Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

তিতাসে ২২ খাতে দুর্নীতি

প্রতিমন্ত্রীর কাছে প্রতিবেদন দিয়েছে দুদক

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৮ এপ্রিল, ২০১৯, ১২:০৩ এএম

তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির ২২ খাতে দুর্নীতি হয় উল্লেখ করে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল বুধবার দুপুরে সচিবালয়ে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদের কাছে দুর্নীতি সংক্রান্ত প্রাতিষ্ঠানিক টিমের অনুসন্ধানী এবং পর্যবেক্ষণমূলক এ প্রতিবেদন হস্তান্তর করেন সাবেক সচিব ও দুদকের কমিশনার ড. মোজাম্মেল হক খান।
এসময় বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ দুদকের এই কার্যক্রমের প্রশংসা করে বলেন, দুদকের এই প্রতিবেদন গুরুত্বের সঙ্গে দেখে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিন দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি ঘোষণা করেছেন। এই মন্ত্রণালয়ে তা কার্যকরভাবে অনুসরণ করা হবে।
দুদক কমিশনার বলেন, ২০১৭ সাল থেকে দুর্নীতির জনশ্রুতি রয়েছে এমন ২৫টি সরকারি প্রতিষ্ঠানের আইন, বিধি, পরিচালনা পদ্ধতি, সরকারি অর্থ আত্মসাৎ অপচয়ের দিকগুলো পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ করছে কমিশন। এসব প্রতিষ্ঠানের জনসেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে সফলতা ও সীমাবদ্ধতা, আইনি জটিলতা, সেবা গ্রহীতাদের হয়রানি ও দুর্নীতির কারণগুলো চিহ্নিত করে, তা বন্ধে সুনির্দিষ্ট সুপারিশ করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ২৫টি প্রাতিষ্ঠানিক টিম গঠন করা হয়। ইতোমধ্যেই বেশ কয়েকটি টিমের প্রতিবেদন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। তিনি বলেন, এসব টিম অনুসন্ধান চালিয়ে দুর্নীতির উৎস চিহ্নিত করে। তিতাস গ্যাস সংক্রান্ত প্রাতিষ্ঠানিক টিমটি তাদের অনুসন্ধানে তিতাসের অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, বর্তমানে কর্মকর্তা এবং এ বিষয়ে যারা সম্যক ধারণা রাখেন, তাদের সঙ্গে আলোচনার করে। পরে তথ্য সংগ্রহ করে, সেটা পর্যালোচনাও করে। এছাড়া তিতাসের বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতি সম্পর্কিত বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনসহ ভুক্তভোগী সেবা গ্রহীতাদের বক্তব্যও পর্যালোচনা করে টিম।
একইসঙ্গে প্রতিষ্ঠানটির বার্ষিক প্রতিবেদন, নিরীক্ষা ও অডিট প্রতিবেদনও পর্যালোচনার আওতায় আনে তারা। সার্বিক পর্যালোচনার ভিত্তিতে আমাদের এই টিম তিতাসের দুর্নীতির উৎস ও ক্ষেত্র চিহ্নিত করে এবং তা প্রতিরোধে সুপারিশমালা প্রতিবেদন আকারে কমিশনে দাখিল করে। মোজাম্মেল হক বলেন, তিতাসের এই প্রতিবেদনে ২২টি সম্ভাব্য দুর্নীতির উৎস চিহ্নিত করা হয়েছে। এগুলো হচ্ছে- অবৈধ সংযোগ, নতুন সংযোগে অনীহা এবং অবৈধ সংযোগ বৈধ না করা, অবৈধ লাইন পুনঃসংযোগ, অবৈধ সংযোগ বন্ধে আইনগত পদক্ষেপ না নেওয়া, অদৃশ্য হস্তক্ষেপে অবৈধ সংযোগ, গ্যাস সংযোগে নির্দিষ্ট নীতিমালা অনুসরণ না করা, বাণিজ্যিক শ্রেণির গ্রাহককে শিল্প শ্রেণির গ্রাহক হিসেবে সংযোগ দেওয়া, মিটার টেম্পারিং, অনুমোদনের অতিরিক্ত বয়লার ও জেনারেটরে গ্যাস সংযোগ, মিটার বাইপাস করে সংযোগ দেওয়া সংক্রান্ত দুর্নীতি, এস্টিমেশনের চেয়ে কম গ্যাস সরবরাহ করেও সিস্টেম লস দেখানো, ইচ্ছা করে ইভিসি (ইলেকট্রনিক ভলিউম কারেক্টর) না বসানো। আর এসব দুর্নীতি প্রতিরোধে কমিশনের প্রতিবেদনে ১২ দফা সুপারিশ উল্লেখ করেছে টিম। কমিশনের এই প্রতিবেদন অনুসারে ব্যবস্থা নেওয়া হলে দুর্নীতি প্রতিরোধ সহজ হবে। এভাবে দুর্নীতি হওয়ার আগেই, তা প্রতিরোধ করা গেলে, মামলা করার প্রয়োজ পড়বে না। তিনি বলেন, সরকার দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্সের যে ঘোষণা দিয়েছে, কমিশন সে ঘোষণা বাস্তবায়নে দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণে বহুমাত্রিক কার্যক্রম সফল করছে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে সমন্বিত উদ্যোগের অংশ হিসেবেই এ প্রতিবেদন প্রণয়ন করা হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: দুর্নীতি

১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
৩১ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ