Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আট গোলের ম্যাচ রোমাঞ্চকর ড্র

মেসি নির্ভরশীলতার কথা স্বীকার করল বার্সা

স্পোর্টস ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৪ এপ্রিল, ২০১৯, ১২:০৪ এএম

প্রথমে দুই গোলে এগিয়ে যাওয়া, অতঃপর টানা চার গোল খেয়ে ম্যাচ হারতে বসা- শেষ পর্যন্ত অবশ্য পয়েন্ট তালিকার নিচের সারির দল ভিয়ারিয়ালের কাছে হারতে হয়নি বার্সেলোনাকে। পরশু ৪-২ গোলে পিছিয়ে থেকেও ম্যাচটি ৪-৪ ড্র হয়েছে একজন জাদুকরী লিওনেল মেসির কল্যাণে। আট গোলের রোমাঞ্চকর ম্যাচে মেসির ফ্রি-কিক ও লুইস সুয়ারেজের দর্শণীয় ভলিতে রক্ষা পেয়েছে বার্সা। দুটি গোলই এসেছে ম্যাচের একেবারে শেষ সময়ে।

পরের ম্যাচে প্রতিপক্ষ অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ, এরপর চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ আটে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের বিপক্ষে মহাগুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে। যে কারণে মেসি ছড়াও জেরার্ড পিকে, ইভান রাকিটিচদের বেঞ্চে রেখে শুরুর একাদশ সাজান কোচ। কিন্তু অবস্থা বেগতিক দেখে দলের প্রাণভোমরাকে মাঠে নামাতে বাধ্য হন আর্নেস্তো ভালভার্দে। ফিলিপ কুতিনহোর বদলি হিসেবে ৬১তম মিনিটে মাঠে নামেন মেসি, স্কোরলাইন তখন ২-২।

কিন্তু একি! মাঠে নেমে তখন বলে স্পর্শও করা হয়নি মেসির। তার আগেই পিছিয়ে পড়ল তার দল! গুছিয়ে উঠার আগে আরও এক গোল খেয়ে মেসির দল তখন হারের মুখে। ম্যাচের বাকী তখন মাত্র ১০ মিনিট। এরপরও দুই গোলে পিছিয়ে থাকা দলটি সমতায় ফিরে মাঠ ছাড়ে মেসি জাদুতেই। নির্ধারিত সময়ের শেষ মিনিটে লিগ মৌসুমের ষষ্ঠ ও টানা তিন ম্যাচে তৃতীয় ফ্রি-কিক গোল দিয়ে ব্যবধান কমান আর্জেন্টাইন তারকা। আর যোগ করা সময়ে তার কর্নার কিক থেকে ফাঁকায় বল পেয়ে বিদ্যুৎগতির ভলিতে জালে পাঠান সুয়ারেজ। বার্সা শিবিরে তখন স্বস্তির নিশ্বাস, আর স্বাগতিক শিবিরে হৃদয়ভঙ্গের হতাশা।

আরও একবার প্রমাণ হলো বার্সেলোনা আসলে মেসির উপরই নির্ভরশীল। মাঠের খেলায় এমনটা বরাবর হয়ে আসলেও মুখে এতদিন তা স্বীকার করেননি বার্সেলোনা কোচ, মেসি ছাড়াও আমরা খেলতে পারি এমন বুলিই দিয়ে গেছেন বরাবর। কিন্তু ভিয়ারিয়াল ম্যাচের পর আর অস্বীকার করে উপায় ছিল না তার। ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে তাই অকপটে বললেন, ‘অবশ্যই আমাদের মধ্যে মেসি নির্ভরতা রয়েছে। কারণ সে বিশ্বসেরা খেলোয়াড়।’

তিনি বলেন, ‘পৃথিবীর প্রায় সব দলেই এমনটা থাকে। কিন্তু যখন সে এখানে থাকবে না, আমাদের খেলতে হবে এবং জেতার চেষ্টা করতে হবে। লিও আমাদের জন্য অপরিহার্য খেলোয়াড় এবং আমাদের বৈশিষ্ট্য তুলে ধরে। এটা সবাই জানে যে সে পৃথিবীর সেরা খেলোয়াড়।’

ম্যাচের ১৬ মিনিটেই দুই ব্রাজিলিয়ান ফিলিপ কুতিনহো ও ম্যালকমের গোলে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায় বার্সেলোনা। এরপর টানা চার গোল খায় দলটি। মূলত ভিয়ারিয়ালের কাউন্টার অ্যাটাক সামলাতে পারেনি বার্সার ঘুনেধরা রক্ষণ। পোস্টের নিচে মার্ক আন্দ্রে টের স্টেগেন দুর্দান্ত কিছু সেভ না দিলে এবং বার পোস্ট ভিয়াররিয়ালকে গোলবঞ্চিত না করলে ৬৮ শতাংশ বলের দখল নিয়েও হারতে হত বার্সাকে। আশ্চর্যের ব্যাপার হলো, আক্রমণে এগিয়ে ছিল স্বাগতিক ভিয়ারিয়াল। অবশ্য কাতালানদেরও গোলবঞ্চিত করেছে বার পোস্ট।

আসল সত্যিটা হলো ভিয়ারিয়ালকে দেখে এদিন মনেই হয়নি তারা পয়েন্ট টেবিলের ১৭ নম্বর দল। বার্সার অরক্ষিত রক্ষণে দুর্ধর্ষ সব আক্রমণ করে গেছে তারা। ২৩ ও ৫০তম মিনিটে গোল করে স্বাগতিকদের সমতায় ফেরান যথাক্রমে চুকোওজি ও টোকো একাম্বি। ৬২ ও ৮০তম মিনিটে দলকে এগিয়ে নেন যথাক্রমে ইবোররা ও বাক্কা। বাক্কার গোলে অবশ্য টের স্টেগেনের কিছুটা দায় আছে। এরপরও শেষ সময়ে মেসি ঝলসে উঠেন বলেই পরাজয়ের হাত থেকে রক্ষা পায় বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা।

ভিয়ারিয়ালের বিপক্ষে গোলের সুবাদে চলতি মৌসুমে মেসির গোল হলো ৪২টি। এরমধ্যে ৩২টি লা লিগায়। ইউরোপিয়ান গোল্ডেন বুটের লড়াইয়ে আরও এক ধাপ এগিয়ে গেলেন পাঁচ বারের বর্ষসেরা এ তারকা।

একই রাতে ঘরের মাঠে জিরোনাকে ২-০ গোলে হারায় পয়েন্ট টেবিলের দুই নম্বর দল অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ। দুই দলের মধ্যে দশ পয়েন্টের ব্যবধান তাই এখন নেমে এসেছে আটে। শনিবার লিগ ম্যাচ খেলতে ডিয়েগো সিমিওনের দল আসবে ন্যু ক্যাম্পে। এর তিন দিন পর ওল্ট ট্রাফোর্ডে ওলে গানার সুলশারের দলের বিপক্ষে বার্সার সেই চ্যাম্পিয়ন্স লিগ মহারণ। এমতাবস্থায় ভালভার্দে নিশ্চয় নড়বড়ে রক্ষণভাগ মেরামতে বাড়তি নজর দেবেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রোমাঞ্চকর ড্র
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ