Inqilab Logo

বুধবার, ০৩ জুলাই ২০২৪, ১৯ আষাঢ় ১৪৩১, ২৬ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

অশ্রুসিক্ত বিদায়

জানাযায় লাখো মানুষের ঢল, ইমামতি করলেন বাবা

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১২ এপ্রিল, ২০১৯, ১২:০৫ এএম

*মৃত্যুর কারণ ডিপ বার্ন *দ্রæত মেয়ে হত্যার বিচার দাবি
*স্বজন ও সহপাঠীদের কান্নায় হৃদয়বিদারক পরিবেশ
*ফাঁকা ছিল নুসরাতের পরীক্ষার সিট

বাবার কাঁধে সন্তানের লাশ বহন বড়ই কষ্ট ও বেদনার। খুব কম মানুষকেই এমন নির্মোহ পরিস্থিতিতে পড়তে হয়। গতকাল এমনই এক হতভাগা বাবাকে নিজ কাঁধেই বহন করতে হয়েছে আদরের সন্তানের লাশ। আবার তিনিই মেয়ের নামাজের জানাজায় ইমামতি করে কবরস্থ করেছেন নিজ হাতে। অসহায় এই বাবার চোখের পানিতে ভিজে একাকার হয়ে গেছে নুসরাতের কবরের মাটি।
গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে বাদ আসর সোনাগাজী মো. ছাবের সরকারি পাইলট হাইস্কুল মাঠে দুর্বৃত্তদের দেওয়া আগুনে পুড়ে নিহত নুসরাতের জানাজা নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। জানাজায় ঢল নামে লাখো মানুষের। সবাই হাত তুলে নিহত এই মাদরাসা ছাত্রীর জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করেন। মানুষের কান্নায় পুরো জানাজা মাঠে এক হৃদায়বিদারক পরিবেশ তৈরি হয়। পরে নিহত এই মাদরাসা ছাত্রীকে পারিবারিক কবরস্থানে তার দাদীর কবরের পাশে দাফন করা হয়েছে।
এর আগে গত বুধবার রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকা মেডিক্যালের বার্ন ইউনিটে মারা যায় নুসরাত। গতকাল দুপুরে ঢামেকের মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে লাশ নিয়ে যাওয়া হয় গ্রামের বাড়ি ফেনীর সোনাগাজীতে। ডিপ বার্নের কারণেই নুসরাতের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসকরা।
ফেনী জেলা সংবাদদাতা বলেন, গতকাল বাদ আসর সোনাগাজী মো. ছাবের সরকারি পাইলট হাইস্কুল মাঠে নুসরাতের জানাজা নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। নুসরাতের জানাযায় লাখো মানুষের ঢল নামে। তাকে শেষবারের মতো একপলক দেখতে অনেকে দূরদূরান্ত থেকে এসে তার জানাযায় শরীক হয়। এর আগে বিকেলের দিকে নুসরাতের লাশবাহী গাড়ি তাঁর নিজ বাড়িতে এসে পৌঁছায়। এসময় তার স্বজন, সহপাঠি ও গ্রামবাসী কান্নায় ভেঙে পড়েন। তাদের কান্না দেখে উপস্থিত সাধারণ মানুষ ও প্রশাসন সংশ্লিষ্টরাও কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন।
নুসরাতের দাদা মাওলানা মোশারফ হোসেন কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, আমার নাতনি খুব শান্ত এবং ভদ্র স্বভাবের ছিল। তাকে পুড়িয়ে মারার ঘটনা আমরা সহ্য করতে পারছি না। তার খালা ছকিনা বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে নৃশংস এ হত্যাকাÐের বিচার দাবি করেন।
সংবাদদাতা আরও জানান, নুসরাতের বাবা মাওলানা এ কে এম মুসা নামাজের জানাযায় ইমামতি ও মোনাজাত পরিচালনা করেন। পরে জানাযা শেষে সোনাগাজী পৌরসভার উত্তর চরচান্দিয়ায় পারিবারিক কবরস্থানে দাদির কবরের পাশে নুসরাতকে দাফন করা হয়।
জানাযায় প্রধানমন্ত্রীর সাবেক প্রটোকল অফিসার আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী নাসিম, ফেনী জেলা প্রশাসক মো. ওয়াহিদুজজামান, পুলিশ সুপার এস এম জাহাঙ্গীর আলম সরকার, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুর রহমান, সোনাগাজী উপজেলা নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান জহির উদ্দিন মাহমুদ লিপটন, সোনাগাজী পৌরসভার মেয়র রফিকুল ইসলাম খোকনসহ জেলার সর্বোস্তরের মানুষ উপস্থিত হন।
মৃত্যুর কারণ ডিপ বার্ন
ঢামেকের ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসকরা বলেন, ডিপ বার্নের (গভীর দগ্ধ হওয়ার) কারণেই নুসরাত জাহান রাফির মৃত্যু হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা সোয়া ১১টার দিকে শুরু হয়ে ১২টা পর্যন্ত পৌনে এক ঘণ্টা ময়নাতদন্ত চলে। তিন সদস্যের একটি মেডিকেল বোর্ড ময়নাতদন্তে অংশ নেয়।
নুসরাতের ময়নাতদন্তের জন্য গঠিত বোর্ডের প্রধান ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডা. সোহেল মাহমুদ। বোর্ডের অন্য সদস্যরা হলেন, প্রভাষক ডা. প্রদীপ বিশ্বাস ও প্রভাষক ডা. জান্নাতুল ফেরদৌস।
ডা. প্রদীপ বিশ্বাস জানান, ডিপ বার্নের কারণেই নুসরাতের মৃত্যুর বিষয়টি প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হওয়া গেছে। তবে শরীরে আগুন দেওয়ার আগে তাকে ধর্ষণ করা হয়েছিল কি নাÑ সেটি জানা যায়নি। এ বিষয়ে জানতে মাইক্রোবায়োলজি এবং ডিএনএর পরীক্ষার জন্য কিছু নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল একেএম নাসিরুদ্দিন বলেন, নুসরাতের ময়নাতদন্ত শেষ হয়েছে। গভীর দগ্ধ হওয়ার কারণেই তার মৃত্যু হয়েছে বলে চিকিৎসকরা নিশ্চিত হয়েছেন। নুসরাতের মৃত্যুতে পুরো জাতির সঙ্গে ঢামেক পরিবার মর্মাহত বলে তিনি জানান।
গত বুধবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে ঢামেকের বার্ন অ্যান্ড প¬াস্টিক সার্জারি ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় নুসরাত। বার্ন ইউনিটের চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. হোসাইন ইমাম বলেন, দগ্ধ অবস্থায় নুসরাতকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছিল। তার শরীরের ৭৫ শতাংশ পুড়ে যায়। এছাড়া রক্ত ও লাং ইনফেকশনের কারণে কার্ডিও রেসপাইরেটরি ফেইলিয়র হয়ে তার মৃত্যু হয়েছে।
শাহবাগ থানার এএসআই মিনারা খাতুন ও মো. রমজান আলীকে সঙ্গে নিয়ে এসআই মো. শামছুর রহমানের তৈরি দুই পৃষ্ঠার সুরতহালের শুরুতে সূত্র হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে গত ১১ এপ্রিল শাহবাগ থানায় করা সাধারণ ডায়েরি (নম্বর-৬০২)। এতে নুসরাত জাহানের বয়স উলে¬খ করা হয়েছে ১৮ বছর।
প্রতিবেদনে উভয় কান, থুতনি, গলা, ঘাড়সহ পোড়া ও ঝলসানো এবং উভয় হাতের আঙ্গুল পর্যন্ত রাউন্ড গজ ব্যান্ডেজ, যাতে পোড়া ঝলসানো বলে উল্লেখ করা হয়েছে। গলার নিচ থেকে বুক-পেট-পিঠ-যৌনাঙ্গ-মলদ্বারসহ উভয় পায়ের পাতা পর্যন্ত রাউন্ড গজ ব্যান্ডেজ বলেও উল্লেখ করা হয়।
মর্গের সামনে স্বজনদের আর্তনাদ
এদিকে, গতকাল সকালে ময়নাতদন্তের আগে ঢামেক মর্গের সামনে নুসরাতের বাবা-মা ও ভাইসহ অন্যান্য স্বজনরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। বুধবার রাতে মেয়ের মৃত্যুর খবর পাওয়ার পরই অসুস্থ হয়ে পড়েন নুসরাতের মা শিরিন আক্তার। পরে তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রাতে তাকে আইসিইউতে রেখে ঘুমের ওষুধ ও স্যালাইন দিলে গতকাল সকালে তার জ্ঞান ফেরে।
নুসরাতের ভাই মাহমুদুল হাসানও বোনের মৃত্যু সংবাদে সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়েন। জ্ঞান ফিরলে আদরের বোনের কথা স্বরণ করে বিলাপ করতে করতে আবারও মুর্ছা যাচ্ছিলেন তিনি। মা ও ভাইয়ের মতো নুসরাতের বাবা একেএম মানিকও ছিলেন নির্বাক। মেয়ের মৃত্যুতে তিনি নির্বাক হয়ে পড়েন। পাগলের মতো একদিকে হা করে তাকিয়ে থাকেন। কিছুক্ষণ পর পর মেয়ের কথা স্বরণ করে বিলাপ করতে করতে তিনিও মূর্ছা যাচ্ছিলেন।
গতকাল সরেজমিনকালে দেখা গেছে, স্বজনরা আসা মাত্রই তাদের জড়িয়ে ধরে চিৎকার করে হাউ মাউ করে কান্না শুরু করে দেন নুসরাতের বাবা। কান্নার কারণে তার শ্বাস প্রশ্বাস বেড়ে যায়। বার বার মেয়ের কথা মনে করেন এবং ঘাতকদের বিচার দাবি করেন। আর কোনও কথা বলতে পারছিলেন না তিনি।
মর্গের সামনে অসহায় এই বাবা বলেন, কাঁদতে কাঁদতে চোখের পানি শুকিয়ে গেছে। অন্তর ফেটে যাচ্ছে। এখন আর কান্না বের হচ্ছে না। এতদিন স্ত্রী সন্তানকে সান্তনা দিয়ে নিজে কান্না চেপে রেখেছি। কিন্তু এখন আর বুকের ভেতরে পাথর চাপা দিয়ে রাখতে পারছি না বলে তিনি আবারও বিলাপ শুরু করেন।
তিনি বলেন, আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে কৃতজ্ঞ। আমি আপনাদের সবার কাছে কৃতজ্ঞ। আপনারা আমার মেয়ের জন্য অনেক করেছেন। এখানকার চিকিৎসকরা আমার মেয়েকে বাঁচানোর অনেক চেষ্টা করেছেন, কিন্তু বাঁচাতে পারেননি। এখন আমার আর কিছুই চাওয়ার নাই। আমি আমার মেয়ের হত্যার দ্রæত বিচার চাই। আমার মেয়ে হত্যার বিচারটা যেন দ্রæত হয়। যারা অপরাধী তারা যেন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি পায়।
ফাঁকা ছিল নুসরাতের পরীক্ষার সিট
সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসা কেন্দ্রের ৮ নম্বর কক্ষে গতকাল ফিকহ্ ২য় পত্রের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। সবাই পরীক্ষায় অংশ নিলেও ফাঁকা ছিল নুসরাত জাহান রাফির সিটটি। ১৪৯৬১৪ এই রোল নম্বরের আসনে বসে আর কারো পরীক্ষা দেওয়া হবেনা। গতকাল মাদরাসায় আসা পরীক্ষার্থী ও শিক্ষকদের সবার চোখ ছিল অশ্রæসিক্ত।
সোনাগাজী ইসলামীয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসা কেন্দ্রের সচিব নূরুল আফছার ফারুক বলেন, সকালে পরীক্ষা দিতে এসে কান্নায় ভেঙে পড়েন রাফির সহপাঠীরা। কারো দিকে তাকানো যাচ্ছিল না। সহপাঠীরা কোনোভাবেই অকালে তার এমন করুণ মৃত্যু মেনে নিতে পারছিলেন না।
প্রসঙ্গত, ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসার আলিম পরীক্ষার্থী নুসরাতকে গত শনিবার সকালে পরীক্ষাকেন্দ্রের ভেতরেই তিন তলা ভবনের ছাদে নিয়ে শরীরে আগুন দিয়ে হত্যার চেষ্টা করে দুর্বৃত্তরা। চারজন বোরকা পরে এ হত্যাচেষ্টায় অংশ নেয় বলে নুসরাত জানায়। চিকিৎসকরা জানান, তার শরীরের ৮০ শতাংশ দগ্ধ হয়। এর মধ্যে ৭০ শতাংশই গভীরভাবে দগ্ধ। এর আগে ২৭ মার্চ ওই মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলা তার নিজ কক্ষে ডেকে নিয়ে নুসরাতের শ্লীলতাহানি করে বলে অভিযোগ ওঠে। ওই ঘটনায় থানায় মামলা করলে প্রিন্সিপালকে গ্রেফতার করা হয়। নুসরাতের পরিবারের অভিযোগ, প্রিন্সিপালের লোকই পরিকল্পিতভাবে নুসরাতকে হত্যা করতে চেয়েছিল।



 

Show all comments
  • নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ১২ এপ্রিল, ২০১৯, ১:০৬ এএম says : 0
    এদেশে আর কিছু থাকুক বা না থাকুক, বক্তব্য দেওয়ার লোকের অভাব নেই |
    Total Reply(0) Reply
  • Deepak Eojbalia ১২ এপ্রিল, ২০১৯, ১:০৭ এএম says : 0
    Once who protected the principal, they are moving freely in the area. How.
    Total Reply(0) Reply
  • নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ১২ এপ্রিল, ২০১৯, ১:০৭ এএম says : 0
    আল্লাহ এই মেয়েটা কে জান্নাত দান করুন.....(আমিন)
    Total Reply(0) Reply
  • Nazmul Hoque ১২ এপ্রিল, ২০১৯, ১:০৭ এএম says : 0
    RIP in your life after death. And forgive us
    Total Reply(0) Reply
  • Sadi Nazrul Islam ১২ এপ্রিল, ২০১৯, ১:০৭ এএম says : 0
    মানবতা আজ কোথায়??
    Total Reply(0) Reply
  • Zahir ১২ এপ্রিল, ২০১৯, ১:০৭ এএম says : 0
    প্রত্যেক কষ্টের একটি সিমানা থাকে....কিন্তু নুশরাতের কষ্ট সবার হৃদয়ের মাঝে আগুন জ্বালিয়ে দিল....যা বাংলাদেশের মানুষ তার কাছে হেরে গেল...
    Total Reply(0) Reply
  • Anamul Haque ১২ এপ্রিল, ২০১৯, ১:১০ এএম says : 0
    ১৯৯৮ সালে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে বাসরঘর সাজিয়ে প্রতিরাতে একজন ছাত্রীকে ধর্ষন করা হতো, এভাবে একশত ধর্ষন করার পর বিশ্ববিদ্যালয়ে মিষ্টি বিতরণ করে উল্লাস করেছিলো ক্ষমতাসীন দলের সোনার ছেলে "জসিমউদদীন মানিক" এরও একটা বিচার হয়েছিলো, তবে ফাঁসি হয় নি। . দিবালোকে রামদা দিয়ে রাস্তায় প্রকাশ্যে খাদিজাকে কুপিয়ে তার মাথা কয়েকভাগ করে সিলেটের বদরুল, খাজিদার ভাগ্যভালো মরতে মরতে বেঁচে গেছে। বদরুলেরও একটা বিচার হয়ছে, তবে খুব বেশি হয় নি। . ২০১৮ সালে বরিশালের বানারিপাড়ায় মা-মেয়েকে একসাথে ধর্ষন করে মাথা নেড়ি করে দেয় প্রভাবশালী তুফান, তুফানেরও একটা বিচার হয়ছে, তবে ফাঁসি হয় নি। . সংরক্ষিত এলাকা কুমিল্লা ক্যান্টেরমেন্ট এর ভিতরে তনুকে ধর্ষন করার পর হত্যা করা হয়, কে বা কারা জড়িত তা কিন্তু গুয়েন্দা বাহিনী ভালো করেই জানে, কিন্তু তনুর ধর্ষনকারী কেউ গ্রেফতার হয় নি, . ৩১শে ডিসেম্বর ২০১৮ নোয়াখালীর সুবর্ণচরে দিনের বেলা যুবতি মেয়ের সামনে তার মাকে দলবেঁধে ধর্ষণ করার পর প্রহার করা হয়, ১৭ কোটি মানুষ এর সাক্ষী, ধর্ষক রুহুল আমীনের ফাঁসির দাবি উঠলেও, ফাঁসি কিন্তু হয় নি। . কিছুদিন আগে ঢাকার এক আবাসিক এলাকায় ৭ বছরের শিশুকে ধর্ষণ করার পর শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করা হয়, ধর্ষক আটক, তবে তারও কিন্তু ফাঁসি হবে না। . গত কয়েকবছর আগে দেখলাম ৩ বছরের শিশুর যৌনাঙ্গ ব্লেড দিয়ে কেটে ধর্ষন করে হত্যা করা হয়, সেই ধর্ষকও গ্রেফতার হয়ছে, তবে ফাঁসি কিন্তু হয় নি। . এভাবে আরো কতো ধর্ষণ হচ্ছে মা বোনেরা তার হিসাব রাখে কে? ধর্ষকরা জেলে যায় ঠিকিই, কিন্তু ক্ষমতার দাপট খাটিয়ে আবার বেরিয়ে আসে। . আমরা ধর্ষকের ফাঁসি চাই সবাই, কিন্তু দেশে কি সেই আইন আছে? ধর্ষকের শাস্তি জনসম্মুখে মৃত্যুদন্ড মাত্র তিন চারটা দিয়ে দেখুন, ধর্ষনতো দূরের কথা, কোনো মায়ের দিকে চোখ তোলে থাকানোর সাহস পাবে না।
    Total Reply(0) Reply
  • Ãlá Úďdîn ১২ এপ্রিল, ২০১৯, ১:১০ এএম says : 0
    আমিই বাংলাদেশ! আমার ডাক নাম লজ্জা!! আমি বিশ্বজিত,আমি নুসরাত, আমি অভিজিৎ,আমি নাদিয়া, আমি তনু, আমি খাদিজা, আমি রাজন! আমি ব্যর্থ ছাত্র, আমি প্রশ্নপত্র না পাওয়া হত দরিদ্র! আমি লাল সবুজের কফিন! আমি পিলখানার অসহায় সেনা অফিসারের আঁধারে দাফন! আমি স্বাধীন দেশের পরাধীন জনগন! আমি বাসে ধর্ষিতা মাজেদা! আমি ছেলের সামনে ধর্ষিতা মা! আমি ভাইয়ের সামনে ধর্ষিতা বোন! আমি গুম হওয়া সন্তানের মায়ের নিরব কান্না! আমি রানা প্লাজার ধুলোয় উড়া লাশ! ! আমি তাজরীনের অগ্নিকান্ডের অসহায় গরীব কর্মচারী! আমি ধ্বসে পড়া ভবনের নিচে গলিত লাশের গন্ধ আর .আমি সাগর-রুনির মেঘ! আমি জন্মের আগেই গুলিবিদ্ধ নবজাতক শিশু!আমি সাত খুন, আমি ফেলানী,আমি ১৬ কোটি মানুষের ভাগ্য , ঝুলে আছি কাঁটাতারে! আমি অন্ধ, তাই আমার বিবেকের দরজা বন্ধ।
    Total Reply(0) Reply
  • MD Salim Ahmed ১২ এপ্রিল, ২০১৯, ১:১১ এএম says : 0
    সারা শরীরে তীব্র ব্যথা নিয়ে মেয়েটি বলেছিল “আমি এই অন্যায়ের প্রতিবাদ করেই যাবো। আমার জীবন থাকতে যে অন্যায় মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল আমার সঙ্গে করেছেন, জীবন থাকতে সে অন্যায়ের সঙ্গে আপোষ করবো না জান্নাতে ভাল থাকিস বোন
    Total Reply(0) Reply
  • Hafizur Rahaman ১২ এপ্রিল, ২০১৯, ১:১২ এএম says : 0
    ঐ অধ্যক্ষের অপরাধের সাজা যদি এখনি না হয়, তাহলে ওর মতো আরো অনেক অপরাধী তৈরী হবে এই স্বাধীন দেশে... আর এভাবেই চলে যাবে আমার হাজারো বোনের প্রাণ....। So stop it. এই ঘটনা মনে করিয়ে দেয় যে, ১৯৭১ সালে যারা মা বোনের সম্ভ্রম কেড়ে নিয়েছিল তারা কারা.........? বঙ্গবন্ধুর এই স্বাধীন দেশে ঐ অপরাধীর বেচে থাকার কোন অধিকার নাই। ...... ওর ফাঁশি চাই....
    Total Reply(0) Reply
  • নাম- সাইমন ১২ এপ্রিল, ২০১৯, ৩:৫১ পিএম says : 0
    আমি বাংলাদেশ একজন পরাধীন নাগরিক! পরাধীন এই জন্য বলছি যে, দেশে স্বাধীন ভাবে কিছু বলার, কিছু করার ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও একজন নাগরিক হয়ে আমি বা অন্য কেউই পারছে না। তার মূল কারণ হলো বাংলাদেশের নোংরা রাজনীতি। এই বাংলাদেশ সেই বাংলাদেশ! যে দেশে একটি অপকর্ম বা খারাপ ঘটনাকে ঢেকে রাখার জন্য আরেকটা ঘটনা তৈরি করে। এফ. আর টাওয়ারে নিরপরাধ মানুষ গুলোকে পুরিয়ে মারার মত একটি জঘন্য ঘটনাকে ধামাচাপা দেওয়ার জন্য এবং সেই ফেনী জেলার, সোনাগাজীর একটি ছোট নিরপরাধ মেয়ে নুসরাত কে নির্মম ভাবে খুন করে আর একজন নিরপরাধ শিক্ষক সিরাজউদ্দৌলার উপরে মিথ্যা অপবাদ দেওয় হলো এ কেমন এক নোংরা বর্তমান সময়ের রাজনীতি। আমি কেন কোন বিবেকবান মানুষই বোধগম্য নয়। বোধগম্য হবে কি করে নোংরা রাজনীতির গন্ধে আমাদের চোখ অন্ধ, আর আমাদের বিবেকের দরজা বন্ধ।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: নুসরাত


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ