Inqilab Logo

শুক্রবার ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ভাঙন আতঙ্কে উপকূলের মানুষ

কালিগঞ্জ (সাতক্ষীরা) থেকে রবিউল ইসলাম | প্রকাশের সময় : ৩ মে, ২০১৯, ১:৩৬ এএম

মাত্র কয়েক দিন আগে খোলপেটুয়া নদীর বাঁধ ভেঙে বেশ কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। বাকি বেড়িবাঁধের কোথাও কোথাও মাত্র দেড় থেকে দুই হাত মাটি অবশিষ্ট রয়েছে। অবস্থা এতটাই খারাপ যে, বাঁধের অনেক জায়গা দিয়ে চুইয়ে চুইয়ে পানি প্রবেশ করছে। যে কোনো সময় জীর্ণশীর্ণ বেড়িবাঁধটি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে প্লাবিত হতে পারে বিস্তীর্ণ জনপদ। আর সেই আশঙ্কা নিয়েই চলতি দুর্যোগ মৌসুমে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন জেলার উপক‚লের লাখো মানুষ। দীর্ঘদিন সংস্কারের অভাবে উপক‚ল রক্ষা বেড়িবাঁধ জীর্ণশীর্ণ হয়ে পড়েছে। ১৫-২০ ফুট প্রস্থের বাঁধ ভাঙতে ভাঙতে মাত্র দেড়-দুই হাত অবশিষ্ট রয়েছে। সামান্য ঝড়ো বাতাস উঠলেই আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়ছেন এসব এলাকার মানুষ।
উপক‚লবাসীর অভিযোগ, ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধ সংস্কারে পানি উন্নয়ন বোর্ড কোনো উদ্যোগ নেয় না। বেড়িবাঁধ ভেঙে প্লাবিত হলেই তাদের দৌড়ঝাঁপ শুরু হয়।
খোঁজ খবর নিয়ে জানা গেছে, জেলার শ্যামনগর উপজেলার দ্বীপ ইউনিয়ন গাবুরা ও পদ্মপুকুরের নাপিতখালী, গাগড়ামারি, লেবুবুনিয়া, বন্যতলা, কামালকাটি, চাউলখোলা, চন্দ্রদ্বীপ ও পাতাখালী পয়েন্টে খোলপেটুয়া এবং কপোতাক্ষ নদীর বেড়িবাঁধে ভয়াবহ ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভাঙন আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন রমজানগর ইউনিয়নের মাদারনদীর শেখ বাড়ি মসজিদ ও চৌকিদার পাড়া এবং কালিন্দি নদীর পশ্চিম কৈখালীর মানুষ।
একইভাবে দুর্গাবাটি ও পোটাকাটলায় খোলপেটুয়া নদীর এবং দাতিনাখালীতে চুনা নদীর বেড়িবাঁধে মারাত্মক ফাটল দেখা দিয়েছে। আশাশুনির প্রতাপনগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জাকির হোসেন জানান, তার ইউনিয়নের হিজলিয়া, কোলা, শুভদদ্রকাটি, কুড়িকাউনিয়া, চাকলা, দয়ারঘাট, মনিপুর, শ্রীপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় বেড়িবাঁধ ভাঙতে ভাঙতে আর এক-দুই হাত অবশিষ্ট আছে। গত বছর বেড়িবাঁধ ভেঙে তার ইউনিয়ন অন্তত চার বার প্লাবিত হয়েছে।
বাঁধ না ভাঙলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ঘুম ভাঙে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, একবার বাঁধ ভাঙলে কোটি কোটি টাকার উন্নয়ন কর্মকান্ড তলিয়ে যায়। অবকাঠামো নাজুক হয়ে পড়ে। বাঁধ ভাঙলে সংস্কার করা হয়, ভাঙার আগে বার বার বলা সত্তে¡ও সংস্কারের কোনো উদ্যোগ নেয়া হয় না। তার ইউনিয়নের অন্তত ৩০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। শ্যামনগরের আইলা দুর্গত পদ্মপুকুর ইউনিয়নে নব নির্বাচিত উপজেলার চেয়ারম্যান এসএম আতাউর হক দোলন বলেন, তার ইউনিয়নের চারদিক কপোতাক্ষ ও খোলপেটুয়া নদী বেষ্টিত। ৭/১ নম্বর পোল্ডারের আওতায় তার ইউনিয়নেই সাড়ে তিন কিলোমিটার বেড়িবাঁধ জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। গাবুরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাকছুদুল আলম বলেন, আইলা ও সিডরে বিধ্বস্ত গাবুরার নাপিতখালী, লেবুবুনিয়া, কালিবাড়িসহ তার আশপাশের এলাকায় বেড়িবাঁধের অবস্থা ভাল না। সামান্য ঝড়ো বাতাস উঠলেই সবার খাওয়া ঘুম হারাম হয়ে যায়।
এ ব্যাপারে সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী বিএম আব্দুল মোমিন বলেন, জেলার অনেক স্থানে বেড়িবাঁধের অবস্থা খুবই নাজুক। বিষয়টি ইতোমধ্যে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে, বরাদ্দ এলেই সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ