প্রাক্তন প্রেমিকের নির্যাতনের শিকার অভিনেত্রী
মালায়ালাম সিনেমার অভিনেত্রী আনিকা বিক্রমন। প্রাক্তন প্রেমিক অনুপ পিল্লাই তাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করেছেন বলে অভিযোগ
সাফা কবির, একজন তরুণ অভিনেত্রী। কাজ করছেন টেলিভিশন নাটক ও বিজ্ঞাপনে। তার কাজ দিয়ে যতটা না তিনি আলোচনায় আসতে পেরেছেন, এবার একটি বেসকারকারি রেডিও স্টেশনের লাইভ অনুষ্ঠানে এক মন্তব্য করে তার চেয়ে বেশি সমালোচনার জন্ম দিয়েছেন। তিনি পরকালে বিশ্বাস করেন না- এমন মন্তব্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় শুরু হয়েছে সমালোচনার ঝড়।
পহেলা বৈশাখ উপলক্ষ্যে এবিসি রেডিওর একটি লাইভ অনুষ্ঠানে সাফা কবিরকে এক ভক্ত মেসেজ করেন, আপু আপনি কি পরকালে বিশ্বাস করেন? করলে আপনার লাইফ স্টাইল .....। এমন প্রশ্নে উপস্থাপক সাফা কবিরকে থামিয়ে দিতে চাইলেও তিনি এর উত্তর দেন। উত্তরে সাফা কবির বলেন, ‘না, আমি একদমই পরকালে একদমই বিশ্বাস করি না। আমি আসলে যেটা দেখি না, ওটা কখনো বিশ্বাস করিনা।’ এরপর উপস্থাপিকা কথাটিকে অন্যদিকে মোড় দিতে গিয়ে বলেন, ‘একচুয়েলি উনি বৈশাখে একটু বেশি খাওয়া দাওয়ার পর একটু ভাবে চলে গেছেন।’
এরপরেই সাফা কবিরের এমন মন্তব্য নিয়ে ফেইসবুক, ইউটিউভসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শুরু হয় সমালোচনা ও নিন্দার ঝড়। ইউটিউবে তার এই ভিডিওর নিচে মো. শামিম আহমেদ মন্তব্য করেন, ‘ওকে বাংলাদেশ থেকে বের করে দেওয়া দরকার। বাংলার জমিনে নাস্তিকের জায়গা হতে পারে না ৷’
প্রবাসী ইকরাম হোসেন রাকিব তার ফেইসবুকে লিখেন, ‘পরকালে বিশ্বাস করলে তো আর এরা আকাম কুকাম করতে পারবে না...’
‘তুমি চোখে দিয়ে অনু, পরমানু, ইলেকট্রন, প্রোটন, অক্সিজেন, কার্বনডাইঅক্সাইড এসব কিছুই দেখ না। তাই বলে এসব বিশ্বাস না করলে তুমি আসলে নির্বুদ্ধিতার পরিচয় দিচ্ছো।’ সাফা কবিরের মন্তব্য শেয়ার করে এভাবে ফেইসবুকে নিজের মত প্রকাশ করে ব্যবসায়ী এম এ কবির।
বিশিষ্ট সাংবাদিক ও কলামিস্ট মেহেদী হাসান পলাশ তার ফেইসবুক ওয়ালে লিখেন, ‘গণতান্ত্রিক দেশে যে কারোরই পরকাল বিশ্বাস করার এবং না করার সম্পূর্ণ অধিকার রয়েছে। আমি সাফা কবিরের এই মত প্রকাশের অধিকার শতভাগ সমর্থন করি। এ দেশে যেমন মুসলিম ছাড়াও হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টানসহ বিভিন্ন ধর্মের লোকেরা নিরাপদে বসবাস ও বিশ্বাসের চর্চা করে, তেমনি একজন নাস্তিকের অধিকার রয়েছে পরকালে বিশ্বাস না করে নিরাপদে বসবাস করার ও বিশ্বাস লালন করার। পরকালে তো শুধু মুসলিমরাই বিশ্বাস করে এমনটি নয়, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টানসহ প্রায় সকল ধর্মেই পরকালে বিশ্বাসের কথা রয়েছে। কাজেই সাফা কবিরের বিশ্বাস শুধু মুসলিম নয়, সকল আস্তিকের বিশ্বাসের বিপরীত। কিন্তু দেখছি কেবলি কিছু মুসলিমেরই গা জ্বালা করছে। কেন? ইসলাম তো বলেছে, ধর্মের ব্যাপারে কোনো জোর জবরদস্তি নেই। কোরআন তো বলেছে, লা কুম দ্বীনুকুম অল ইয়া দ্বীন। তা হলে আপনি কেন জিহাদে নামছেন? সাফা কবিরকে গালিগালাজ করছেন, যা ইচ্ছে তাই করছেন? সে কেবল তার বিশ্বাসের কথা বলেছে, তার মত আপনার উপর চাপিয়ে দেয়নি বা তার মতে আপনাকে মতান্তরিত হতেও বলেনি। তাকে গালিগালিজ আপনাকে ও আপনার ধর্ম বিশ্বাসকে বড় ও মহান করছে না। যদি সত্যিই জেহাদ করার ইচ্ছা থাকে, তাহলে তার মতের কাউন্টার মত যুক্তিসহকারে শালীনভাবে প্রকাশ করুন। তার মতের দূর্বলতা ধরিয়ে দিন, তাকে সঠিক পথে ফিরিয়ে আনতে সহায়তা করুন যুক্তি ও ধৈর্যসহকারে। সেটাই সত্যিকারের জিহাদ।’
শিক্ষার্থী জেরিন আক্তার কটাক্ষ করে বলেন, ‘বাংলাদেশে নতুন নাস্তিকের আগমন? সাফা কবির নাকি পরকাল বিশ্বাস করেন না? নাউযুবিল্লাহ আল্লাহ আপনি সবাইকে হেদায়ত করো।’
‘দুই দিনের বৈরাগী, ভাত কে বলে অন্য, নিজেকে বিশাল বড় মনে করা শুরু করে দিছে।’ - এভাবে ফেইসবুকে নিজের ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে আবুল হাসেম।
সাফা কবিরের হেদায়েতের জন্য দোয়া প্রার্থনা করে ইউটিউবে আবদুর রাজ্জাক মন্তব্য করেন, ‘আসা করি ও নিজের ভুল বুঝে আল্লাহ্ পাক এর কাছে তওবা করে নিবে। আল্লাহ পাক যেন ওকে হেদায়ত দান করেন, আমিন।’
সাফা কবিরকে সতর্ক করে ব্যবসায়ি রাসেল ফেইসবুকে লিখেন, ‘সাফা কবির, তোমাকে খারাপ ভাষায় কিছু বলার রুচি আমি হারিয়ে ফেলেছি! একটা কথা মনে রেখো, তোমাদের মত মেয়েদের উঠতেও সময় লাগেনা আবার ডুবতেও সময় লাগেনা। বয়কট সাফা।’
এছাড়া বিভিন্ন ফেইসবুক গ্রুপে বয়কট সাফা কবির ক্যাম্পেইন করছে অনেকে। ইউটিউবে ভিডিও তৈরি করে জানাচ্ছে তাদের ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।