Inqilab Logo

সোমবার, ০১ জুলাই ২০২৪, ১৭ আষাঢ় ১৪৩১, ২৪ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

ত্রুটিপূর্ণ কোচে ট্রেনের সিডিউল বিপর্যয়

মেরামতের অভাবে অকেজো ৪৯২টি

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২০ এপ্রিল, ২০১৯, ১২:০৪ এএম

ঢাকা-রংপুর রেলপথে চলাচলকারী একমাত্র আন্ত:নগর ট্রেন রংপুর এক্সপ্রেস। উত্তরাঞ্চলের যাত্রীদের ভরসা এই ট্রেনের সিডিউল বিপর্যয় নিত্যদিনের ঘটনা। সাপ্তাহিক ছুটি শেষে ট্রেনটি সময়মতো চলাচল শুরু করলেও দুদিন না যেতেই বিপর্যয়ের কবলে পড়ে। সপ্তাহের শেষের দিকে ঢাকা থেকে সকাল ৯টার ট্রেন কয়টায় ছাড়বে-সে প্রশ্নের জবাব থাকে না। এমনও দিন গেছে সকাল ৯টার স্থলে ট্রেনটি ঢাকা ছেড়েছে রাত ৯টায়। রেলওয়ে সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, যাত্রীবাহী কোচের কারণেই ট্রেনটির এই দুরাবস্থা। এক সেট পুরাতন কোচ নিয়ে ট্রেনটি ঢাকা থেকে রংপুর পর্যন্ত চলাচল করে। চলার পথে যেকোনো একটা কোচে ত্রুটি দেখা দিলেও ঘটে বিপত্তি। রংপুর এক্সপ্রেসের মতো আরও কয়েকটি আন্ত:নগর ট্রেনের সিডিউল বিপর্যয়ের কারণ ত্রুটিপূর্ণ কোচ।
জানা গেছে, নিয়মিত মেরামতের অভাবে পুরোপুরি অকেজো হওয়ার পথে ৪৯২টি রেল কোচ। রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলে বর্তমানে ৯৩৩টি মিটারগেজ যাত্রীবাহী রেল কোচ রয়েছে। মিটারগেজ কোচ নিয়মিত মেরামত করার স্থান চট্টগ্রামের পাহাড়তলী ক্যারেজ ও ওয়াগন কারখানা। ১৯৪৭ সালে স্থাপিত এই কারখানার অধিকাংশ প্ল্যান্টস ও মেশিনারিজ পুরাতন। এগুলোর কার্যক্ষমতাও হ্রাস পেয়েছে। রেলওয়ে সূত্র জানায়, মিটারগেজের ৯৩৩টি যাত্রীবাহী কোচের মধ্যে ৪৯২টির বয়স ৩৫ বছরের বেশি। যে কারণে জরাজীর্ণ কোচগুলো মেরামতে বেশি সময় দরকার হয়। বাজেটসহ কারখানার নানা সমস্যার কারণে কোচগুলো মেরামত করা সম্ভব হচ্ছে না। নিয়মিত মেরামত করলে কোচগুলো আরো কিছুদিন সেবা দিতে পারতো। অথচ মেরামতের অভাবে পুরোপুরি নষ্ট হওয়ার পথে কোচগুলো। একবার মেরামত করলে একটি কোচ অনায়াসে ১২ বছর পরিচালনা করা যায়। কোচগুলোর লাইফ টাইমও বেড়ে যায়।
রেলপথ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে ৪৫০টি মিটারগেজ কোচ শিডিউল ওভারভিউ অবস্থায় চলাচল করছে। এই সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। যাত্রী চাহিদা পূরণের জন্যই কর্তৃপক্ষ বাধ্য হয়ে কোচগুলোকে বিরতিহীনভাবে চলাচল করাচ্ছে, যা নিরাপদ ট্রেন পরিচালনার জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ।
সূত্র জানায়, প্রাথমিকভাবে ৪৯২টি রেল কোচের মধ্যে প্রকল্পের আওতায় ১০০টি মেরামতের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এতে মোট ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে ৭৬ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। কোচগুলো কারখানার বাইরে প্রাইভেট এজেন্সির মাধ্যমে মেরামতের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। বর্তমানে স্বল্প সময়ে পাহাড়তলী ওয়ার্কশপে কোচ মেরামত করা সম্ভব নয়।
সূত্র জানায়, যাত্রীবাহী কোচের বৈদেশিক স্পেয়ার পার্টস সংগ্রহের জন্য তিনটি প্যাকেজ ও স্থানীয় সংগ্রহের জন্য ৩৬টি ছোট ছোট প্যাকেজ করা হয়েছে। সমজাতীয় স্পেয়ার পার্টস নিয়ে তৈরি করা হয়েছে অন্য একটি প্যাকেজ।
এ প্রসঙ্গে রেলওয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, একটি এমজি কারখানায় বছরে ৫০টি কোচ মেরামত করা সম্ভব হয়। বিভিন্ন শিডিউল ভাগ করে এগুলো মেরামত করতে হয়। এজন্য সময় লাগে।
এ প্রসঙ্গে রেলমন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন বলেন, পুরো রেলওয়ে একটা অগোছালো অবস্থায় রয়েছে। আমরা সেগুলোকে গোছানোর চেষ্টা করছি। কোচ সঙ্কট, ইঞ্জিন সঙ্কটসহ সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে, তবে সময় লাগবে। রেলমন্ত্রী বলেন, ইতোমধ্যে ইন্দোনেশিয়া থেকে নতুন কোচ এসেছে। আগামী জুনের মধ্যে আরও কোচ আসবে। নতুন কোচ আসার পর এ সমস্যার কিছুটা হলেও সমাধান হবে বলে আশা করছি। তিনি বলেন, নতুনের পাশাপাশি পুরাতন কোচগুলোকেও মেরামত করে সচল করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।



 

Show all comments
  • কিবরিয়া ২১ এপ্রিল, ২০১৯, ১২:৩১ পিএম says : 0
    রংপুর বাসীর জন্য দেখার মনে হয় কেহ নেই। অথচ মাননীয় স্পিকার ও বানিজ্য মন্তীর আসনের এলাকাবাসী কষ্ট পাচ্ছে বেশী।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ট্রেন


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ