মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ইনকিলাব ডেস্ক : মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জাপানের পারমাণবিক বোমা বিধ্বস্ত হিরোশিমা শহরে পৌঁছেছেন। গতকাল শুক্রবার হিরোশিমা থেকে ২৬ মাইল দূরে ইয়াকুনি নৌ বিমান ঘাঁটিতে একটি সামরিক বিমানে করে তিনি অবতরণ করেন। এ সফরের মধ্যদিয়ে তিনি গুরুত্বপূর্ণ মিত্র জাপানের সঙ্গে সম্পর্ক আরও দৃঢ় এবং পারমাণবিক অস্ত্রের ভয়াবহতা সম্পর্কে বিশ্বকে অবহিত করতে চান।
১৯৪৫ সালের ৬ আগস্ট যুক্তরাষ্ট্রের আণবিক বোমা হামলার পর এই প্রথম কোনো ক্ষমতাসীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিরোশিমা সফর করছেন। আণবিক বোমা হামলার সাত দশক পরও এখনো সেখানকার মানুষ সেই বিভিষিকাময় পরিস্থিতির কথা ভুলতে পারেনি। চীন ও দক্ষিণ কোরিয়ার নেতৃবৃন্দ বলেছেন, ওবামার এই সফরে জাপানীরা তার কাছে যুদ্ধকালীন আগ্রাসনের জন্য ক্ষমা দাবী করতে পারেন।
উত্তর কোরিয়ার অব্যাহত পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি প্রকল্পের ব্যাপারে ওবামা সিদ্ধান্ত নেন, তিনি এ বিষয়ে বিশ্বকে জানাবেন, কেন উত্তর কোরিয়াকে অবশ্যই পারমাণবিক কর্মসূচি দ্রæত বন্ধ করতে হবে। তাদের এই কর্মসূচি অন্যান্য দেশকে মর্মাহত করছে।
জাপানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন এনএইচকে’কে কয়েকদিন আগে এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে জাপানের ক্ষমা চাওয়ার বিষয়টি নাকচ করে দিয়ে ওবামা বলেছেন, যেকোন যুদ্ধের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত সেই সময়ের নেতারা নিয়ে থাকেন, আর তাদের স্বীকৃতি দেয়া আমাদের দায়িত্বও বটে। আর আমার হিরোশিমার সফর মূলত অতীতে ফিরে যাওয়া নয়। ইতিহাসবিদদেরও চাওয়া ছিল হিরোশিমায় যাওয়ার। গত সাড়ে সাত বছর ধরে একজন নেতা হওয়ার পরও এই ধরনের সিদ্ধান্ত নিতে আমার অনেক সময় লেগেছে। ওবামার এই কথায় হিরোশিমাবাসীর পাশাপাশি ওবামার নিজ দেশের একদল ইতিহাসবিদ, চলচ্চিত্র পরিচালক, বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে বোমা হামলায় আক্রান্তরা বলেছেন, ক্ষমা নয়, বিশ্বে আর কোনও হিরোশিমা-নাগাসাকি তারা দেখতে চান না। তারা বলেন, আমরা আর কালো বৃষ্টি চাই না, এবার নীল আকাশের সবুজ বিশ্ব দেখার সাহস যোগাতে চাই। পারমাণবিক অস্ত্রবিহীন বিশ্ব গড়ার আশ্বাসের বাস্তবায়ন চাই। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জাপানের হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে পারমাণবিক বোমা হামলার জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে ক্ষমা চাওয়ার দাবি উঠলেও এ পর্যন্ত কোন মার্কিন প্রেসিডেন্টই তাতে কর্ণপাত করেননি।
জাপানে জি-সেভেন সম্মেলনে যোগ দিতে আসা মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা হিরোশিমা সফরে যান। জাপানীদেও দাবী মতো ক্ষমা চাইবেন না বলে তিনি আগেই জানিয়েছেন। এদিকে, এই ক্ষমা কোন সমাধান হতে পারে না উল্লেখ করে পারমাণবিক বোমায় আক্রান্ত শসো মুনেতো বলেন, হিরোশিমাকে মনে রাখা নয়, আমরা চাই হিরোশিমার মতো আর কোন শহর যাতে দ্বিতীয়বারের মতো আক্রান্ত না হয়। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে ক্ষমা প্রার্থনা নয়, আর কখনও যুদ্ধে এ ধরনের ধ্বংসলীলা দেখতে চাই না।
১৯৪৫ সালের ৬ আগস্ট সকাল ৮টা ১৫ মিনিটে এনোলা গে নামে একটি বি-২৯ বোমারু বিমান লিটল বয় নামের পারমাণবিক বোমাটি নিক্ষেপ করে হিরোশিমা শহরের ঠিক কেন্দ্রে। বিস্ফোরণের পর কেন্দ্রের তাপমাত্রা ছিল ১০০০ ডিগ্রি ফারেনহাইট। শহরের ৪ বর্গমাইল এলাকা মুহূর্তেই ভস্মীভ‚ত হয়ে মাটিতে মিশে যায়।
১৯৩৯ সালের আগে ব্রিটেন, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, স্পেন, বেলজিয়াম, জাপান উপনিবেশ বিস্তার করেছিল। এরই প্রেক্ষিতে শুরু হওয়া দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ব্যাপক প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। এই অপবাদ আর গøানি মুছতে গত বছর ৬ অগাস্ট হিরোশিমার সত্তর বছর পূর্তি উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জাপানের ভ‚মিকার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেন। এর কয়েক মাস পর গত অক্টোবরে দক্ষিণ কোরিয়ার তৎকালীন জাপানি সেনাদের জন্য যৌনদাসীদের ক্ষতিপূরণের জন্য ১শ’ মিলিয়ন ডলার দেয়ার ঘোষণাও আসে। জাপান ক্ষমা চাইলেও এককালের শত্রæ বর্তমানে মিত্র রাষ্ট্রে পরিণত হওয়া যুক্তরাষ্ট্রের ভ‚মিকার জন্য ক্ষমা চাওয়া দাবিটিও দীর্ঘদিনের। এনএইচকে, রয়টার্স।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।