Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

১১৩তম আসরে চ্যাম্পিয়ন জীবন বলী

জব্বারের বলীখেলা

রুমু, চট্টগ্রাম ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ২৬ এপ্রিল, ২০২২, ১২:০০ এএম

ঐতিহাসিক আবদুল জব্বারের বলীখেলার ১১৩তম আসরে চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন কক্সবাজার-চকরিয়ার তারেকুল ইসলাম ওরফে জীবন বলী। গতকাল সোমবার বিপুল সংখ্যক দর্শকের উপস্থিতি ও মুর্হূমুহূ করতালির মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ফাইনালে কুমিল্লা-হোমনার শাহজালাল বলীকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়নের স্বাদ পান জীবন বলী। খেলা শেষে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার আনন্দে খুশি হয়ে জীবন বলেন, গত আসরে শিরোপা হাতছাড়া হয়েছিল। সেই আসরে শাহজালাল বলীর কাছে হেরে গিয়েছিলাম। কিন্তু এবার পরাস্থ হইনি। স্বপ্ন ছিল জব্বারের বলীখেলায় চ্যাম্পিয়ন হব। শপথ নিয়েছিলাম এবার জিতবই। আল্লাহ আমার দোয়া কবুল করেছেন।
গত আসরে শাহজালাল বলী চ্যাম্পিয়ন থাকলেও করোনার কারণে গত দুই বছর খেলা না হওয়ায় এবারের আসরে তাকে কিছুটা পরিশ্রান্ত দেখা যায়। সেয়ানে সেয়ানে লড়াই হয়েছে এবারের আসরের দুই বলীর মধ্যে। বলীখেলার কৌশলের দিক দিয়ে ২৫ মিনিটের এ লড়াইয়ে প্রথম ১৪ মিনিট জীবন বলী দুই দফা কুমিল্লার শাহজালালকে কিছুটা পরাস্থ করলেও কিন্তু তাকে ধরাশায়ী করতে পারেনি। আবার দ্বিতীয় দফায়ও একই কৌশল অবলম্বন করে শাহজালালকে ধরাশায়ী করতে পারেনি। তখন পয়েন্টের দিক দিয়ে জীবন এগিয়ে থাকায় মূল রেফারি আবদুল মালেক তাকে বিজয়ী ঘোষণা করলে দর্শকরা চিৎকার করে বলেন রেফারির এ সিদ্ধান্ত মানি না, এ দুইজনের মধ্যে লড়াই আবার হতে হবে।
এ সময় মঞ্চে উপস্থিত প্রধান অতিথি সিটি মেয়র এম রেজাউল করিম চৌধুরী ঘোষণা দেন এ দুই বলীকে তিন মিনিট সময় দেয়া হলো। এদের মধ্যে লড়াইয়ে যে এগিয়ে থাকবে তাকে রেফারি বিজয়ী ঘোষণা করবেন। শেষ তিন মিনিটে জীবন আবারও এগিয়ে থাকায় তিন পয়েন্ট পেয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন। এর আগেও জীবন আরও একবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন এবং গত আসরে তিনি রানার্স আপ ছিলেন। খেলা শেষে পুরস্কার বিতরণ করেন সিটি মেয়র। এবারের চ্যম্পিয়ন বলীকে দেয়া হয়েছে ২৫ হাজার টাকা ও ট্রফি এবং রানার্স আপ বলীকে দেয়া হয়েছে ১৫ হাজার টাকা। বিকেল ৩টায় লালদীঘি মাঠের পাশে ২০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ২০ ফুট প্রস্থের অস্থায়ী বালুর মঞ্চে ঐতিহ্যবাহী আবদুল জব্বারের বলীখেলার উদ্বোধন করেন পুলিশ কমিশনার সালেহ মোহাম্মদ তানভীর। জব্বারের বলীখেলায় এবার প্রথম রাউন্ড, কোয়ার্টার ফাইনাল (চ্যালেঞ্জিং রাউন্ড), সেমি ফাইনাল ও ফাইনাল (চ্যালেঞ্জিং রাউন্ড) মোট ৭২ জন বলী দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অংশ নেয়।
বৃটিশ বিরোধী আন্দোলনে যুবসমাজকে উজ্জীবিত করতে বদরপতি এলাকার ব্যবসায়ী মরহুম আবদুল জব্বার সওদাগর ১৯০৯ সালে এ কুস্তি প্রতিযোগিতার (বলীখেলা) আয়োজন করেন। সেই থেকে প্রতি বছর ১২ বৈশাখ এবং ২৫ এপ্রিল এ বলীখেলা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। বলীখেলাকে ঘিরে লালদীঘির আশপাশে জমে উঠেছে বৈশাখী মেলা। তিন দিনের এ মেলায় দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে হরেক পণ্যের পসরা নিয়ে এসেছেন ব্যবসায়ীরা। মেলাকে ঘিরে মহানগরীর প্রাণকেন্দ্রের কয়েক কিলোমিটার এলাকায় গ্রামীণ আবহের সৃষ্টি হয়েছে। তবে পবিত্র রমজানের কারণে এবার মেলা পাঁচ দিন থেকে দুই দিন কমিয়ে তিন দিন করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার মেলার শেষ দিন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ