Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শিশু শিক্ষার্থীকে শারীরিক ও মানসিক শাস্তিদাতা শ্যামল কান্তির শাস্তি হতে হবে-সম্মিলিত ইসলামী গবেষণা পরিষদ

প্রকাশের সময় : ২৬ মে, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : সম্মিলিত ইসলামী গবেষণা পরিষদের সভাপতি এইচ এম এম এ সাত্তার এক বিবৃতিতে বলেছেন, আইনত নিষিদ্ধ থাকলেও শিশু শিক্ষার্থীকে শারীরিক ও মানসিক শাস্তি দেয়ায় শ্যামল কান্তিকে কঠোর শাস্তি দিতে হবে।
উল্লেখ্য, নারায়ণগঞ্জে ছাত্র রিফাতকে শিক্ষক শ্যামল কান্তি নির্মমভাবে প্রহার করেছিলেন। সহপাঠীদের মুখে ঘটনার বর্ণনায় শোনা যায়, ঘটনার দিন ছাত্র রিফাতের পেটে ও বুকে শিক্ষক শ্যামল কান্তি সজোরে ৪-৫টি ঘুষি মারেন। এতে তার দম বন্ধ হয়ে যায় এবং জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। অসুস্থ হওয়ার পর রিফাতকে হাসপাতালে নেওয়া তো দূরের কথা জোর করে শেষ পিরিয়ড পর্যন্ত ক্লাস করতে বাধ্য করেন শিক্ষক শ্যামল কান্তি। একই সাথে নিজে ডাক্তারি করে খালি পেটে প্যারাসিটামল ও গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ খাওয়ান তাকে। এতে রিফাতের পেটে ব্যথা আরো বেড়ে যায়। এ থেকে বোঝা যায়, ছাত্র রিফাতের পেটে শিক্ষক শ্যামল কান্তির আঘাত মারাত্মক শারীরিক ঝুঁকির মধ্যে ছিলো। বাংলাদেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী শিক্ষার্থীকে শারীরিক ও মানসিক আঘাত করা দ-নীয় অপরাধ। কিন্তু শ্যামল কান্তিকে সে অপরাধের শাস্তি দিতে হবে। বিবৃতিতে তিনি আরো বলেন, ২০১১ সালে ৯ আগস্ট শিক্ষা মন্ত্রণালয় এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ১১ ধরনের শারীরিক শাস্তি ও মানসিক শাস্তি নিষিদ্ধ করে। এই ১১ ধরনের মধ্যে প্রথমটি হচ্ছেÑ‘শিক্ষার্থীদের হাত-পা বা কোনো কিছু দিয়ে আঘাত বা বেত্রাঘাত।’ এছাড়া মানসিক শাস্তির ক্ষেত্রে বলা হয়েছেÑ‘শ্রেণীকক্ষে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে মা-বাবা, বংশ পরিচয়, গোত্র-বর্ণ ও ধর্ম সম্পর্কে অশালীন মন্তব্য, অশোভন অঙ্গভঙ্গি করা বা শিক্ষার্থীদের মনে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হতে পারে, এমন বিষয়গুলো মানসিক শাস্তি হিসেবে চিহ্নিত হবে।’
বিবৃতিতে তিনি আরো বলেন, নীতিমালা অনুযায়ী, কোনো শিক্ষকের বিরুদ্ধে এ ধরনের শাস্তি দেয়ার অভিযোগ উপস্থাপন এবং ওই শিক্ষক অভিযুক্ত হলে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ১৯৮৫-এর আওতায় ব্যবস্থা নেওয়া যাবে। প্রয়োজনে ফৌজদারি আইনেও এর ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাবে সংশ্লিষ্ট শিক্ষকের বিরুদ্ধে।
এসব অপরাধে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেলে, তা ১৯৭৯ সালের সরকারি কর্মচারী আচরণ বিধিমালার পরিপন্থী হবে এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে। অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ১৯৮৫-এর আওতায় অসদাচরণের অভিযোগে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া যাবে। প্রয়োজনে ফৌজদারি আইনেও ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাবে।
এছাড়া ২০০৮ সালে শিক্ষা মন্ত্রণালয় শারীরিক শাস্তি দেওয়া বন্ধ করতে এবং কার্যকর ব্যবস্থা নিতে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাদের দায়িত্ব দিয়েছে। যারা শারীরিক শাস্তি দেবেন তাদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ দ-বিধির ১৮৬০, ১৯৭৪ সালের শিশু আইন এবং ক্ষেত্রমতে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে উদ্যোগ গ্রহণেরও নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, শ্যামল কান্তিকে কান ধরে উঠ-বস করানোয় বামপন্থীরা চেঁচামেচি করলেও ছাত্র রিফাতকে শারীরিক ও মানসিক শাস্তিদাতা শ্যামল কান্তির শাস্তি হবে না কেন? আইনত নিষিদ্ধ থাকলেও একজন শিক্ষার্থীকে শাস্তি দেয়ায় প্রমাণিত হয় শ্যামল কান্তি শিক্ষক হয়েও আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়েছে। এজন্য তার কঠোর শাস্তি হওয়া উচিত। শ্যামল কান্তির বিরুদ্ধে শিশু নির্যাতন এবং ধর্মীয় কটাক্ষ অথবা ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের দায়ে দুটি পৃথক মামলা দায়ের করার জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।



 

Show all comments
  • Khurshed Alam ২৬ মে, ২০১৬, ১০:২৬ এএম says : 0
    100% Right
    Total Reply(0) Reply
  • Sumon Azim ২৬ মে, ২০১৬, ১০:২৮ এএম says : 0
    yes
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ