পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
রাজধানীর বনানীর অগ্নিকবলিত এফআর টাওয়ারের নকশা অনুমোদন এবং নির্মাণ কাজের ত্রুটির জন্য গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) কর্মকর্তা-কর্মচারী, সংশ্লিষ্ট আবাসন প্রতিষ্ঠানের মালিকসহ অন্তত ৬৭ জনকে দায়ী করে এ সংক্রান্ত তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে মন্ত্রণালয়। দায়ী ব্যক্তিদের তালিকায় রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যানের নামও রয়েছেন। ভবনটির ১৮ তলা থেকে ২৩ তলা পর্যন্ত সম্পূর্ণ অবৈধ বলেও উঠে এসেছে প্রতিবেদনে প্রকাশ করা হয়েছে। প্রতিবেদনে এফআর টাওয়ারের অবৈধ অনুমোদনের সঙ্গে রাজউকের ১৩ কর্মকর্তাসহ অগ্নিকান্ড, জানমালের ক্ষতির জন্য বিভিন্ন পর্যায়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত অন্তত ৬৭ জনকে দায়ী বলে শনাক্ত করা হয়েছে।
গতকাল বুধবার সচিবালয়ে গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এ প্রতিবেদন প্রকাশ করেন। গণপূর্তমন্ত্রী বলেন, রাজধানীর বনানীর এফআর টাওয়ারে অগ্নিকান্ডের পর গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ইয়াকুব আলী পাটওয়ারীর নেতৃত্বে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। রাজউকও একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। তদন্ত কমিটি আন্তরিকতা ও নিষ্ঠা নিয়ে সর্বোচ্চ সতর্কতার সাথে তদন্ত করে রিপোর্ট দিয়েছে। আমাদের রেওয়াজ আছে তদন্ত প্রতিবেদন আলোর মুখ দেখে না। আমি অঙ্গীকার করেছিলাম সেই সনাতনী ধারণার বাইরে বেরিয়ে আসব।
তিনি বলেন, এরপর ১৮ তলা পর্যন্ত নির্মাণ প্রক্রিয়া যথাযথ ছিল, কিন্তু যে উপায়ে অনুমোদন দেয়া হয়েছে সেটা সঙ্গত ছিল না। অনুমোদন দেয়ার সময় যে আইন ছিল সেই আইনের আওতায় অনুমোদন দেয়া হয়নি, অনুমোদন দেয়া হয় আগের আইনে। এফআর টাওয়ারের ১৮ তলা থেকে ২৩ তলা পর্যন্ত সম্পূর্ণ অবৈধ বলেও উল্লেখ করেছে তদন্ত কমিটি।
শ ম রেজাউল করিম বলেন, আজ দীর্ঘসূত্রিতার আর হয়রানির অবসানে সহজীকরণের মাধ্যমে শুরু হলো দ্রুত সেবা পাওয়ার যুগান্তকারী পরিবর্তন। স্বচ্ছতা আনার ভিত্তি হিসেবে টেবিলে টেবিলে ধরনা দিয়ে অনাকাক্সিক্ষত পরিস্থিতির মুখোমুখি হওয়ার পরিবর্তে বাসায় কিংবা যে কোনো জায়গায় বসে নকশা অনুমোদনসহ ছাড়পত্র ও অন্যান্য সেবা অনলাইন নেয়া যাবে।
তদন্ত প্রতিবেদনে পর্যালোচনা ও সুপারিশ :
তদন্ত প্রতিবেদনে ৭ দফা পর্যালোচনা ও ১৫ দফা সুপারিশ দিয়েছে কমিটি। এতে ভবনের অতিরিক্ত অংশ ভেঙ্গে ফেলতে বলা হয়েছে। আর সেটা সম্ভব না হলে সিলগালা করে দেয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। ভবন নির্মাণকালে রাজউক চেয়ারম্যান, অথরাইজড অফিসার ও সহকারী অথরাইজড অফিসারের বিরুদ্ধে প্রচলিত আইন অনুযায়ী মামলা দায়ের করার নির্দেশনা রয়েছে।
তদন্ত রিপোর্টে বলা হয়েছে, ২৩ তলা বিশিষ্ট এফআর টাওয়ারের নকশাটি সংঘবদ্ধ চক্র অবৈধভাবে জালিয়াতির মাধ্যমে বানিয়েছে। এর দায় তৎকালীন রাজউক চেয়ারম্যান কোনোভাবেই এড়াতে পারেন না। সে সময়ের রাজউক চেয়ারম্যান হুমায়ূন খাদেম, অথরাইজড অফিসার সৈয়দ মকবুল আহম্মেদ, অথরাইজড অফিসার নাজমুল হুদা, সহকারী অথরাইজড অফিসার বশির উদ্দিন খানের বিরুদ্ধে প্রচলিত আইনে মামলা দায়ের করার সুপারিশ রয়েছে এই প্রতিবেদনে।
রাজউক থেকে বহুতল ভবনের অনিয়ম চিহ্নিত করার জন্য ২৪টি পরিদর্শন টিম গঠন করা হয়েছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, আমরা সব বিল্ডিং পরিদর্শন করব। প্রাথমিকভাবে বহুতল ভবন পরিদর্শন করা হয়েছে। বহুতল ভবনের ভেতরে এ পর্যন্ত রাজউক অনুমোদিত নকশা আছে এমন ভবন পাওয়া গেছে ১১৩৬টি, রাজউক ছাড়া অন্যান্য সংস্থা অনুমোদিত নকশা আছে এমন ভবন রয়েছে ২০৭টি, ভবন মালিকগণ রাজউক অনুমোদিত নকশা প্রদর্শনে ব্যর্থ হয়েছেন এমন ভবনের সংখ্যা ৪৩১টি এবং সরকারি ভবনের নকশা প্রদর্শন করা হয়নি এমন ভবন ৪৪টি। নির্দিষ্ট সময়ে নকশা প্রদর্শনে ব্যর্থ ভবনের বিরুদ্ধে আইনানুগ প্রক্রিয়ায় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ব্যত্যয়কৃত ভবনের অনিয়মকৃত অংশ ভেঙ্গে ফেলার জন্য আমরা নির্দেশ দেব। ভেঙ্গে না ফেললে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
গত ২৮ মার্চ এফআর টাওয়ারে ভয়াবহ অগ্নিকান্ড ঘটে। এতে ভবনটির কয়েকটি ফ্লোর পুড়ে ছাই হয়ে যায়। ভবন থেকে লাফিয়ে পড়ে এবং আগুনে পুড়ে নিহত হন অন্তত ২৬ জন। এছাড়া শতাধিক ব্যক্তি আহত হন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।