Inqilab Logo

রোববার, ২৩ জুন ২০২৪, ০৯ আষাঢ় ১৪৩১, ১৬ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

ঐকমত্যে পৌঁছতেও দুই পক্ষ রাজি নয়

চীন-আমেরিকা বাণিজ্য

দি ইকনোমিস্ট | প্রকাশের সময় : ১৯ মে, ২০১৯, ১২:০৪ এএম

আংশিকভাবে ওভাল অফিস দখলকারী পরিবর্তনের দ্বারা এটা ব্যাখ্যা করা হয়েছে। প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাও চীনা বাণিজ্য প্রতারণার নিন্দা করেছিলেন এবং বাণিজ্যিক গোপনীয়তা চুরি বন্ধের জন্য চীনকে চাপ দিয়েছিলেন। চীন যখন দক্ষিণ চীন সাগরে বিতর্কিত দ্বীপগুলোকে সামরিক ঘাঁটিতে পরিণত করে তখন বিলম্বে হলেও তার পেন্টাগণ প্রধানরা সতর্ক হন।
তবে শেষ পর্যন্ত ওবামা বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ সমূহ ও জলবায়ু পরিবর্তন থেকে মহামারী থেকে পারমাণবিক বিস্তার প্রভৃতিতে বেশি মনোযোগ দেন যেগুলোতে তার চীনা সাহায্য দরকার ছিল। কঠোর হওয়ার নীতিটি অবিশ্রান্ত ভাবে আলোচিত হয়েছিল, তারপর বাদ দেয়া হয়। বিপরীত দিকে ট্রাম্প বড়াই করে বলেছেন, বিশ্ব সমস্যা তার বিষয় নয়। আমেরিকা আংশিকভাবে অনেক বেশি মুখোমুখি হয়ে পড়েছে। কারণ বহুজাতিক ব্যবসা যা বাণিজ্যে প্রতিবন্ধকতার বিরোধী, জনবহুল সময়ে এসে গৌণ হয়ে পড়েছে। সংবেদনশীল প্রযুক্তির ক্ষেত্রে এক নতুন দফা রফতানি নিয়ন্ত্রণ এবং এখনো-কঠোর বিনিয়োগ-বাছাই আইন আসন্ন। ট্রাম্পের বাণিজ্য যুদ্ধে একটি বিরতিতে এ প্রক্রিয়া শেষ হবে না। আমেরিকা বিশ্বে তার উন্মুক্ততা বিষয়ে যা ভাবে সে পথে পরিবর্তনের কারণ হিসেবে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট অনেকটা উপসর্গ। ভোটাররা একজন বলিষ্ঠ- ন্যায়ানুসারী নেতা নির্বাচন করেন। যিনি আইনের শাসন ও মূল্যবোধের ব্যাপারে কঠোর এবং যিনি বিশ্বাস করেন যে জাতীয় স্বার্থ সবকিছুর আগে।
গুপ্তচরগিরি আতঙ্কের মধ্যে চীনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ছাত্রদের ভিসা আইন কঠোর করা হয়। এফবিআই এজেন্টরা চীনা রাষ্ট্র-সমর্থিত থিংকট্যাাংকগুলোর সফররত পন্ডিতদের রাষ্ট্রের সাথে তাদের সম্পর্ক বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেন এবং কয়েকজনের ভিসা বাতিল করেন। চীন অধিকতর পশ্চিমা হওয়ার বদলে আমেরিকা বেশি করে চীনা হচ্ছে।
এদিকে বেইজিংয়ের কর্মকর্তারা অবনতির শিকার একটি পরাশক্তিকে দেখছেন যা তাদেরকে দাবিয়ে রাখতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। তারা এ ধারণাকে ব্যঙ্গ করেন যে ধনী, নষ্ট আমেরিকা আসলেই নিজেকে হুমকিগ্রস্ত বলে মনে করে। টাকা বানানোর জন্য তারা আমেরিকার প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য ভালো শর্ত আদায়ের কৌশল করছে।
আর এ কারণে ওয়াশিংটনে আসলে কি সংখ্যায় লোক চীনা হুমকিকে প্রকৃত বলে বিশ্বাস করে এবং লাভের চেয়ে বা মুক্ত বাজার শুদ্ধতার চেয়েও তা গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করে তা জানা চাপা পড়ে গেছে। বস্তুত কর্মকর্তারা প্রতিষ্ঠানগুলোকে অভিযুক্ত করেছেন এ বলে যে চীনা গুপ্তচররা যখন ইন্টেলেকচুয়াল প্রপার্টি চুরি করে তখন চীনের বাজারে তাদের মুখ দেখাতে ও প্রবেশাধিকার পেতে তারা চুপ করেছিলেন।
একজন উর্ধতন আমেরিকান কর্মকর্তা বলেন, চীন সুস্পষ্টভাবে মিথ্যা বলেছে। ২০১৫ সালে তারা অঙ্গীকার করেছিল যে রাষ্ট্র সমর্থিত অভিনেতারা বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে আমেরিকায় গুপ্তচরগিরি বন্ধ করবে। কর্মকর্তা আক্ষেপ করে বলেন যে ওয়াশিংটনের উন্মাদনাগ্রস্ত সংবাদপত্র বলয়ের খুব কমই ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে বিচার বিভাগের এক অভিযোগ লক্ষ্য করেছিল।
ওই অভিযোগে বলা হয়েছিল যে চীনের রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা মন্ত্রণালয় এপিটি১০ হ্যাকিং গ্রুপের দীর্ঘকালীন তৎপরতার সাথে সম্পর্কিত। তারা বিমান চলাচল, মহাকাশ, ফার্মাসিউটিক্যালস, তেল ও গ্যাস, নৌচলাচল প্রতিষ্ঠান থেকে গোপন তথ্য ও অন্যান্য প্রযুক্তি চুরি করছে। তিনি বলেন, তারা মূলত বিশ্বের শত শত বৃহৎ কোম্পানিগুলোর মূল্যবান রত্মগুলো পেয়ে গেছে।
সোভিয়েত ইউনিয়নের সাথে চুক্তি তাকে বিশ্ব হুমকিতে পরিণত করেছিল। চীনের সাথে তা নেই। চীনের উত্থান ভবিষ্যত যুদ্ধের ব্যাপারে পেন্টাগনের বিতর্কে প্রাধান্য বিস্তার করেছে। ১৯৮০ সাল থেকে আমেরিকা ‘অগ্রবর্তী উপস্থিতি’ তত্ত্ব অনুসরণ করছে। এর অর্থ তার সেনারা শত্রু প্রতিরক্ষার কাছে গিয়ে তৎপরতা চালাতে আত্মবিশ্বাসী।
এখন চীনের ক্রমবর্ধমান শক্তি পেন্টাগনের পরিকল্পনাবিদদের কঠিনতম সিদ্ধান্ত নেয়ার দিকে ঠেলে দিয়েছে যে পশ্চিম প্যাসিফিকে যুদ্ধের নতুন পন্থা খুঁজতে হবে নাকি পিছিয়ে এসে শত্রুকে দূর থেকে যুদ্ধ করতে বাধ্য করবে।
চীনা বিশেষজ্ঞ কার্ল এইকেনবেরি সেনাবাহিনীতে লে. জেনারেল ছিলেন। পরে তিনি আফগানিস্তানে মার্কিন রাষ্ট্রদূত হন। এখন স্টানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে আছেন। তিনি সার্বিক আমেরিকান শ্রেষ্ঠত্ব লক্ষ্য নিয়ে কমান্ডারদের লড়াইয়ের কথা বর্ণনা করেন- দক্ষিণ চীন সাগর নিয়ন্ত্রণে পিএলএ’র জোরদার উদ্যোগ কিভাবে মোকাবেলা করা হবে তা নিয়ে আমেরিকার সশস্ত্র বাহিনীর মধ্যে জোর বিতর্ক আছে।
এই রিপোর্ট এক পরাশক্তি প্রতিযোগিতায় প্রযুক্তিগত, সামরিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক দিক কিভাবে ব্যবস্থাপনা হবে সে ব্যাপারে ওয়াশিংটন ও বেইজিং-এর মধ্যকার বিরোধী মতের প্রতি দৃষ্টি দেবে। এটা এত নতুন যে সফল সম্পর্ক কি রকম হবে সে বিষয়টিতে ঐকমত্যে পৌঁছতেও দুই পক্ষ রাজি নয়। অবশ্যই পথ খুঁজে বের করতে হবে। সামরিক চ্যালেঞ্জ বিষয়ে এইকেনবেরির উপসংহার সকলের জন্য প্রযোজ্য- ‘একটি নয়া মতবাদ প্রয়োজন।’ (শেষ)



 

Show all comments
  • Najim Uddin ১৯ মে, ২০১৯, ১:৪৬ এএম says : 0
    আমরা দেখতে চাই ওদের মধ্যে একটা মারাত্মক আকার এর যুদ্ধ ।দুটো দেশ যুদ্ধের আগুনে যেনো শেষ হয়ে যায়।
    Total Reply(0) Reply
  • Robel Hossain ১৯ মে, ২০১৯, ১:৪৬ এএম says : 0
    আমেরিকা সাথে চিনের একটা বড় ধরনের যুদধ দেখতে চাই, দেখি কে জিতে কে হারে
    Total Reply(0) Reply
  • Abdur Razzak ১৯ মে, ২০১৯, ১:৪৭ এএম says : 0
    চীন অহংকারি রাষ্ট্র। যুদ্ব না করাই উত্তম। জয় বাংলা
    Total Reply(0) Reply
  • Md Jonaed ১৯ মে, ২০১৯, ১:৪৭ এএম says : 0
    তবে হ্যা যাই হোক এবার যে আর কোনো থামাথামি নাই তা নিশ্চিত
    Total Reply(0) Reply
  • Robi Robi Robi ১৯ মে, ২০১৯, ১:৪৭ এএম says : 0
    চীনের অদিপত্য মোটেও পৃথিবীর জন্য ভালো হবে না কারণ তারা র্ববর জাতি
    Total Reply(0) Reply
  • মনিরুল ইসলাম ১৯ মে, ২০১৯, ১১:০২ এএম says : 0
    রাজি হওয়া কথাও না
    Total Reply(0) Reply
  • সাদ্দাম ১৯ মে, ২০১৯, ১১:০৩ এএম says : 0
    ঐকমত্যে না পৌঁছলেও কারও কোন সমস্যা হবে না।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: চীন-আমেরিকা
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ