মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
আসন্ন ভোটের আগে ভারতে নির্বাচনী প্রচারণা জোরালো ও দ্ব›দ্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। ভারতের একদল লেখক ভোটদাতাদের কাছে সংকীর্ণ চিন্তা ও বিভক্তি পরিহার এবং ভারতে স্বস্তির পরিবেশ ফিরিয়ে আনার আবেদন জানিয়েছেন। বহু মত ও মতাদর্শের রাজনীতির মধ্যে কোন দল যে এ কাজটি করতে পারবে তা কেউ জানে না, তবে এ আবেদনের লক্ষ্য ক্ষমতাসীন নরেন্দ্র মোদি সরকারকে ভোট না দেয়ার জন্য বলে মনে হয়। এ সব লেখকদের কেউ কেউ গত পাঁচ বছর মোদির বিরোধিতা করেছেন। তাদের এ বিরোধিতা অপ্রয়োজনীয়। সংবাদ মাধ্যমে সাক্ষ্য রয়েছে যে ২০১৩-১৪ সালে মোদির সম্ভাব্য বিজয় বিষয়ে কী উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছিল। এখন রাহুল গান্ধীর নেতৃত্বাধীন কংগ্রেসের বেলায় সে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। এক বিরাট অশুভ শক্তিকে পরাজিত করার বিষয়টিকে এ আবেদনে যৌক্তিকতা দেয়া হয়েছে। আমার ধারণা, বিশেষ করে দিল্লী, বোম্বে ও ব্যাঙ্গালোরে এ দ্বিধা কংগ্রেসের প্রতি ভোটের আহবানে রূপ নেবে। খবর দি টেলিগ্রাফ ও এনডিটিভি।
এ পরিবর্তন ঘটলে তাতে বিস্ময়ের কিছু নেই। গত মঙ্গলবার কংগ্রেসের ইশতেহার এই লেখকদের মধ্যে খুশি ও আবেগের সঞ্চার করেছে। তারা আনন্দিত যে কংগ্রেস কঠোর সন্ত্রাস বিরোধী আইন, রাষ্ট্রদ্রোহিতা আইন, সশস্ত্র বাহিনী (বিশেষ ক্ষমতা) আইন সহ বেশ কিছু বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণের অঙ্গীকার করেছে। রাহুল গান্ধীর নেতৃত্বাধীন কংগ্রেসের উপর ক্রমবর্ধমান আস্থা অর্পিত হওয়াটা যতটা সামাজিক ততটাই আদর্শগত। কংগ্রেসের ইশতেহারে কর্মসংস্থান ও কৃষকদের দুর্দশার উপর ব্যাপক গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। এক বছরের মধ্যে সব শ‚ন্য পদে নিয়োগের পাশাপাশি রোজগার বাড়ানোর যেসব পরিকল্পনা কংগ্রেস করেছে। রাহুলগান্ধী এর ব্যাখ্যায় বলেছেন, ব্যবসা করতে গেলে প্রথম তিন বছর কাউকে কারও কাছ থেকে কোনো রকম অনুমতি নিতে হবে না। কৃষকদের জন্য আলাদা বাজেট তৈরির প্রতিশ্রæতিও ইশতেহারে দেওয়া হয়েছে। রাহুল বলেন, চাষি তাঁর ঋণ শোধ করতে না পারলে তাকে জেলে পোরা যাবে না। চাষির ঋণখেলাপিকে ফৌজদারি অপরাধ গণ্য করা হবে না।
ইশতেহার কোনো কিছু পাওয়ার নিশ্চয়তা দেয় না। বস্তুত জিডিপির ৬ শতাংশ শিক্ষার জন্য ব্যয় করার আশ^াস একেবারেই উচ্চাকাক্সক্ষী। আসলে ইশতেহারের গুরুত্ব সেখানে যেখানে ভারতের জন্য ক্ষতিকর বিজেপির পদক্ষেপ সমূহ কংগ্রেস সাহসী ও স্পষ্ট ভাবে তুলে ধরতে ও নিজেদের করণীয় প্রদর্শন করতে সক্ষম হয়েছে। কংগ্রেস অন্তর্ভুক্তিমূলক, বহুত্ববাদী ও সমতা ভিত্তিক ভারতের প্রতিষ্ঠাকালীন নীতির পুনরুজ্জীবন ঘটানোর আশা করে।
বিজেপি হিন্দুত্ববাদকে সামনে রেখে নির্বাচনী ফায়দা লুটতে চাইছে। কংগ্রেসের নির্বাচনী পরিকল্পনাকে নিষ্ক্রিয় করার জন্য দলটি তাদের পেশিশক্তিমূলক বহিষ্কারবাদের উপর নির্ভর করছে। এখন ভারতীয় ভোটারদের উপর নির্ভর করছে তারা কাকে বেছে নেবে।
এদিকে ভারতে লোকসভা নির্বাচনের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে, ততই বাড়ছে বিজেপি ও কংগ্রেস নেতাদের বাকযুদ্ধ। অভিযোগ, পাল্টা অভিযোগের মধ্যে দিয়ে চলছে একে অন্যকে ঘায়েল করার চেষ্টা। তবে ভারতের ৯০ কোটি ভোটার কী রায় দেন, তার উত্তর মিলবে আগামী বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হতে যাওয়া ৭ ধাপের ভোটগ্রহণ শেষে।
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার করতে ক্ষমতাসীন বিজেপি এখন ‘টাকা দিয়ে ভোট কিনছে’ অর্থাৎ নোটের রাজনীতি শুরু করেছে বলে অভিযোগ করেছে প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস। অন্যদিকে, বিজেপি নেতারা বলছেন, নানামুখী সমালোচনার মাধ্যমে কংগ্রেস ভারতের নিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়ে উঠছে। ওদিকে, কংগ্রেসের ইশতেহার জম্মু-কাশ্মীরে কার্যকরী বলে উল্লেখ করেছেন রাজ্যটির সাবেক মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি।
বুধবার অরুণাচলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির জনসভার আগের রাতে বিজেপি দলীয় মুখ্যমন্ত্রীর গাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয় নগদ ১ কোটি ৮০ লাখ রুপি। এ নিয়ে মোদিকে ‘চৌকিদার চোর’ বলে আখ্যা দিয়েছেন কংগ্রেস নেতারা। রাজ্যে রাজ্যে সমাবেশে বিজেপি অর্থ দিয়ে লোক ভাড়া করে আনছে বলেও অভিযোগ তাদের।
ভারতীয় কংগ্রেসের মুখপাত্র রণদীপ স‚র্যওয়ালা বলেন, বিজেপি এখন ‘নোট নাও ভোট দাও’-এর রাজনীতি শুরু করেছে। তাদের আয় করা কালো টাকাই এখন ভোটারদের দিয়ে ভোট কিনতে চাচ্ছে। নির্বাচন কমিশনও এক্ষেত্রে সহযোগিতা করছে।
এদিকে, পশ্চিমবঙ্গে জনসভায় মোদি তার নিজের ঢোল নিজেই বাজিয়েছেন বলে মন্তব্য রাজ্য কংগ্রেস নেতাদের। স্থানীয় কংগ্রেসের সভাপতি সোমেন মিত্রের অভিযোগ, সেনা সদস্যদের রক্ত নিয়ে রাজনীতি করছেন মোদি। তার আমলেই সবচেয়ে বেশি ভারতীয় সেনার মৃত্যু হয়েছে বলেও উলেখ করেন তিনি।
তবে বিজেপি নেতা ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের দাবি, বিজেপি নয়Ñ দেশে সংঘাত উস্কে দিচ্ছে কংগ্রেস ও তার মিত্ররা।
এর মধ্যে কংগ্রেসের ইশতেহারের প্রশংসা করে জম্মু-কাশ্মীরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি বলেন, রাহুল গান্ধীর ইশতেহার কাশ্মীরে শান্তি ফেরাতে কার্যকরী ভ‚মিকা রাখবে। বিজেপি অতীতে শান্তির প্রতিশ্রæতি দিলেও তারা কথা রাখেনি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।