পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
পরিচয় সঙ্কটে ভূগছেন ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের বিভিন্ন থানা ও ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগ নেতারা। দীর্ঘদিন রাজনীতি করেও দলীয় কোন পদ-পদবী না পাওয়ায় পরিচয় সঙ্কটে হাজার হাজার নেতা। নিজেকে আওয়ামী লীগের নেতা পরিচয় দিয়ে এলাকাতে দাপট দেখালেও কেউ জিজ্ঞাসা করলে দলের কোন পদে আছেন সেই পরিচয় দিতে পারেন না কেউই। এমন অবস্থায় হাজার হাজার পদপ্রত্যাশী নেতাদের আকুতি তাদের পরিচয় সঙ্কটের অবসান করা হোক। ঢাকা মহানগর উত্তরে ২৬ থানা ৪৬ ওয়ার্ড ও ৯ ইউনিয়ন এবং দক্ষিণে ২৩ থানা ৫৭ ওয়ার্ড রয়েছে। প্রতিটি থানায় ৭১ সদস্য এবং প্রতিটি ওয়ার্ড ও ইউনিয়নে ৬৯ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি হওয়ার কথা। এতে পূর্ণাঙ্গ কমিটি হলে দশ হাজারের বেশি নেতা পাবেন ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের পদের পরিচয়। কমিটি পূর্ণাঙ্গ না হওয়ায় বিশাল সংখ্যক নেতৃবৃন্দ পরিচয় সঙ্কটে রয়েছেন। গত ১০ এপ্রিল ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগের কমিটির তিন বছরের মেয়াদ শেষ হয়।
২০১৬ সালের ১০ এপ্রিল মহানগর কমিটি হলেও গত তিন বছরেও কমিটি থানা-ওয়ার্ড ও ইউনিয়নের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করতে পারেনি এই দুই কমিটি। তাই নেতাকর্মীদের মাঝে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। এ নিয়ে কয়েকবার তৃণমূলের নেতারা প্রধানমন্ত্রীর কাছে মহানগর নেতাদের নামে বিচারও দিয়েছেন। কিন্তু দিবসভিত্তিক কার্যক্রমের বাইরে কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকও করেননি তারা। আর সবকিছুই প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মোতাবেক করছেন বলে দায় এড়ানোর দাবি মহানগর নেতাদের।
দলীয় সূত্র জানায়, মহানগরের শীর্ষ নেতাদের দ্ব›দ্ব, স্বজনপ্রীতি, অনিয়ম, পদ-বাণিজ্য, বিতর্কিত ও হাইব্রিডদের নাম আলোচনায় আসায় পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন হয়নি তিন বছরেও। দলের কেন্দ্রীয় নেতারা বার বার ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণের সভাপতি ও সম্পাদককে মৌখিকভাবে নির্দেশ দিলেও কোনো কিনারা হয়নি। এর মধ্যে কমিটি গঠন নিয়ে দ্ব›েদ্বর বিষয়টি প্রকাশ্যে এলে বেশ কয়েকবার মহানগরের দুই অংশের নেতাদের ডেকে ‘ধমক’ দেন দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। গত বছরের ৩১ মে’র মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি দেয়ার নির্দেশও দিয়েছিলেন তিনি।
নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কমিটি ঘোষণা না হওয়ায় দীর্ঘ হচ্ছে পদ-পদবী প্রত্যাশী নেতাদের অপেক্ষার প্রহর। বছরের পর বছর অপেক্ষায় থাকা নেতাকর্মীদের অনেকের মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে চাপা ক্ষোভ ও হতাশা। বিভক্তির আগে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সর্বশেষ সম্মেলন হয় ২০১২ সালের ২৭ ডিসেম্বর। কিন্তু নানা জটিলতায় আটকে যায় কমিটি গঠন প্রক্রিয়া। এর তিন বছর পর ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগকে দু’ভাগে বিভক্ত করা হয়। ২০১৬ সালের ১০ এপ্রিল একেএম রহমতুল্লাহকে সভাপতি ও সাদেক খানকে সাধারণ সম্পাদক করে মহানগর উত্তর এবং আবুল হাসনাতকে সভাপতি ও শাহে আলম মুরাদকে সাধারণ সম্পাদক করে মহানগর দক্ষিণ কমিটি ঘোষণা করা হয়।
একই সঙ্গে মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের থানা, ওয়ার্ড ইউনিয়নের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণা করা হয়। এরপর ওই বছরের ১১ সেপ্টেম্বর ৭৫ সদস্যের উত্তর-দক্ষিণ মহানগর কমিটি গঠন করা হয়। কিন্তু দুই সদস্য বিশিষ্ট থানা ওয়ার্ড কমিটি গত তিন বছরেও পূর্ণাঙ্গ হয়নি।
ঢাকা উত্তর আওয়ামী লীগ সূত্র জানায়, ২০১৭ সালের ৫ জুলাই প্রথমবার ঢাকা উত্তরের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়। পরে নেতাকর্মীদের প্রতিবাদের কারণে কমিটি বাতিল করা হয়। এরপর একই বছরের ২৭ ডিসেম্বর দ্বিতীয় দফায় প্রতিটি থানায় ৭১ সদস্য এবং প্রতিটি ওয়ার্ড ও ইউনিয়নে ৬৯ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদন করে ‘প্রেস রিলিজ’ দেয় মহানগর উত্তর। তাও আবার বাতিল করা হয়।
পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করার সময় উত্তরের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে পরামর্শ করেননি বলে দলীয় সভাপতির কাছে অভিযোগ করেন বিভিন্ন থানার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরা। সে প্রেক্ষিতে ওইসব কমিটি স্থগিত করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি।
তবে মহানগর সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের দাবি কমিটি বাতিল হয়নি। এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ উত্তরের সাধারণ সম্পাদক সাদেক খান জানান, ‘কমিটি নিয়ে কোনো সমস্যা নেই। কমিটি হয়ে গেছে। এখন আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করছি।’ কিন্তু সেই কমিটির কোন নেতা নিজেদের পদাধিকারি বলে দাবি করেন না।
এদিকে মহানগর দক্ষিণ সূত্র জানায়, কদমতলী, শ্যামপুর, গেন্ডারিয়া, সুত্রাপুর, ওয়ারী, কোতয়ালি, কামরাঙ্গীরচর, শাহাবাগ, ধানমন্ডি, হাজারীবাগ, কলাবাগান ও নিউমার্কেট থানার পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। অবশিষ্ট থানাগুলোর পূর্ণাঙ্গ কমিটি অচিরেই ঘোষণা করা হবে। অন্য থানা-ওয়ার্ডের কমিটি কেন্দ্রীয় সংগঠনের কাছে জমা দেয়া আছে।
ঢাকা দক্ষিণের সহ-সভাপতি আবু আহমেদ মান্নাফি ইনকিলাবকে বলেন, সাধ্যমত কাজ করলেও কর্মীদের অনেক চাহিদাই পূরণ করতে পারিনি। সার্বিকভাবে দুর্বলতা আমাদেরই। দলীয় প্রধান যদি সম্মেলনের প্রস্তুতি নিতে বলেন নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করা হবে। মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ ইনকিলাবকে বলেন, আমরা দলীয় প্রধান ও সাধারণ সম্পাদকের নির্দেশনা মোতাবেক কাজ করেছি। পূর্ণাঙ্গ কমিটি কেন্দ্রে জমা দেয়া আছে। দলীয় প্রধানের নির্দেশনা পেলেই ঘোষণা করা হবে।
এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল হাসনাত বলেন, চেষ্টা করেছি ভালো করার। কিন্তু সব ক্ষেত্রে সফল হতে পারিনি। ব্যর্থতা আছে অস্বীকার করছি না। গত ১০ এপ্রিল কমিটির মেয়াদ শেষ হয়েছে। দলীয় সভাপতি মেয়াদ বাড়ালে থাকব। না হলে নতুন কমিটি আসবে।
ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ উত্তর-দক্ষিণের একাধিক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে ইনকিলাবকে বলেন, তিন বছরে কার্যনির্বাহী কমিটির কোনো সভা হয়নি। কয়েকটি বর্ধিত সভা হয়েছে। উত্তর কমিটির একটি পরিচিত সভা হয়েছিল শুরুর দিকে। এরপর আর একত্রে বসা হয়নি মহানগর কমিটির নেতাদের। দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ ও মেয়র সাঈদ খোকনের বিরোধে কোন কাজেই এগোতে পারেনি মহানগর।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য লে. কর্নেল (অব.) ফারুক খান বলেন, ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ কমিটি মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে থাকলে সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন কমিটি গঠন করা হবে। ইতোমধ্যে দলীয় সভাপতির নির্দেশে মেয়াদোত্তীর্ণ তৃণমূল কমিটিসহ উত্তর-দক্ষিণ সম্মেলনের জন্যও টিম গঠন করা হয়েছে। আমাকে মহানগর উত্তর টিমের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। আগামী জাতীয় সম্মেলনের আগে এসব ক্ষেত্রে সম্মেলন করে মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটির স্থলে নতুন কমিটি আনা হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।