Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ট্রায়াল রানে উত্তরের বিরতিহীন ট্রেন

১৪০ কি.মি. গতিবেগ নিয়ে ধুম্রজাল

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৯ এপ্রিল, ২০১৯, ১২:০৪ এএম

আসছে পহেলা বৈশাখেই যাত্রা শুরু করবে রাজশাহী-ঢাকা-রাজশাহী রুটের প্রথম বিরতিহীন ট্রেন। ওই দিন সকাল ৭টায় রাজশাহী থেকে রওনা দিয়ে ট্রেনটি ঢাকা পৌঁছাবে সকাল ১১টায়। রেলওয়ের দাবি, মাত্র চার ঘণ্টাতেই রাজশাহী থেকে ঢাকা আসা সম্ভব হবে এই ট্রেনে।
ট্রেনটির সম্ভাব্য পাঁচটি নাম প্রস্তাব করেছে রেলওয়ে। এর মধ্যে বাছাইকৃত হিমসাগর, রূপসী বাংলা নাকি বনলতা সেন হবে- তা নির্ভর করছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওপর। তিনিই পছন্দের নামটি দুয়েকদিনের মধ্যে জানিয়ে দেবেন রেল মন্ত্রণালয়কে।
এদিকে, পহেলা বৈশাখে আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরুর আগে ট্রায়াল রানে বের হয় উত্তরবঙ্গের প্রথম এই বিরতিহীন ট্রেন। গতকাল সোমবার সকালে ট্রেনটি ট্রায়াল রান দিতে পার্বতীপুর থেকে টাঙ্গাইলের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করে। ট্রেনটি যাত্রী নিয়ে চলাচলের জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুত কি না, তা দেখার জন্যই এই ট্রায়াল রান। রেলওয়ের মহাপরিচালক রফিকুল আলম সাংবাদিকদের বলেন, আসছে পহেলা বৈশাখে (১৪ এপ্রিল) উদ্বোধন হবে উত্তরবঙ্গের বিরতিহীন এই ট্রেন। এখন ট্রায়াল রান হচ্ছে। সাধারণত ট্রেনটির সবকিছু ঠিকঠাক আছে কি না, তা সম্পূর্ণরুপে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার ধাপটিই ট্রায়াল রান। রেলওয়ের মহাপরিচালক বলেন, ট্রেনটির নাম এখনও ঠিক হয়নি। আমরা কয়েকটি নাম বাছাই করে প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠিয়েছি। প্রধানমন্ত্রী এর মধ্য থেকে একটি নাম বেছে নেবেন। দুয়েকদিনের মধ্যে নামটি ঠিক করে আমাদের জানিয়ে দেবেন।
রেলপথ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, নতুন ট্রেনটি সাজানো হয়েছে ইন্দোনেশিয়া থেকে আনা নতুন কোচ দিয়ে। রেলওয়ের পক্ষ থেকে শুরু থেকেই বলা হচ্ছে-ঘণ্টায় ১৪০ কিলোমিটার গতিতে চলতে সক্ষম হবে এই ট্রেন। সে হিসাবে প্রতি মিনিটে ট্রেনটি দুই দশমিক ৩৩ কিলোমিটার পথ চলতে সক্ষম। কিন্তু রেলওয়ের সংশ্লিষ্ট বিভাগের প্রকৌশলীরা জানান, বিদ্যমান রেললাইনে ১৪০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চালানো কোনোভাবেই সম্ভব নয়। ১৮০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চালাতে গেলে ঢাকা থেকে রাজশাহী পর্যন্ত রেললাইন নতুন করে মেরামত করতে হবে। রেললাইনে প্যাকিং, এলাইনমেন্টসহ অনেককিছুই পরিবর্তন করতে হবে। এজন্য নতুন করে প্রকল্পগ্রহণ করতে হবে জানিয়ে একজন প্রকৌশলী বলেন, এখন সর্বোাচ্চ গতি ঘণ্টায় ৮৫ কিলোমিটার। নতুন কোচ দিয়ে এ গতিবেগ সর্বোচ্চ ৯৫ করা সম্ভব। এর বেশি কোনোভাবেই সম্ভব নয়। গতকাল সোমবার ট্রায়াল রানে ট্রেনটির সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৮৫ কিলোমিটারই ছিল জানিয়ে রেলওয়ের পশ্চিমাঞ্চলের একজন কর্মকর্তা বলেন, গতিবেগ ৯০-৯৫ হলেও বিরতিহীন ট্রেন বলে ঢাকা থেকে রাজশাহী ৫ ঘণ্টার বেশি লাগবে না। অর্থাৎ নতুন এই ট্রেনের গতিবেগ আসলে কতো হবে তা নিয়ে ধুম্রজাল রয়েই গেল।
রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, ট্রেনটির ভাড়া শোভন চেয়ার ৩৭৫ টাকা, স্নিগ্ধা ৭১৯ টাকা, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কেবিনে প্রতি আসন ৮৬৩ টাকা এবং বার্থ এক হাজার ২৮৮ টাকা। ট্রেনটির খাবার পরিবেশনার জন্য দরপত্র প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ক্যাটারিং সার্ভিস নিযুক্ত করা হচ্ছে। নতুন এই ট্রেনে খাবার অন্য যেকোনো ট্রেনের চেয়ে উন্নত মানের করার তাগিদ দিয়েছেন রেলমন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন। খাবারের দামের বিষয়েও তিনি বলেছেন, সর্বনিম্ন দাম ৬০-৮০ টাকার মধ্যে থাকা উচিত। এতে প্রতিটি যাত্রী খাবার কিনে খেতে পারবেন।
এদিকে, এই প্রথম দেশের আন্তঃনগর কোনো ট্রেনে উড়োজাহাজের মতো বায়োটয়লেট সংযুক্ত থাকবে। এ কারণে এই ট্রেনের টয়লেটের ময়লা রেললাইনে পড়বে না। প্রথমবারের মতো ট্রেনটিতে রিক্লেনার চেয়ার বসানো হয়েছে, যেখানে পা রাখার ও হেলান দেওয়ার সুব্যবস্থা থাকবে। আর এসি বার্থের কেবিনে আছে ‘বেডরেস্ট’, রাতের বেলা বিছিয়ে দিলেই সেটি ছোট আকারের খাটের মতো আকৃতি নেবে। এছাড়া, কেবিনে ওপরের সিটের ওঠার জন্য আগের স্টিলের মই বাদ দিয়ে এবার সিঁড়ি দেওয়া হয়েছে। যা আগের কোনো ট্রেনে ছিল না।
নতুন ট্রেন চালু হলে ঢাকা রাজশাহী রুটে আন্তঃনগর ট্রেন সংখ্যা হবে চারটি। বর্তমানে এই রুটে পদ্মা, ধূমকেতু ও সিল্কসিটি এক্সপ্রেস নামে তিনটি ট্রেন চলাচল করে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ট্রেন


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ