পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
মাহে রমজানকে ঘিরে বন্দরনগরী চট্টগ্রামে ভেজালের কারবার বেড়েছে। চলছে ভেজাল পণ্যের রমরমা বাণিজ্য। ভোগ্যপণ্য থেকে শুরু করে মাছ, মসলায়ও ভেজাল মেশানো হচ্ছে। সবকিছুতেই ভেজাল ফলে আসল-নকল চেনা দায় হয়ে পড়েছে ভোক্তাদের জন্য। হুমকির মুখে পড়েছে জনস্বাস্থ্য। মাঝেমধ্যে ভেজাল বিরোধী অভিযান পরিচালনা হলেও তাতে ভেজালকারীদের লাগাম টেনে ধরা যাচ্ছে না।
খাওয়ার অযোগ্য খেজুর চটকদার প্যাকেটে বাজারজাত করা হচ্ছে। পচেগলে জমাট বেধে যাওয়া খেজুর তাজা করতে তেল মেশানোর ঘটনাও ঘটছে। নগরীর অলিগলি এমনকি অভিজাত বসতবাড়িতেও তৈরি হচ্ছে পাবনার ‘বাঘা বাড়ি ঘি’। ডালডার সাথে সেন্ট আর হরেক রঙ মিশিয়ে তৈরি এসব ঘি মোড়ক ও বোতলজাত করে বাজারে বিক্রি হচ্ছে। সম্প্রতি নগরীর মোমিন রোডের একটি বাসা থেকে এমন ভেজাল ঘিয়ের কারখানা আবিষ্কার করে কোতোয়ালী থানা পুলিশ।
চট্টগ্রাম মহানগরী ও আশপাশের এলাকায় ভেজাল ঘিয়ের বড় রকমের সরবরাহ আসে হাটহাজারী থেকে। হাটহাজারীর ইউএনও রুহুল আমিনের নেতৃত্বে পরিচালিত অভিযানে ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি ভেজাল ঘিয়ের কারখানা ধ্বংস করা হয়েছে। গতকালও হাটহাজারী বিভিন্ন দোকান থেকে ভেজাল ঘিয়ের কৌটা জব্দ করে ধ্বংস করে ভ্রাম্যমান আদালত। গতকালের অভিযানে গুড়োঁ মরিচে পাওয়া যায় ইটের গুঁড়ো। এ সময় বিপুল পরিমাণ গুঁড়ো মরিচ ধ্বংস করে ইউএনও।
মঙ্গলবার হাটহাজারী বাসস্ট্যান্ড এলাকায় পচাব খেজুরে সরিষার তেল মিশিয়ে ঝকঝকে করে প্যাকেটিং করার সময় দুই বিক্রেতাকে হাতেনাতে ধরেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভ‚মি) সম্রাট খীসা এ অভিযানে নেতৃত্ব দেন। এ সময় পচা খেজুরে সরিষার তেল মিশিয়ে ঝকঝকে করে প্যাকেটিং করার সময় দুই বিক্রেতাকে হাতেনাতে ধরা হয়। অভিযানে প্রায় ২৫ কেজি পচা খেজুর জব্দ করে নষ্ট করা হয়। পাশাপাশি দুই খেজুর বিক্রেতাকে আর্থিক জরিমানা করা হয়।
নগরীতে ব্র্যান্ডের ভোগ্যপণ্যের প্যাকেটের রঙ, ডিজাইন সাদৃশ্য রেখে নাম পরিবর্তন করে রমরমা বাণিজ্য চালিয়ে আসছে একটি সংঘবদ্ধ চক্র। গত ২ মে নগরীর রাজখালী রোডের দুইটি ভবনে এ ধরনের নকল পণ্যের কারখানা আবিষ্কার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। রমজান শুরুর আগে থেকেই ওই দুটি ভবনের বিশাল অংশ জুড়ে বানানো হয়েছে কারখানা। গোয়েন্দা পুলিশ হানা দেয়ার পর দেখতে পান ৮-১০ জনের তরুণ কর্মচারী সফট ড্রিংকস পাউডার প্যাকেটজাত করছিল। এছাড়া কারখানাটিতে সিয়াম ব্র্যান্ডের নকল চা-পাতা, টেস্টিং সল্ট তৈরী হচ্ছিল। এ কারখানা থেকে তৈরী পণ্যগুলো বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হয়।
ইফতার সামগ্রী থেকে শুরু করে বেকারী সামগ্রীতেও ভেজাল মেশানো হচ্ছে। হোটেল-রেস্তোঁরায় পচা-বাসি খাবার বিক্রি হচ্ছে। কেমিক্যাল মিশিয়ে ফল পাকানো, তাজা দেখানোর জন্য মাছে রঙ মেশানোর ঘটনাও ঘটছে। চিংড়ি মাছের ওজন বাড়াতে পুশ করা হচ্ছে জেলি। ঈদকে সামনে রেখে যত্রতত্র গড়ে উঠে সেমাই ও নুডুলস কারখানা। মসলার সাথেও ভেজাল মেশানো হয়। বিশেষ করে গুঁড়ো হলুদ, মরিচে ভেজালের মাত্রা থাকে বেশি। মিনারেল ওয়াটারের নামে ওয়াসার পানি বোতলজাত করে বিক্রি হচ্ছে। বিভিন্ন সময়ে নগরীর কয়েকটি এলাকায় অভিযান চালিয়ে ভেজাল ড্রিংকিং ওয়াটার কারখানা বন্ধ করে দেয় ভ্রম্যামান আদালত। তবে এখনও ভেজাল পানির ব্যবসা বন্ধ হয়নি।
এদিকে পথে-ঘাটে, খোলাবাজারে ক্ষতিকারক রঙ মেশানো শরবতসহ নানা পণ্য বিক্রি করছে ক্ষুদে ব্যবসায়ীরা। এছাড়া বিভিন্ন ভ্যানে সাজিয়ে নানা পণ্য বিক্রি করছে হকাররা। খোলাবাজারে বাসি ও পোড়া তেল দিয়ে তৈরি ছোলা, পেঁয়াজু খেয়ে পথচারী ও গরীব রোজাদার মানুষেরা অসুস্থ হয়ে পড়ছে। ভোগ্যপণ্যে ভেজাল আবার হোটেল-রেস্তোঁরার খাবারেও ভেজাল। এসব খাবার খেয়ে নানা রোগে ভুগছে সাধারণ মানুষ।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. আবদুস সাত্তার বলেন, এসব গুণগতমানবিহীন খাবার খেয়ে আমাশয়, ডায়রিয়া, পেট ব্যথা, বমি হতে পারে। দীর্ঘদিন ধরে এসব ভেজাল খাদ্য খাওয়ার পর লিভার ও কিডনি সমস্যার পাশাপাশি ক্যান্সারের ঝুঁকিও রয়েছে। যত্রতত্র খোলা খাবার বিক্রি বন্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণসহ সিটি কর্পোরেশনের তদারকি জরুরি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।