Inqilab Logo

রোববার ১০ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ কার্তিক ১৪৩১, ০৮ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মাথায় রাখতে হবে ইসলাম পবিত্র ধর্ম : মমতা

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৬ এপ্রিল, ২০১৯, ৪:১৫ পিএম

ভারতে চলছে লোকসভা নির্বাচন। প্রথম ধাপে বেশ কিছু জায়গাতে ভোট নেয়া হয়ে গেলেও এখনো বাকি রয়েছে আরো ছয়টি ধাপ। ফলে তুমুল বেগে চলছে নির্বাচনী প্রচারণা। এদিক থেকে পিছিয়ে নেই পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূলও। আজ মঙ্গলবার ইটাহারে এমনই এক নির্বাচনী প্রচারণায় নেমে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি বলেছেন, ইসলাম ধর্ম পবিত্র ধর্ম, এটা মাথায় রাখতে হবে। ধর্ম নিয়ে কোনো ধরনের ভাগাভাগি চলবে না।

আজ বালুরঘাট কেন্দ্রের প্রার্থী অর্পিতা ঘোষের হয়ে আজ মঙ্গলবার ইটাহার ও বুনিয়াদপুরে সভা করেন মমতা।

ইটাহারের জনসভায় মমতা যেমন তৃণমূল সরকারের কাজের খতিয়ান ও উন্নয়ন তুলে ধরেছেন, তেমনি বিভিন্ন ইস্যুতে বিজেপি সরকারের সমালোচনা করেন তিনি। সমর্থকদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, দেশকে রক্ষা করতে গেলে দিল্লির সরকার বদলে দিন৷ তৃণমূলকে ভোট দিন। কারণ বিজেপি বলছে, তারা বাংলাতেও নাগরিকত্ব বিল করবে। এটা কী জানেন? পাঁচ বছরের জন্য আপনাকে বিদেশী করে দেবে৷ তারপর কী গ্যারান্টি আছে যে আপনি নাগরিকত্ব ফিরে পাবেন। তারা দাবি করছে, এনআরসি করবে। আমি তাদেরকে বলছি আগে এন টা ছুঁয়ে দেখ, তারপর আরসি করবে।

বাংলার ব্যাপারে তিনি বলেন, নিজের জীবন বাজি রাখতে রাজি, কিন্তু ভাগাভাগি চলবে না। কারণ বাংলার সংস্কৃতি এটা নয়। মুসলমানদের ব্যাপারে তিনি স্পষ্টভাষায় বলেন, ইসলাম ধর্ম পবিত্র ধর্ম এটা মাথায় রাখতে হবে। ধর্মের নামে কোনো ভাগাভাগি চলবে না। হিন্দু, ইসলাম, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন ধর্ম থাকবে, তবেই তো দেশ।

বিজেপি দলিত, কৃষকসহ সবার ওপর অত্যাচার করছে উল্লেখ করে মমমতা বলেন, এই সরকারের আর প্রয়োজন নেই। ২০১৯ সালেই ফিনিশ হবে বিজেপি ফিনিশ।
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি বলেছেন, ‘ওদের এত সাহস যে নিজেদের মতো আইন করে বলবে কে কোথায় থাকবে, কে কোথায় থাকবে না? এত সাহস ওদের, ভাবছে যে শুধু ওরা থাকবে, আর বাকিদের বার করে দেবে! এ সব বরদাস্ত করা হবে না।’

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের অনুষ্ঠানে দেশপ্রিয় পার্কে দেয়া এক ভাষণে তিনি সরাসরি বিজেপি বা সঙ্ঘ পরিবারের নাম উচ্চারণ না করে বলেন, একশ্রেণির মানুষ নিজের মতো করে অমানবিক, দানবিক ও পাশবিক ধর্ম তৈরি করে দেশের ইতিহাস বদলে দিতে চাইছে। অবশ্য দু’দিন আগেই তিনি বিজেপি, আরএসএস, বিশ্ব হিন্দু পরিষদ অশান্তির আগুন জ্বালছে বলে অভিযোগ করেছিলেন।

পুলওয়ামার ওই হামলার পর পশ্চিমবঙ্গসহ দেশের নানা প্রান্তে যেভাবে ‘দেশপ্রেমের নামে’ মানুষকে হুমকি দেয়া, মারধর ও গোলমালের ঘটনা ঘটছে, তা কড়া হাতে মোকাবিলায় প্রশাসনকে আগেই নির্দেশ দিয়েছেন মমতা। এ বার বাংলার মানুষকে এই নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াানোর আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘যে কাশ্মীরি শালওয়ালা রোজ এসে শাল দিয়ে যান, হঠাৎ তাকে দরজা থেকে বার করে দেব? যে চিকিৎসক ২০ বছর ধরে এখানে চিকিৎসা করছেন, হঠাৎ করে তার উপর হামলা হবে কেন? কারা এত লাটসাহেব?’

মুখ্যমন্ত্রীর আবেদন, ‘এ রাজ্যের শিক্ষা, সংস্কৃতি বাঁচাতে সকলকে দৃঢ়চেতা হয়ে রুখে দাঁড়াতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘চাই ভারত এক থাকুক। ভারত মাথা তুলে দাঁড়াক। ভারত উগ্রপন্থার দেশ হতে পারে না। ভারত চিরকালই তেজস্বী। সব ধর্ম, ভাষার মানুষকে আপন করে নিতে হবে। সকলকে ভালবাসতে হবে। যারা এখানে দাঙ্গা বাধানোর চেষ্টা করছে, ওদের মেনে নিতে পারি না।’

গত বৃহস্পতিবারই আবার বিশ্ব হিন্দু পরিষদের (ভিএইচপি) সর্বভারতীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সুরেন্দ্র জৈন কলকাতায় এসে বলেন, ‘পুলওয়ামার ঘটনার পর সাধারণ মানুষের ভাবাবেগে আঘাত লেগেছে। তাই তারা প্রত্যাঘাত শুরু করেছেন। আমরা একে পূর্ণ সমর্থন করি। যারা এর বিরোধিতা করছেন, তাঁরাই আসল দেশদ্রোহী। তাদের ডান্ডা মারা উচিত।’

তার এ মন্তব্যকে সমর্থন করেছে রাজ্য বিজেপি। কিন্তু তৃণমূলের মতোই সিপিএম ও কংগ্রেস এক সুরে এ ধরনের মন্তব্যের তীব্র নিন্দা করেছে।

অন্যদিকে ভিএইচপি নেতা সুরেন্দ্র কটাক্ষ করে আরো বলেন, ‘সেনার উপর হামলাকারী কাশ্মিরি, রোহিঙ্গা, অনুপ্রবেশকারীরাএ রাজ্যে আশ্রয় পাচ্ছেন। এটাই মমতার তোষণের রাজনীতি।’ ভিএইচপি’র মন্তব্যের নিন্দা করে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘ভিএইচপির থেকে কেউ দেশপ্রেম শিখবে না। দেশপ্রেমের নামে ওরা দাঙ্গা বাধায়। সমাজকে দ্বিখণ্ডিত করে। ওদের থেকে দেশপ্রেম শিখব না।’

সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী বলেন, ‘স্বাধীনতা সংগ্রামে যারা বিশ্বাসঘাতক ছিলেন, তাদের মুখে এখন দেশপ্রেমের খই ফুটছে। যারা দেশের মধ্যে বিভাজন তৈরি করতে চাইছেন, দেশেরই মানুষকে মারার কথা বলছেন এবং জওয়ানদের মৃত্যুকে ব্যবহার করে ভোটে জেতার চেষ্টা করছেন, তারাই তো প্রকৃত দেশদ্রোহী।’

কংগ্রেসের আরেক শীর্ষ নেতা আব্দুল মান্নানের মন্তব্য, ‘ব্রিটিশ আমলে যারা চরবৃত্তি করে পুরস্কার পেয়েছে, তাদের কাছ থেকে দেশপ্রেম শিখব না। তারা পাকিস্তানকে শিক্ষা দিতে না পেরে দেশের মানুষকে মারছেন। তারাই তো দেশদ্রোহী।



 

Show all comments
  • মোহাম্মদ ফয়ছল ১৬ এপ্রিল, ২০১৯, ৭:২৯ পিএম says : 1
    আপনাদের সংবাদগুলি আমার সবছেয়ে ভালো।
    Total Reply(0) Reply
  • Mahedi ১৭ এপ্রিল, ২০১৯, ১০:৪৫ এএম says : 1
    আমি মমতা বোন কে ভারত সরকার চাই
    Total Reply(0) Reply
  • Nannu ১৭ এপ্রিল, ২০১৯, ১১:৪৪ এএম says : 1
    Momota benarji hindu hoya ghoshona kore "Islam pobitro dhormo"ar amader 92% mosolmaner deshe shashoker doler kisu monafiq neta petara islam nia kotakkho kore eta boroi ridoy bidharok ....
    Total Reply(0) Reply
  • মোঃ শরীফুজ্জামান ১৮ এপ্রিল, ২০১৯, ১১:৩৭ এএম says : 0
    যারা জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে মানুষকে ভালবাসতে পারে সেইতো নেতা। মমতা দিদির জন্য দোয়া করি তিনি যেন আবার বিজয়ী হন।
    Total Reply(0) Reply
  • Mohammed Kowaj Ali khan ২১ এপ্রিল, ২০১৯, ৮:৩৪ পিএম says : 0
    একমাত্র ধর্মইতো ইসলাম। মানা না মানা যার তার ইচ্ছা। মানলে জান্নাত না মানলে জাহান্নম। ইসলাম শান্তি, ইসলাম মুক্তি, ইসলাম শিফা, ইসলাম রাজনীতি। Islam complete code of life. Islam is proper health. Islam is proper politics. Islam is proper wealth. INSALLAH. Learn more and more Islam get topper benifit. Wai loui yaw ma e jil lil mukajjivin. That day unbilifer will suffer lots and lots. সেই দিন অবিশ্বাসীদের বড় বিনাশ হইবে! There is no dought about this. INSALLAH.
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভারতের নির্বাচন


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ