পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
গত আসরে হার মানা কুমিল্লার শাহজালাল শ্রেষ্ঠত্বের প্রমাণ দিয়েছেন। ঐতিহ্যবাহী আবদুল জব্বারের বলীখেলার গতকাল বৃহস্পতিবার ১১০তম আসরে গতবারের চ্যাম্পিয়ন চকরিয়ার জীবন বলীকে হারিয়েছেন। এ দুই বলী গত আসরে ফাইনালে খেলেছিলেন। শিরোপা হাতছাড়া করেছিলেন শাহজালাল। কিন্তু এবারের আসরে দর্শকদের প্রশ্ন ছিল শেষ হাসি কার। চকরিয়ার জীবন বলী নাকি অন্য কেউ ভাগ বসাবেন সেরা মুকুটে। দর্শকদের সে প্রশ্নের উত্তর মিলেছে দীর্ঘ ২৪ মিনিটের চূড়ান্ত লড়াইয়ে। এ লড়াইটি ছিল সমানে সমান। টানটান উত্তেজনা আর হাজারও দর্শকের হর্ষধ্বনি এবং করতালির মধ্যে বিজয় ছিনিয়ে নেয় শাহজালাল। হার মানেন জীবন বলী। কুমিল্লার শাহজালাল দর্শকদের প্রত্যাশা পূরণ করেছেন। এর আগে দুই সেমিফাইনালে শাহজালাল মহেশখালীর শাহাব উদ্দিনকে এবং চকরিয়ার জীবন মহেশখালীর মো. হোসেনকে হারিয়ে ফাইনালে আসে। জীবন ও হোসেনের মধ্যকার সেমিফাইনাল চলে দীর্ঘ ১০ মিনিট। এ সময় কেউ কাউকে হারাতে না পারায় ফলাফল টসের মাধ্যমে নির্ধারণ করে কমিটি। এতে জীবন ফাইনালে উন্নীত হয়। বলীখেলা পরিচালনা করেন সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও ফুটবলার আবদুল মালেক।
খেলাশেষে পুরস্কার বিতরণ করেন সিএমপি কমিশনার মো. মাহবুবর রহমান। চ্যাম্পিয়ন নগদ ২০ হাজার টাকা ও ট্রফি এবং রানার্স আপ ১৫ হাজার ও ট্রফি পান। অংশগ্রহণকারি অন্য বলীদেরও পুরস্কার দেয়া হয়। লালদীঘি মাঠের মাঝখানে তৈরি করা হয় ২০ ফুট বাই ২০ ফুট চতুর্ভুজ আকৃতির খেলার মঞ্চ। মাটি থেকে প্রায় ৫ ফুট উপরে বালি দিয়ে তৈরি করা হয় এ মঞ্চ। মঞ্চের চারিদিকে রশি দিয়ে ঘিরে দেয়া হয়েছিল। খেলা দেখতে হাজার হাজার দর্শক প্রচÐ গরম উপেক্ষা করে মাঠের চারিদিকে হাজির হয়েছিল।
মীরসরাই, হাটহাজারী, রাউজান, চন্দনাইশ, মহেশখালী, রামু, বাঁশখালী, আনোয়ারা, কুতুবদিয়া, কক্সবাজার, পটিয়া, রাঙ্গামাটি, বোয়ালখালী, সাতকানিয়া, কুমিল্লা, বরিশাল, ঢাকা, সিলেট, কিশোরগঞ্জ, পার্বত্য জেলা রাঙ্গামাটি, চকরিয়া, ফটিকছড়ি থেকে খেলতে এসেছিল বলীরা। সর্বমোট ১১১ জন বলী অংশ নিয়েছিল এবারের লড়াইয়ে। একসময় বলীখেলাকে ঘিরে বলী তৈরি হতো। এখন তেমনটা আর দেখা যায় না।
ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে চট্টগ্রামে যুব সমাজকে ঐক্যবদ্ধ ও শারীরিকভাবে সক্ষম করে তুলতে নগরীর বদরপাতি এলাকার আবদুল জব্বার সওদাগর ১৯০৯ সালে বলীখেলার সূচনা করেন। তারপর থেকে হাঁটি হাঁটি পা পা করে ঐতিহাসিক জব্বারের বলীখেলা ও বৈশাখী মেলা উপমহাদেশে বাঙালীর ইতিহাস-ঐতিহ্য, সাংস্কৃতিক ও অহংকারে পরিণত হয়েছে। কিন্তু আবদুল জব্বারের বলীখেলা ও বৈশাখী মেলা এখনও ধরে আছে তার কীর্তিময় ইতিহাস। বর্তমানে দেশের সবচেয়ে বড় লোকজ উৎসব হিসেবে এটাকে চিহ্নিত করা যায়। আবদুল জব্বারের বলীখেলাকে ঘিরে তিনদিনব্যাপী বৈশাখী মেলা চলছে। বন্দরনগরীর প্রাণকেন্দ্র লালদীঘি ময়দান ও আশপাশের কয়েক কিলোমিটার এলাকায় এখন গ্রামীণ আবহ।
হাত বাড়ালেই মেলায় পাওয়া যাবে নিত্যপ্রয়োজনীয় গৃহস্থালির পণ্য দা, বটি, ছুরি, পিঠা তৈরির পিঁড়ি, বেলচা, মাটির তৈরির কারুকার্যখচিত আকর্ষণীয় মাটির ব্যাংক, ফুলের টব, ফুলদানী, শোপিচ, শীতল পাটি, গাছের চারা, বাঁশ ও বেতের তৈরি মোড়া, শিশুদের খেলনা, বাঁশি, মুড়ি-মুড়কি, ফলমূল আর গহনা। আরো আছে চুড়ি-ফিতা, রঙিন সুতা, হাতের কাঁকন, নাকের নোলক, ঢোল, কাঠের তৈরি পুতুল, নকশী কাঁথা, খাঁচার পাখি ও মাটির কলস। সারাবছর মহানগরসহ বৃহত্তর চট্টগ্রামের মানুষ অপেক্ষার প্রহর গুনে এই মেলার জন্য। তারা বছরের গৃহস্থালি সামগ্রী মেলা থেকে সংগ্রহ করেন। আজ শুক্রবার মেলা শেষ হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।