Inqilab Logo

বুধবার, ২৬ জুন ২০২৪, ১২ আষাঢ় ১৪৩১, ১৯ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

ভাঙন আতঙ্কে রাজবাড়ীর ২০ গ্রামের মানুষ

পদ্মায় পানি বৃদ্ধি : হুমকির মুখে শহর রক্ষা বাঁধ, প্রস্তাবিত সেনানিবাস, ফেরিঘাট

গোয়ালন্দ(রাজবাড়ী) উপজেলা সংবাদদাতা : | প্রকাশের সময় : ৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৮, ১২:০৫ এএম

পদ্মায় পানি বৃদ্ধি ও ভাঙণ তীব্রতায় রাজবাড়ীর শহর রক্ষা বেড়ী বাঁধ, গোয়ালন্দ উপজেলার দেবগ্রাম ও দৌলতদিয়া ইউপি, কালুখালী উপজেলার রতনদিয়া ইউনিয়নের আওতাধীন এলাকা হুমকির মুখে পড়েছে। এতে নদীতীরবর্তি এলাকার ২০ গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ ভাঙণ আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে । মঙ্গলবার বিকালে রাজবাড়ী শহরের উপকণ্ঠে গোদার বাজার এলাকায় শহর রক্ষা বেড়ীবাঁধের ৬০মিটার অংশের ব্লক পদ্মা গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। পদ্মাতীরবর্তি রাজবাড়ীর একমাত্র বিনোদন কেন্দ্র এলাকাও ভাঙ্গতে শুরু করেছে। এ নিয়ে গত ১১দিনে নদীগর্ভে বিলীন হলো শহর রক্ষা বাঁধের ১১০মিটার অংশ। এতে আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে নদীতীরবর্তী এলাকাবাসী ও হুমকীর মধ্যে রয়েছে বহু স্থাপনা। বুধবার বিকালে গোদার বাজার এলাকায় বিনোদন কেন্দ্র ঘুরে দেখা গেছে, নদী ভাঙ্গনের তীব্রতা। এভাবে ভাঙতে থাকলে ২/৩ দিনের মাঝেই বিলীন হয়ে যাবে নদীতীরবর্তী এ বিনোদন কেন্দ্রটি।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী প্রকাশ কৃষ্ণ সরকার জানান, গত মঙ্গলবার নদী ভাঙ্গনের তীব্রতা ছিল ভয়াবহ। ব্লক দেয়া নির্মিত অংশের প্রায় ৬০ মিটার নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। অতি দ্রুত কাজ করা হবে।
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দেবগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. আতর আলী সরদার জানান, পদ্মা ভাঙ্গনে তার ইউনিয়নের ৫ শতাধিক ঘর-বাড়ী নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। জরুরী ভিত্তিতে পদক্ষেপ গ্রহণ করা না হলে আরো অনেক ঘর-বাড়ী নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে।
এদিকে দৌলতদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও গোয়ালন্দ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ নুরুল ইসলাম মন্ডল জানান, দৌলতদিয়া ফেরী ঘাটসহ তার ইউনিয়নের ৬ গ্রাম পদ্মা নদীর ভাঙ্গনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। রাজবাড়ী পানি উন্নয়ন বোর্ড ঘাট রক্ষার্থে বালু ভর্তি জিও ব্যাগ ফেলে ঘাট রক্ষার কাজ ধীর গতিতে করছে। ফলে পদ্মা নদীর পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে দৌলতদিয়া ফেরীঘাট এলাকায় নদী ভাঙ্গনের ফলে যে কোন সময় একাধিক ফেরীঘাট বিলীন হওয়ার আশংকা রয়েছে।
রাজবাড়ীর কালুখালী উপজেলার রতনদিয়া ইউনিয়নের চরাঞ্চলের কয়েক গ্রাম, উপজেলার আওতাধীন প্রস্তাবিত রাজবাড়ী সেনানিবাস এলাকা, সাদার বাজার, লস্করদিয়া ও নারায়ণপুর অঞ্চলের কয়েকশ’ বাড়ী-ঘর নদী ভাঙ্গনের কবলে বিলীন হয়েছে। বিগত দুই বছর আগে রাজবাড়ী সেনানিবাস স্থাপনের জন্য চরাঞ্চলের ১৪১০ একর জমি জেলা প্রশাসন থেকে হস্তান্তর করা হয়েছিল।
মঙ্গলবার রতনদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মেহেদী হাচিনা পারভীন নিলুফা জানান, রতনদিয়া ইউনিয়নের চরাঞ্চলে প্রায় ২০ হাজার লোকের বসবাস। এ অঞ্চলের কয়েক গ্রাম ইতিমধ্যেই নদীগর্ভে বিলীন হওয়ায় তারা অসহায় জীবন-যাপন করছে। কালুখালী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কাজী সাইফুল ইসলাম বলেন, পাংশা উপজেলার হাবাসপুরের উজান পয়েন্টে বিআইডবিøউটিসির মাধ্যমে নদীতে ড্রেজিং করে পাবনা জেলার অংশে বালু ফেলার কারণে এ ভাঙ্গনের সৃষ্টি হচ্ছে। অতিদ্রুত এ ভাঙ্গনরোধের পদক্ষেপ না নিলে কালুখালী উপজেলার ১০টি মৌজা এবং প্রস্তাবিত রাজবাড়ী সেনানিবাসের সম্পূর্ণ জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে। তিনি নদী ভাঙ্গন কবলিত মানুষের জন্য সরকারিভাবে ত্রাণ বিতরণ এবং অতিদ্রুত নদী ভাঙ্গন রোধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ