পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
পবিত্র রমজান মাসে সারাদেশে মুসলমানরা যখন সিয়াম সাধনায়, তখনই পেটের দায়ে রাজপথে নামতে বাধ্য হয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত¡ পাটকল শ্রমিকরা। বকেয়া বেতন-ভাতাসহ ৯ দফা বাস্তবায়নের দাবিতে হাজার হাজার শ্রমিকরা এ আন্দোলন করছে। কিছুদিন আগে শ্রম প্রতিমন্ত্রী শ্রমিকদের দাবি মানার আশ্বাস দিলে আন্দোলন প্রত্যাহার করে নেয় শ্রমিকরা। কিন্তু এরপরেও শ্রমিকদের দাবি বাস্তবায়ন না করায় আবারও রাস্তায় নেমে আসে অসহায় এসব হাজার হাজার শ্রমিক। এদিকে, পাটকল শ্রমিক নেতাদের বৈঠকে সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগামী ১৩ মে থেকে সারাদেশের সরকারি পাটকলে অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘট শুরু হবে। সারাদেশের পাটকলগুলোতে ধর্মঘট চলাকালে প্রতিদিন বিকেল ৪ টা থেকে সন্ধ্যা ৭ টা পর্যন্ত রাজপথ-রেলপথ অবরোধ এবং রাজপথে ইফতার করবে শ্রমিকেরা। আমাদের সংবাদদাতাদের পাঠানো তথ্যে এ প্রতিবেদন :
ঢাকা : মজুরি কমিশনের বাস্তবায়নসহ ৯ দফা দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মত গতকালও ঢাকার ডেমরায় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে পাটকল শ্রমিকরা। ভোর থেকে লতিফ বাওয়ানী ও করিম জুটমিলের শ্রমিকরা এ আন্দোলন করে। এদিকে, শ্রমিকদের সড়ক অবরোধের কারণে ডেমরা স্টাফ কোয়ার্টার ও চৌরাস্তা হয়ে আশপাশের সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। বিকাল ৫টা পর্যন্ত তাদের কর্মসূচি চলবে বলে আন্দোলনরত শ্রমিকরা ঘোষণা দেয়।
ডেমরা জোনের সহকারী কমিশনার রবিউল ইসলাম বলেন, লতিফ বাওয়ানী ও করিম জুটমিলসের প্রায় দেড় হাজার শ্রমিক গতকাল ভোরে নিজেদের কারখানার সামনে এবং ডেমরা স্টাফ কোয়ার্টার ও চৌরাস্তায় অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে। তারা সড়কে অবস্থান নেওয়ায় ডেমরা-রামপুরা সড়ক, যাত্রাবাড়ী-ডেমরা সড়ক এবং শীতলক্ষ্যা নদীর ওপর সুফিয়া কামাল সেতু দিয়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এছাড়া রামপুরা থেকে ডেমরা হয়ে সিলেট, চট্টগ্রাম ও নারায়ণগঞ্জগামী যানবাহন চলাচলও বন্ধ থাকে। এই পুলিশ কর্মকর্তা আরও বলেন, শ্রমিকরা শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান নিয়ে আন্দোলন করছে এবং বিকল্প রাস্তা দিয়ে যানবাহন চলাচল করায় বড় কোনো সমস্যা তৈরি হয়নি। তবে যেকোন পরিস্থিতি মোকাবেলায় পুলিশও সতর্ক রয়েছে। শ্রমিকদের সূত্রে জানা গেছে, ৯ দফা দাবির মধ্যে ২০১৫ সালে ঘোষিত মজুরি কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়ন, দুই মাসের বকেয়া বেতন পরিশোধ, অবসরে যাওয়া শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধের দাবিও রয়েছে। এসব দাবিতে গত মঙ্গলবারও যাত্রাবাড়ী মোড় ও ডেমরায় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখায় পাটকল শ্রমিকরা। এ সময় ডেমরা এলাকায় পুলিশের সাথে শ্রমিকদের ধাওয়া ও পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
শ্রমিকরা বলেন, গত ২৫ এপ্রিল ১০ সপ্তাহের বকেয়া বেতন পরিশোধের কথা ছিল। আর মজুরি কমিশনের বিষয়টি আগামী ১৮ মে’র মধ্যে সম্পাদন করার কথা। তবে কোনো কিছুই এখন পর্যন্ত বাস্তবায়ন হয়নি। ১৮ মে’র মধ্যে মজুরি কমিশনের বিষয়টি সমাধান না হলে রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল শ্রমিকরা অনির্দিষ্টকালের বৃহত্তর আন্দোলনে নামবে বলে তারা জানায়।
শ্রমিকদের দাবির বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে বাংলাদেশ পাটকল করপোরেশনের চেয়ারম্যান অতিরিক্ত সচিব শাহ মোহাম্মদ নাছিম বলেন, পুরনো বেতন স্কেল অনুযায়ী জুন পর্যন্ত শ্রমিকদের বেতন-ভাতা পরিশোধের জন্য সরকারের কাছে ৩৩৭ কোটি টাকা চাওয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আজ (গতকাল) দুপুরে শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে কথা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী দেশে ফিরলে টাকার বিষয়ে একটা সুরাহা হবে। ততদিন পর্যন্ত শ্রমিকরা আন্দোলন স্থগিত রাখবে বলে নেতৃবৃন্দ কথা দিয়েছেন। চেয়ারম্যানের ভাষ্য, এ মুহূর্তে সিরিয়া, অস্ট্রেলিয়া ও ঘানায় পাটপণ্য রপ্তানির জন্য মিলগুলোতে কাজ চলছে। এই অবস্থায় উৎপাদন বন্ধ থাকলে ক্ষতি হবে।
খুলনা ব্যুরো জানায়, পাটকল শ্রমিক নেতাদের ৈ বৈঠকে সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগামী ১৩ মে থেকে সারাদেশের সরকারি পাটকলে অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘট শুরু হবে। গতকাল বুধবার দুপুরে ঢাকার বাংলাদেশ পাটকল করপোরেশনের (বিজেএমসি) শ্রমিক ও কর্মচারী ইউনিয়নের (সিবিএ) কার্যালয়ে পাটকল শ্রমিক লীগ ও সিবিএ ও নন সিবিএ’র বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
খুলনা-যশোর অঞ্চলের ৯টি পাটকলের চলমান কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আলীম জুট মিলের সিবিএ সভাপতি সাইফুল ইসলাম লিটু।
শ্রমিক নেতারা জানান, খুলনা অঞ্চলের রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল শ্রমিকদের ১২ সপ্তাহের মজুরি এবং কর্মচারীদের চার মাসের বেতন বকেয়া রয়েছে। অর্ধাহারে-অনাহারে পরিবার নিয়ে তাদের দিন কাটছে। এ অবস্থায় তাদের আন্দোলনের কোনো বিকল্প নেই। পাওনা টাকা না পাওয়া পর্যন্ত তাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে বলেও জানান নেতারা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।