে হেরে ২৮ ওভারে নেমে আসা ম্যাচে ব্যাটিংয়ে নেমে প্রথম বলেই ইনফর্ম তান্নাকে হারাতে হয়েছে দোলেশ্বরকে। স্কোরশিটে ৫৮ উঠতে নেয় ৪ উইকেট। সেখান থেকে ম্যাচে ঘুরে দাঁড়িয়েছে প্রাইম দোলেশ্বর ৫ম জুটিতে নাসির-সানজামুলের ৮২ রানে। ৫৬ বলে ৪ বাউন্ডারি, ২ ছক্কায় ৭২ রানের ইনিংসে নাসির দিয়েছেন ব্যাটিং বিনোদন। শেষ পাওয়ার প্লের ৪ ওভারে ৫১ রান যোগ করতে পেরেছে দোলেশ্বর তার ঝড়েই।
ওভারপ্রতি ৬.৮৩-এর চ্যালেঞ্জ মোটেও সহজ ছিল না আবাহনীর। স্কোরশিটে ২৫ উঠতে তামীম, লিটন দাসকে হারিয়ে ম্যাচে ফিরেছে আবাহনী শান্ত-সাকিবের ৭৪ রানের পার্টনারশিপে। আবাহনীর ডাকে সাড়া দিয়ে কলকাতা থেকে গত পরশু সন্ধ্যায় ঢাকায় ফিরে অনুশীলনের সুযোগই পাননি, টিম মিটিংয়ে অংশ নিতে এমনকি ওয়ার্ম আপও করতে পারেননি। অথচ ৭ বছর পর আবাহনীতে তার প্রত্যাবর্তনটা হয়েছে দারুণ। নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ের (৬-০-১৬-১) পাশে ৪০ বলে ৩ চার ১ ছক্কায় ৪৫ রানের ইনিংস, তরুণ শান্তকে গাইড করে ৭৪ রানের পার্টনারশিপে অবদান রেখেছেন এই বাঁ-হাতি অল রাউন্ডার। সাকিব ফিরে গেলে আবাহনীর স্পটলাইটটা ছিল ভারতীয় ক্রিকেটার রজত ভাটিয়ার ওপর। তবে আল আমিনের বলে বোল্ড আউটে ১৫ রানে তার ইনিংস শেষ হয়ে যাওয়ায় ফিনিশিংয়ের দায়িত্বটা একাই নিয়েছেন তরুণ মোসাদ্দেক সৈকত। টোয়েন্টি-২০’র উত্তাপ পাওয়া ম্যাচে বোলিংয়ে ছিলেন সবচেয়ে মিতব্যয়ী (৪-০-১২-১), ব্যাটিংয়ে সেখানে তুলেছেন ঝড়, চালিয়েছেন চাবুক। টানা তিন হারে সুপার লিগের স্বপ্ন যেখানে ধূসর হওয়ার কথা, সেখানে বিকেএসপিতে পরপর ২টি বিগ ম্যাচ জিতে সুপার লিগের সম্ভাবনা করেছে উজ্জ্বল (৯ ম্যাচে ১০ পয়েন্ট)। রোমাঞ্চকর ম্যাচে আবাহনীর কাছে হেরেও সুপার লিগের কক্ষপথে আছে প্রাইম দোলেশ্বর (৯ ম্যাচে ১২ পয়েন্ট)।
তবে এই ম্যাচে আম্পায়ার নাদির শাহ এবং রিজওয়ান পারভেজের আম্পায়ারিং নিয়ে পক্ষপাতের গন্ধ পেয়েছে প্রাইম দোলেশ্বর। ইনিংসের প্রথম বলে তান্নার কট বিহাইন্ডের আপিলে নাদির শাহর সাড়া দেয়া মানতে পারেনি এই ব্যাটসম্যান। তাসকিনের বলটি নাকি তার ব্যাটেই লাগেনি! আবাহনীর ইনিংসের শেষ ওভারের ৪র্থ বলে ডাবলসের কল দিয়ে তাসকিন রান আউট হয়েও আম্পায়ারের কৃপায় বেঁচে গেছেন বলে দাবি ক্লাবটির।
প্রাইম দোলেশ্বর-আবাহনী
(২৮ ওভারে নির্ধারিত ম্যাচ)
প্রাইম দোলেশ্বর : ১৯১/৭ (২৮.০ ওভারে), তান্না ০, রনি ১৮, রকিবুল ২৫, মানারিয়া ১, নাসির ৭২, সানজামুল ৪০, ফরহাদ রেজা ৯*, জিয়া ১৮, তাসকিন ২/৫৩, সাকিব ১/৩১, সাকলায়েন সজীব ১/১৬, মোসাদ্দেক সৈকত ১/১২।
আবাহনী : ১৯৪/৬ (২৮.০ ওভারে), তামীম ১০, লিটন ১১, নাজমুল শান্ত ৩৯, সাকিব ৪৫, রজত ভাটিয়া ১৫, মোসাদ্দেক সৈকত ৫৭*, রাজু ৬, শাহজাদা ৬, আল আমিন ২/৩৬, ফরহাদ রেজা ২/৪৫, মানারিয়া ১/৯।
ফল : আবাহনী ৪ উইকেটে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ : মোসাদ্দেক সৈকত (আবাহনী)।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।