পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
রুমু : ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে চট্টগ্রামে যুব সমাজকে ঐক্যবদ্ধ ও শারীরিকভাবে সক্ষম করে তুলতে নগরীর বদরপাতি এলাকার আবদুল জব্বার সওদাগর ১৯০৯ সালে বলীখেলার সূচনা করেন। তারপর থেকে ধীরে ধীরে জব্বারের বলীখেলা ও বৈশাখী মেলা উপমহাদেশে বাঙালীর ঐতিহ্য, সাংস্কৃতিক ও অহংকারে পরিণত হয়েছে। দেশের কিছু কিছু স্থানে বলীখেলা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকলেও কালের বিবর্তনে অধিকাংশ স্থানে তা বন্ধ হয়ে গেছে। তবে চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্থানে এখনো ক্ষুদ্র পরিসরে অনুষ্ঠিত হয়ে আসলেও ঐতিহাসিক আবদুল জব্বারের বলীখেলা ও বৈশাখী মেলা এখনো ধরে আছে তার কীর্তিময় ইতিহাস। তাই বর্তমানে দেশের সবচেয়ে বড় লোকজ উৎসব হিসেবে এটাকে চিহ্নিত করা যায়।
আগামীকাল (সোমবার) বিকেল সাড়ে ৩টায় লালদীঘি মাঠে অনুষ্ঠিত হবে ঐতিহাসিক আবদুল জব্বারের বলীখেলার ১০৭তম আসর। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন। শতবর্ষীয় এবারের বলীখেলা ও বৈশাখী মেলার স্পন্সর হচ্ছে গ্রামীণ ফোন। এবারের বলীখেলায় রামু, কুমিল্লা, নারায়ণগঞ্জ, সীতাকু-, উখিয়া, হাটহাজারী, সাতকানিয়া, মহেশখালী, চকরিয়া, বাঁশখালী, টেকনাফ, দোহাজারীসহ চট্টগ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে আসা নবীন ও প্রবীণ মিলে প্রায় ২০০ জন বলী অংশ নেবে বলে জানা গেছে। উল্লেখ্য, শতবর্ষের ঐতিহ্যবাহী আবদুল জব্বারের বলীখেলায় গতবার সেরা বলী ছিলেন কক্সবাজারের দিদার বলী।
আবদুল জব্বারের বলীখেলাকে ঘিরে ইতোমধ্যে লালদীঘির পাড় ও আশপাশ এলাকায় এসে পৌঁছেছে গৃহস্থালীর পণ্য সামগ্রী। আজ থেকে জমে উঠবে বৈশাখী মেলা এবং এ মেলা থাকবে তিনদিন। আন্দরকিল্লা, বোস ব্রাদার্স, রাইফেল ক্লাব, কোতোয়ালী মোড়, জেল রোড ও লালদীঘির পাড়ে দোকানিদের অনেকেই পছন্দের জায়গা নিয়ে বসে গেছেন পসরা নিয়ে। বরাবরের মতো দেশীয় তৈরি হাত পাখা, ফুলের ঝাড়– আর গৃহস্থালি সামগ্রী মেলা এসেছে এবারও। হাত বাড়ালেই মেলায় মিলছে নিত্যপ্রয়োজনীয় গৃহস্থালির পণ্য দা, বটি, ছুরি, পিঠা তৈরির পিঁড়ি, বেলচা, মাটির তৈরির কারুকার্যখচিত আকর্ষণীয় ব্যাঙ্ক, ফুলের টব, ফুলদানী, শোপিচ, শীতল পাটি, আস্তফলসহ গাছের চারা, বাঁশ ও বেতের তৈরি মোড়া, বাচ্চাদের খেলনা, বাঁশি, মুড়ি-মুড়কি, ফলমূল আর গহনা। আরো আছে চুড়ি-ফিতা, রঙিন সুতা, হাতের কাঁকন, নাকের নোলক, ঢোল, কাঠের তৈরি পুতুল, নকশী কাঁথা, খাঁচার পাখি ও মাটির কলস। সারাবছর মহানগরসহ বৃহত্তর চট্টগ্রামের মানুষ অপেক্ষার প্রহর গুনে এই মেলার জন্য। তারা এক বছরের গৃহস্থালি সামগ্রী এই মেলা থেকে সংগ্রহ করেন।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে চাঁদপুর, পটুয়াখালী, বরিশাল ও ঢাকা সাভারের মৃৎশিল্প প্রতিষ্ঠান, বগুড়া, নরসিংদী, জামালপুর, ঢাকা ও বলীর হাটের আসবাবপত্র নির্মাতা মালামাল নিয়ে এসেছেন। আন্দরকিল্লা মোড়ের ফুটপাতে স্তুপ করে রেখেছে ফুলের ঝাড়–, এগুলা এসেছে বাঁশখালী থেকে। লালদীঘির আশপাশ এলাকায় জায়গা না পাওয়ায় এখানে বসেছে এই ফুলের ঝাড়ু বিক্রেতা। লালদীঘি পেট্রোল পাম্পের সামনে মাটির তৈরি সৌখিন জিনিস দেখা গেছে। বিক্রেতা জানান, প্রতিবছর এ মেলায় আসি। ভালো বেচাকেনা চলে। তাই এবার চাঁদপুর থেকে দুই ট্রাক মাটির তৈরি জিনিস নিয়ে এসেছি। বলীখেলাকে ঘিরে আগে ও পরে তিনদিন বৈশাখী মেলা অনুষ্ঠিত হওয়ার রেওয়াজ থাকলেও তা নির্ভর করে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে আসা ব্যবসায়ীদের উপর। পণ্য নিয়ে আসার পরপরই যেমন বিক্রি শুরু হয় ঠিক তেমনি পণ্য বিক্রি শেষ না হওয়া পর্যন্ত চলতে থাকে মেলা। বিশেষ করে মাটির তৈরি জিনিসপত্র ও কাঠের তৈরি আসবাব বিক্রি হতে দেখা যায় কয়েকদিন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।