Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কমলাপুরে জনস্রোত

অনলাইনে টিকিট কাটতে ব্যর্থ

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৫ মে, ২০১৯, ১২:০৫ এএম

ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রির তৃতীয় দিনে কমলাপুরে ছিল জনস্রোত। বঙ্গবন্ধু সেতু হয়ে যাতায়াতকারী ১৬টি ট্রেনের টিকিটের জন্য হাজার হাজার মানুষের ঢল নামে।
এদের মধ্যে বহু মানুষ আগের দিন বিকাল অথবা রাত থেকেই টিকিটের জন্য লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন। সকালে সেই লাইন স্টেশনের সীমানা ছাড়িয়ে বাইরের রাস্তায় গিয়ে ঠেকে। গতকাল শুক্রবার দেয়া হয়েছে ২ জুনের অগ্রিম টিকিট। ওই দিনের ৩৩টি আন্তঃনগর এবং চারটি বিশেষ ট্রেনসহ ৩৭টি ট্রেনের ২৮ হাজার ২২৪টি টিকেট বিক্রি হয়েছে।
এ দিনের বনলতা এক্সপ্রেসের টিকিট নিতে বৃহস্পতিবার মধ্যরাত থেকে কমলাপুর স্টেশনে লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন সাজ্জাত হোসেন নামের এক বেসরকারি চাকরিজীবী। তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে লাইনে দাঁড়িয়েছি, এখানেই সেহেরি খেয়েছি। আমার সিরিয়াল আসতে আসতে টিকিট পাব কিনা আশঙ্কায় আছি। কেননা টিকিট বিক্রি শুরুর সঙ্গে সঙ্গে জানা গেল এসির টিকিট শেষ। তিনি বলেন, আজ মনে হয় সবচেয়ে বেশি মানুষ টিকিটের জন্য লাইনে দাঁড়িয়েছে। এখানে দায়িত্বরতরা বলছেন গত দুই দিনের তুলনায় আজ উপস্থিতি অনেক বেশি।
অপরদিকে লাইনে দাঁড়িয়েও অ্যাপের মাধ্যমে রংপুর এক্সপ্রেসের টিকিট কাটার চেষ্টা করছিলেন ফিরোজ আহমেদ। তিনি বলেন, ঈদের অগ্রিম টিকিট ছাড়ার পর প্রতিদিনই রেলসেবা অ্যাপে টিকিট সংগ্রহের চেষ্টা করেছি। কিন্তু না পেয়ে আজ ভোরে বাধ্য হয়ে লাইনে দাঁড়িয়েছি। এর ফাঁকে অ্যাপেও চেষ্টা করছি। কিন্তু অ্যাপ শুধু ঘোরে আর ঘোরে, কোনো কাজ হয় না। মহিলা কাউন্টারের সামনে লাইনে দাঁড়ানো কানিজ আফরিন বলেন, রংপুর এক্সপ্রেসের টিকিটের জন্য দাঁড়িয়েছি। পেছনে অবস্থান হলেও আশা করছি টিকিট পাবো। কারণ এবার ভিআইপিদের আবদার বাতিল করায় আগের তুলনায় বেশি টিকিট পাওয়া যাচ্ছে।
যাত্রীদের ভোগান্তি এড়াতে এবারই প্রথম কমলাপুরের বাইরেও টিকেট বিক্রির ব্যবস্থা রেখেছে রেলওয়ে। কমলাপুর স্টেশন থেকে বিক্রি হচ্ছে বঙ্গবন্ধু সেতু হয়ে যাতায়াতকারী উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলের টিকিট। বিমান বন্দর স্টেশন থেকে চট্টগ্রাম ও নোয়াখালীগামী ৭টি আন্তঃনগর ট্রেনের চার হাজার ৮৭৯টি টিকেট বিক্রি হচ্ছে। এরমধ্যে দুই হাজার ৫৪৮টি অনলাইনে এবং দুই হাজার ৩৩১টি টিকেট কাউন্টার থেকে বিক্রি হচ্ছে। তেজগাঁও স্টেশন থেকে জামালপুরগামী পাঁচটি ট্রেনের তিন হাজার ৪৪৪টি টিকিট বিক্রি হচ্ছে। এরমধ্যে ৬৪৪টি অনলাইনে এবং ৬১৪টি কাউন্টারে বিক্রি হচ্ছে। বনানী রেল স্টেশন থেকে মোহনগঞ্জ রুটের দুটি ট্রেনের এক হাজার ২৫৮টি টিকিট বিক্রি হচ্ছে। ৬৪৪টি টিকেট অনলাইনে বাকি ৬১৪টি টিকিট কাউন্টারে দেওয়া হচ্ছে। ফুলবাড়িয়া পুরাতন রেলভবন থেকে সিলেট ও কিশোরগঞ্জ রুটের সাতটি আন্তঃনগর ট্রেনের চার হাজার ৫৪৮টি টিকিট বিক্রি হচ্ছে। এরমধ্যে দুই হাজার ২৫১টি টিকিট অনলাইনে এবং দুই হাজার ২৯৭টি টিকিট কাউন্টারের।
তবে প্রথম ও দ্বিতীয় দিনের মতো গতকাল তৃতীয় দিনেও অনলাইনে এবং অ্যাপ থেকে টিকিট কিনতে পারছেন না বলে অভিযোগ করেছেন টিকেট প্রত্যাশীরা। এ বিষয়ে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের ম্যানেজার আমিনুল ইসলাম বলেন, অনলাইনের সমস্যা ধীরে ধীরে কেটে যাচ্ছে। অনলাইনে সমস্যা কেটে যাবে। আমাদের বিশেষজ্ঞ দল সমস্যা সমাধানে কাজ করছে। এখন লোকজন টিকিট পাচ্ছে। অন্যদিকে, বিমান বন্দর রেল স্টেশনেও অনলাইন ও অ্যাপের মাধ্যমে টিকিট নিশ্চিত করতে না পেরে যাত্রীরা ভিড় করেছেন।
টিকেটপ্রত্যাশী একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাদমান সাফি বলেন, অ্যাপসে টিকেট দেওয়া হবে বলে সেখানে বার বার ট্রাই করেছি, এতে আমার সময় নষ্ট হয়েছে। বাধ্য হয়ে সেই লম্বা লাইনেই দাঁড়াতে হয়েছে। তারপরও টিকেট পাব কি না জানি না।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ট্রেন


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ