গাজীপুরে র্যাবের সঙ্গে বন্দুক যুদ্ধে ১৪ মামলার পলাতক আসামি এক যুবক নিহত হয়েছে। তার নাম হাবিবুর রহমান (হাবি) (৩৫)। সে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের বারবৈকা এলাকার হাজী আব্দুল বারেকের ছেলে। নিহত ওই যুবককের বিরুদ্ধে গাজীপুরের বিভিন্ন থানায় ১৪টি মামলা এবং সে একজন অস্ত্র ব্যবসায়ী বলে জানিয়েছে র্যাব। এ ঘটনায় আহত হয়েছে দুই র্যাব সদস্য। ঘটনাস্থল থেকে একটি বিদেশী পিস্তল, এক রাউন্ড গুলি ও একটি ম্যাগজিন উদ্ধার করেছে র্যাব। এছাড়া গাজীপুরের কালীগঞ্জে শীতলক্ষ্যা নদীতে অভিযান চালিয়ে ৬ ডাকাতকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাবের অপর একটি দল।
র্যাব-১এর গাজীপুরের কোম্পানী কমান্ডার লে. কমান্ডার আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব জানাতে পারে যে, গাজীপুর মহানগরীর সদর থানার সালনা ইপসা গেইেটের অদূরে কতিপয় অস্ত্র ব্যবসায়ী অস্ত্র ক্রয়-বিক্রয় করছে। র্যাবের টহল দলটি ঘটনাস্থলে গেলে তাদের উপস্থিতি টের পেয়ে অজ্ঞাতনামা অস্ত্র ব্যবসায়ীরা র্যাবের টহল দলটিকে লক্ষ্য করে অতর্কিত গুলিবর্ষণ করে। এ সময় র্যাবও পাল্টা গুলি চালায়। পরে ঘটনাস্থল থেকে গুলিবিদ্ধ অজ্ঞাত পরিচয়ের (৩৫) এক অস্ত্র ব্যবসায়ীর মরদেহ এবং একটি বিদেশী পিস্তল, এক রাউন্ড গুলি ও একটি ম্যাগজিন উদ্ধার করা হয়। সন্ধ্যায় নিহতের পরিবারের সদস্যরা গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে গিয়ে নিহতের লাশ সনাক্ত করেন। সন্ত্রাসীদের গুলিতে র্যাবের দুই সদস্য সানাউল্লাহ ও উজ্জল আহত হয়েছে। পরে তাদের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।
র্যাব আরো জানায়, বন্দুক যুদ্ধে নিহত ওই যুবক এলাকার তালিকাভূক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী। সে দীর্ঘ দিন যাবৎ গাজীপুর জেলার বিভিন্ন এলাকায় নানা প্রকার সন্ত্রাসী হামলা, মাদক ব্যবসা, অস্ত্র ব্যবসা, অবৈধ ভূমি দখল, চাঁদাবাজী, প্রতারণা, টেন্ডারবাজী, খুন জখম, ধর্ষণ, হাট-পা কাঁটাসহ বিভিন্ন সময় নানা অপরাধ মূলক কর্মকান্ড করে আসছিল। বর্তমানে তার নামে গাজীপুরের বিভিন্ন থানায় ধর্ষণ, খুন, অস্ত্র, মাদক মামলাসহ অন্যান্য সর্বমোট ১৪ টি মামলা রয়েছে, যার মধ্যে সে একাধিক ধর্ষণ মামলাসহ অনেক মামলার ওয়ারেন্ট ভূক্ত পলাতক আসামী।
অপর দিকে গাজীপুরের কালিগঞ্জে শীতলক্ষ্যা নদীতে অভিযান চালিয়ে ১টি ট্রলার, ১টি ইঞ্জিন চালিত নৌকা ও দেশীয় অস্ত্রসহ সংঘবদ্ধ ডাকাত দলের সক্রিয় ৬ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-১ এর সদস্যরা।
র্যাব-১ এর অধিনায়ক মোঃ সারওয়ার-বিন-কাশেম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, দীর্ঘদিন যাবৎ গাজীপুরের কালিগঞ্জ থানাধীন শীতলক্ষ্যা নদীর গুদারাঘাট এলাকায় একটি সংঘবদ্ধ ডাকাত দল বিভিন্ন ট্রলার ও নৌকাযোগে শীতলক্ষ্যা নদীতে চলাচলরত বালি, পাথর ও মালামাল পরিবহণকারী বিভিন্ন নৌযান এবং ড্রেজারে নিয়মিত ডাকাতির অভিযোগ পাওয়া যায়। ডাকাতরা দেশীয় অস্ত্র দিয়ে সাধারণ মানুষকে মারধর করাসহ বিভিন্ন প্রকার ভয়ভীতি দেখিয়ে মোটা অংকের টাকা ও মূল্যবান জিনিসপত্র হাতিয়ে নিত।
গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে এগারটার দিকে র্যাবের একটি দল শীতলক্ষ্যা নদীর গুদারাঘাট এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে ডাকাতির প্রাক্কালে ডাকাত দলের মোঃ শাহিন হোসেন (৩০), মোঃ সোহেল মিয়া (২৯), মোঃ সাদ্দাম হোসেন (২৮), মোঃ খাইরুল ইসলাম (২৩), উপল কবির (১৯) ও মোঃ ফয়সাল (২০) কে গ্রেপ্তার করে।
নদীতে থাকা একটি ড্রেজারে সরাসরি ডাকাতির সময় র্যাব সদস্যরা ১টি ট্রলার, ১টি ইঞ্জিন চালিত নৌকা এবং ধারালো ২টি বড় ছুরি, ২টি দা, ২টি রামদা ও ২টি চাকুসহ ৬ ডাকাতকে হাতেনাতে গ্রেফতার করা হয়। র্যাবের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃতরা দীর্ঘদিন যাবৎ শীতলক্ষ্যা নদীতে সক্রিয় ডাকাতির ঘটনায় দায় স্বীকার করেছে।