Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

হচ্ছে না বিএসএল!

প্রকাশের সময় : ২৭ মে, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্পোর্টস রিপোর্টার : অনেকটা ঘটা করেই বাংলাদেশে ফ্র্যাঞ্চাইজি ফুটবল লিগ আয়োজনের ঘোষণা দিয়েছিলো দেশের স্বনামধন্য শিল্প প্রতিষ্ঠান সাইফ পাওয়ারটেক। এই লিগ আয়োজনের জন্য নানা কার্যক্রমও শুরু করেছিলো তারা। কিন্তু কয়েকমাস পরেই নতুন ঘোষণা আসলো। হচ্ছে না দেশে ফ্র্যাঞ্চাইজি ফুটবল লিগ। সাময়িকভাবে স্থগিত করা বাংলাদেশ সুপার লিগের (বিএসএল) কার্যক্রম। লিগ আয়োজনে খেলার উপযোগী পর্যাপ্ত আন্তর্জাতিকমানের স্টেডিয়াম না থাকার অজুহাত দেখিয়ে স্থগিত করা হয়েছে বিএসএল। বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) এবং সরকার এখনও মাঠের নিশ্চয়তা না দিতে পারায় নাকি ফ্র্যাঞ্চাইজিভিত্তিক এই লিগটির যাবতীয় কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে। গতকাল এ তথ্য নিশ্চিত করেন বিএসএলের স্বত্বাধিকারী ও সাইফ পাওয়ারটেকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তরফদার মো. রুহুল আমিন।
বছর খানেক ভারতীয় ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট প্রতিষ্ঠান সেলিব্রেটি ম্যানেজমেন্ট গ্রæপ (সিএমজি) হঠাৎ করেই ঘোষণা দেয় ইন্ডিয়ান সুপার লিগের (আইএসএল) আদলে তারা বাংলাদেশে আয়োজন করবে ফ্র্যাঞ্চাইজি ফুটবল আসর। যার সাংগঠনিক কমিটির চেয়ারম্যান করা হবে আর্জেন্টিনা ফুটবল যাদুকর ডিয়াগো ম্যারাডোনাকে। মিডিয়ার শিরোনাম হয়েও আলাপ-আলোচনার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে সিএমজি’র ফ্র্যাঞ্চাইজি ফুটবল আয়োজনের পরিকল্পনা। কয়েকমাস পর অনেকটা হারিয়েই যায় তারা। এরপর এগিয়ে আসে যুক্তরাষ্ট্রের সকার ইউকে নামের একটি প্রতিষ্ঠান। তারাও চায় বাংলাদেশে ফ্র্যাঞ্চাইজি ফুটবল আয়োজন করতে। এনিয়ে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) সভাপতির সঙ্গে কয়েক দফা আলোচনাও করে তারা। কিন্তু পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সকার ইউকেও ব্যর্থ হয়। ফলে ভেস্তে যায় বাংলাদেশে ফ্র্যাঞ্চাইজি ফুটবল আয়োজনের পরিকল্পনা। অবশেষে এগিয়ে আসেন চট্টগ্রাম আবাহনীর ফুটবল কমিটির চেয়ারম্যান তরফদার মো. রুহুল আমিন। তিনি নিজ উদ্দ্যেগে দেশে ফ্র্যাঞ্চাইজিভিত্তিক লিগ আয়োজনের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে কাজ শুরু করেন। তার মালিকানাধীন শিল্প প্রতিষ্ঠান সাইফ পাওয়ারটেকের ব্যানারে বাফুফের কাছ থেকে কিনে নেন বিএসএলের স্বত্ব। এরপরই চলে এই লিগ আয়েজনের তোড়জোর।
বাফুফের তিনবারের সভাপতি কাজী সালাউদ্দিনের এবারের নির্বাচনী ইশতেহারে অন্যতম এজেন্ডা ছিল বিএসএল মাঠে গড়ানো। আশ্চর্যজনক হলেও সত্যি যে, নির্বাচনের এক মাস না পেরুতেই আন্তর্জাতিকমানের ভেন্যু না থাকার অজুহাতে সাময়িকভাবে স্থগিত হয়ে গেলো এ আসর। এ প্রসঙ্গে তরফদার রুহুল আমিন বলেন, ‘সমঝোতা চুক্তির প্রায় পাঁচ মাস পার হলেও, এখনও মাঠের ব্যবস্থা হয়নি। আন্তর্জাতিক মানের মাঠ প্রস্তুত না হওয়ায় আপাতত টুর্নামেন্টের কার্যক্রম সাময়িক স্থগিত করা হয়েছে। এই লিগ আয়োজনে অন্তত ৬টি আন্তর্জাতিকমানের স্টেডিয়াম নির্মান প্রয়োজন। তা না হলে স্থগিত থাকবে এ আসর। তবে সরকার ও বাফুফের নিশ্চয়তা পেলে আমরা আবারও শুরু করবো এর কার্যক্রম।’ তিনি আরো বলেন, ‘আমরা আসলে এটা বন্ধ করিনি। সাময়িক স্থগিত করেছি বিএসএলের কার্যক্রম। তাছাড়া লিগকে ঘিরে যতটুকু কাজ এগিয়েছে, আপাতত ততটুকুই থাকবে। মাঠগুলো সংস্কারের পর পূর্ণ উদ্যোমে কাজ শুরু হবে। মন্ত্রণালয়ের কাছে আমাদের দাবী ছিল, মাঠ পরিপূর্ণভাবে আন্তর্জাতিক মানের হলে আমরা কাজ শুরু করবো।’
সাইফ পাওয়ারটেক দেশে প্রথমবারের মতো ফ্র্যাঞ্চাইজি ফুটবল লিগ আয়োজনের জন্য ১৫ বছরের স্বত্ব কিনে নেয় বাফুফের কাছ থেকে। তারা গত জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে বাফুফের সঙ্গে এ সংক্রান্ত চুক্তি স্বাক্ষর করে। তাদের লক্ষ্য আটটি ফ্র্যাঞ্চাইজি দল নিয়ে এ আসর মাঠে গড়াবে। বছরখানেক ধরে এই লিগ নিয়ে আলোচনা চললেও প্রধান প্রতিবন্ধকতা ছিল মাঠ। মূলত মাঠের অভাবেই লিগটি আয়োজনে অনিশ্চয়তা দেখা দেয়। তবে বাফুফে মাঠের ব্যাপারে সাইফ পাওয়ারটেককে নিশ্চয়তা দেয়ায় তারা চলতি বছরের নভেম্বরের দিকে বিএসএল আয়োজনের সম্ভাব্য দিনক্ষণ ঠিক করে। যে লক্ষ্যে ঘটা করে প্রায় তিনমাস আগে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়মে লোগো উম্মোচন করা হয় বিএসএলের।
তিনদিন আগে মাঠ সমস্যা নিরসনের জন্য যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সভা করে বাফুফে। এই সভায় রাজধানীসহ দেশের আটটি বিভাগীয় শহরের দশটি মাঠ সংস্কার করা হবে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ ও বিএসএলের জন্য-এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এর ৭২ ঘণ্টা পরেই কি কারণে বিএসএল কার্যক্রম স্থগিত ঘোষণা করা হলো তা বোধগম্য নয় দেশের ফুটবলবোদ্ধারা। শুরুতে এ বছরের শেষে আয়োজনের কথা বলা হলেও আগামীবছরের প্রথমদিকে মাঠে গড়ানোর কথা ছিলো বিএসএলের। কিন্তু অবস্থাদুষ্টে মনে হচ্ছে, আগামী দু’বছরের মধ্যেও মাঠে গড়াবে না ফ্র্যাঞ্চাইজি ফুটবল লিগ বিএসএল।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: হচ্ছে না বিএসএল!

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ