নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
আগের রাতের বৃষ্টিতে উইকেটে ছিল ভেজা ভাব। টস জিতে আবাহনীকে ব্যাট করতে দিয়ে সেই সুবিধা কাজে লাগিয়ে তেতে উঠেন শুভাশিস রায় আর মোহাম্মদ শহীদ। বিরূপ পরিস্থিতিতে আবাহনীর ব্যাটসম্যানরাও পারেননি নিবেদন দেখাতে, পরে বাঁহাতি স্পিনে চেপে ধরেন নাবিল সামাদও। এতে টেবিলের দুই দলের লড়াই তাই হয়েছে একপেশে। আবাহনীকে অল্প রানে গুটিয়ে অনায়াসে জিতে শীর্ষে উঠেছে লিজেন্ড অব রূপগঞ্জ।
মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আগে ব্যাট করা আবাহনীর ইনিংস শেষ হয় ১২২ রানে। ২৩ ওভার ১ বল হাতে রেখে ওই রান টপকে ৬ উইকেটের সহজ জয় পেয়েছে রূপগঞ্জ। এবারের ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন আবাহনীর এটি দ্বিতীয় হার। আবাহনীকে হারানোর দিনে ১০ ম্যাচে ৯টিই জিতে ১৮ পয়েন্ট নিয়ে প্রথমবারের মতো শীর্ষে উঠল রূপগঞ্জ। সমান ম্যাচে দুটি হারে আবাহনীর পয়েন্ট ১৬।
গতকাল সকালে আবাহনীর শুরুটা হয় চরম বাজে। শুভাশিসের প্রথম বলেই বোল্ড হয়ে যান ছন্দে থাকা ওপেনার জহুরুল ইসলাম। দলের ৮ রানে নাজমুল হোসেন শান্ত শুভাশিসের বলে ক্যাচ দেন উইকেটের পেছনে। ভারতীয় প্রিয়াঙ্ককৃত পাঞ্চালকে একইভাবে পথ দেখান শহীদ। বিপর্যস্ত দলকে দিশা দিতে পারেননি সৌম্য সরকার। শুভাশিসের নিচু হওয়া বলে এলবিডবিøও হয়ে ফেরেন তিনিও।
তবে পাঁচে নামা মোহাম্মদ মিঠুন খেলছিলেন চনমনে। ৫৫ বলে ৩৮ করে নাবিল সামাদের বাঁহাতি স্পিনে উইকেট বিলিয়ে দেন তিনি। ৮ বলে কোন রান না করে সাব্বির রহমান বোল্ড হন শহীদের বলে। চরম বিপর্যস্ত অবস্থায় টিকে ছিলেন কেবল মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। শেষ পর্যন্ত ৪০ রানে অপরাজিত থেকে যান তিনি। কিন্তু কেউ সঙ্গ দিতে না পারায় দলের স্কোর আর বড় হয়নি।
মামুলি লক্ষ্যে নেমে মেহেদী মারুফ আর মোহাম্মদ নাঈম আনেন জুতসই সূচনা। ওপেনিং জুটিতে ৬২ রান আসার পর ম্যাচ আরও সহজ হয়ে যায় রূপগঞ্জের। ৫৯ করে মারফ আর ২২ করে নাঈম ফেরার পর টপাটপ ফিরে গিয়েছিলেন মুমিনুল হক আর জাকের আলি অনিক। অধিনায়ক নাঈম ইসলাম আর শাহরিয়ার নাফিস মিলে বাকি কাজ সারতে খুব অসুবিধে হয়নি।
এদিকে, পাকিস্তানি সাদ নাসিমের লেগ স্পিনে উত্তরা স্পোর্টিং ক্লাবকে গুঁড়িয়ে সুপার লিগ নিশ্চিত করেছে প্রাইম দোলেশ্বর স্পোর্টিং ক্লাব। নাসির হোসেন, ইলিয়াস সানিদের স্পিনে বিকেএসপিকে বিধ্বস্ত করে বড় জয়ে সুপার লিগের আশা টিকিয়ে রেখেছে শেখ জামাল ধানমন্ডি। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের সব ম্যাচই হয়েছে লো স্কোরিং। বিকেএসপিতে স্বাগতিকরা স্পিন ঘূর্ণিতে গুটিয়ে যায় ১৬১ রানে। প্রায় ১৫ ওভার বাকি রেখে ওই রান টপকে পাঁচ উইকেটে জিতেছে শেখ জামাল ধানমন্ডি। ১০ ম্যাচে ৫ জয়ে শেখ জামালের পয়েন্ট এখন ১০। সুপার লিগের শেষ জায়গার জন্য বাকি থাকা এক ম্যাচে জয়ের পাশাপাশি অন্যদের ফলের জন্যও অপেক্ষা করতে হবে তাদের।
তবে অপেক্ষা আর করতে হচ্ছে না দোলেশ্বরকে। ফতুল্লায় উত্তরা স্পোর্টিং ক্লাব ১৬০ রানে অলআউট হয়ে গেলে প্রায় ১২ ওভার হাতে রেখে ৫ উইকেটের অনায়াস জয় পেয়েছে দোলেশ্বর। এতে ১০ ম্যাচের ৭টি জিতে ১৪ পয়েন্ট নিয়ে সুপার লিগ নিশ্চিত হলো ফরহাদ রেজাদের।
ভেজা হাওয়ায় টস জিতে উত্তরাকে ব্যাট করতে দিয়ে চেপে ধরে দোলেশ্বর। ফরহাদ রেজা, আরাফাত সানিদের পাইয়ে দেওয়া শুরুর পর সাদ নাসিম লেগ স্পিনে নাকাল করেন উত্তরাকে। ওদের ১৬০ রানে আটকে দিতে ৪২ রানে ৪ উইকেট নেন তিনি।
১৬১ রানের লক্ষ্য পেয়ে ফরহাদ হোসেনের ৫৯, মার্শাল আইয়ুবের ৫৪ রানে কাজ সারে দোলেশ্বর।
ফতুল্লায় যেমন স্পিন ভেল্কি দেখিয়েছেন সাদ নাসিম বিকেএসপিতে তেমনটা দেখান নাসির আর ইলিয়াস সানিরা। অফ স্পিনে নাসির নেন ২৭ রানে ৩ উইকেট, আর বাঁহাতি স্পিনে সানি পান ৩০ রানে ৩ উইকেট। তাতে বিকেএসপি শেষ হয় ১৬১ রানে। সহজ লক্ষ্যে ব্যাট হাতেও অবদান রাখেন সানি (৩২), অমিত মুজমদারের ব্যাট থেকে আসে জুতসই (৪৩) রান। আর অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহান স্বাচ্ছন্দ্যে (২২) খেলে শেষ করে দেন ম্যাচ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
আবাহনী-রূপগঞ্জ, মিরপুর
আবাহনী : ৩৯.১ ওভারে ১২২ (সৌম্য ১৪, মিঠুন ৩৮, মোসাদ্দেক ৪০*, মাশরাফি ১৫; শুভাশিস ৩/৩৭, শহিদ ২/১১, ধাওয়ান ১/১৭, নাবিল ২/১৫, মুক্তার ১/৪২)।
রূপগঞ্জ : ২৬.৫ ওভারে ১২৫/৪ (মারুফ ৫৯, মোহাম্মদ নাঈম ২২, মুমিনুল ১৭, শাহরিয়ার ১২*; মাশরাফি ০/১৫, অপু ১/৩৩, সাইফ ১/১৬, সাব্বির ১/১৩)।
ফল : রূপগঞ্জ ৬ উইকেটে জয়ী।
ম্যাচসেরা : শুভাশিস রায়।
উত্তরা স্পোর্টিং-দোলেশ্বর, ফতুল্লা
উত্তরা : ৪৬.৪ ওভারে ১৬০ (তানজিদ ২৬, শানাজ ২২, মোহাইমিনুল ১৫, মিনহাজুল ৩৬, মিনহাজ ১৯; ফরহাদ রেজা ১/২২, আরাফাত সানি ১/২৩, মাহমুদুল ২/২৪, সাদ ৪/৪২)।
দোলেশ্বর : ৩৮.১ ওভারে ১৬১/৫ (সাইফ ২৬, ফরহাদ হোসেন ৫৯, মার্শাল ৫৪; সাজ্জাদ ৩/৪১, নাইমুল ১/৩৫, মিনহাজ ১/২)।
ফল : দোলেশ্বর ৫ উইকেটে জয়ী।
ম্যাচসেরা : সাদ নাসিম।
বিকেএসপি-শেখ জামাল, বিকেএসপি
বিকেএসপি : ৪২.১ ওভারে ১৬১ (রাতুল ১৪, আমিনুল ২৯, আকবর ৪৩, শামিম ১৪, পারভেজ ১৮, তানজিম ১৬; তাইজুল ২/৩৫, নাসির ৩/২৭, সানি ৩/৩০, এনামুল ২/২৬)।
শেখ জামাল : ৩৫.২ ওভারে ১৬৫/৫ (ইমতিয়াজ ১৯, সানি ৩২, মজুমদান ৪৩, সোহান ২২*, নাসির ২০; তানজিম ১/২৯, সুমন ২/২৫, কাইয়ুম ১/২৪, আমিনুল ১/২০)।
ফল : শেখ জামাল ৫ উইকেটে জয়ী।
ম্যাচসেরা : ইলিয়াস সানি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।