পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সরকারি অর্থ আতœসাৎ এবং অনিয়ম ও দুর্নীতির ঘটনায় জড়িত থাকায় প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সাবেক ডিজি এবং বর্তমান সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব আবু হেনা মোস্তফা কামালসহ ১২ জন কর্মকর্তাকে অভিযুক্ত করে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। এ দিকে সরকারি অর্থ লুটপাটের ঘটনায় জড়িদের বিরুদ্ধে সরকারি আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে মন্ত্রণালয়ের সচিবকে নির্দেশ দিয়েছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন। ২০১৫ সালে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরে এ দুনীতির ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আকরাম-আল- হোসেন বলেন, বিষয়টি নিয়ে কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা হচ্ছে। প্রতিমন্ত্রীর নির্দেশনা দিয়েছে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেব। এ ধরনের দুর্নীতির সঙ্গে যারাই জড়িত, তাদের সঙ্গে আপস করার সুযোগ নেই। এ বিষয়ে বিষয়ে সাবেক ডিসি ও সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব আবু হেনা মোস্তফা কামালের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বিষয়টি আমি জানিনা। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের ওই সময়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক আবু হেনা মোস্তফা কামাল (বর্তমানে সরকারের সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব) চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার ভ্রমণে দুই দফা টিএ/ডিএ উত্তোলন করেন। একইভাবে অধিদফতরের বিভিন্ন পর্যায়ের আরও ১২ কর্মকর্তা অতিরিক্ত টিএ/ডিএ উত্তোলন করেছেন। আবু হেনা মোস্তফা কামালসহ ১২ কর্মকর্তাকে অতিরিক্ত উত্তোলিত অর্থ সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়ার সুপারিশ করা হয়।
অভিযুক্ত কর্মকর্তারা হলেন, উপপরিচালক শেখ মো. রায়হান, উপপরিচালক ইফতেখার হোসেন ভুইয়া, কর্মকর্তা মিজাউল ইসলাম, আতাউর রহমান, অনুজ কুমার, সোনিয়া আকবর, শিক্ষা অফিসার মাহফুজা বেগম, শিক্ষা অফিসার শামসুননাহার, শিক্ষা অফিসার মো. মজিবুর রহমান, শিক্ষা অফিসার মাহফুজুর রহমান জুয়েল এবং সহ-শিক্ষা অফিসার নজরুল ইসলাম। মন্ত্রণালয়ের তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, যেসব কর্মকর্তা এ ধরনের কর্মকান্ডে জড়িত, তাদের সঙ্গে মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তারাও জড়িত। যশোর পিটিআইয়ের সুপার মো. কামরুজ্জামানের কাছে তথ্য চাইলে টেলিফোনে তিনি তদন্ত কর্মকর্তার সঙ্গে অসদাচরণ করেন। এ ধরনের কর্মকান্ডে চট্টগ্রাম, সিলেট, যশোর, রাজশাহী, রংপুর ও বরিশালের উপপরিচালক ও পরিচালক পর্যায়ে ওই সময়ের কর্মকর্তারা জড়িত রয়েছেন। তদন্ত চলাকালে যশোর ও রাজশাহী পিটিআই থেকে তথ্য দিয়ে কোনও ধরনের সহায়তা করা হয়নি। মাঠপর্যায়ের সব তথ্য পাওয়া গেলে এই চিত্র আরও ভয়াবহ হতো বলে উল্লেখ করা হয় তদন্ত প্রতিবেদনে। তদন্ত প্রতিবেদনে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদনের পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছে, একই ব্যক্তি একাধিক স্থান থেকে একই তারিখে সম্মানী, টিএ/ডিএ উত্তোলন করেছেন, যা তার প্রাপ্য অর্থের চেয়ে বেশি। আবার বিমান ভ্রমণের ক্ষেত্রে সব বিমানবন্দরের জন্য একই পরিমাণে টিএ/ডিএ দাবি করেছেন এবং গ্রহণ করেছেন। একইসঙ্গে একই পথে ভ্রমণের ক্ষেত্রে প্রত্যেক স্থান থেকে টিএ/ডিএ গ্রহণ করেছেন। অনেক ক্ষেত্রে উল্লিখিত স্থানে না গিয়ে বা অনুষ্ঠান শুরুর আগে টিএ/ডিএ উত্তোলন করেছেন। কোনও প্রকার সময়সূচি উল্লেখ না করে ভ্রমণ আদেশ জারি করেছেন এবং ভ্রমণ আদেশ ছাড়া পরিদর্শন ও ভ্রমণ বিল উত্তোলন করেছেন।
অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, সাবেক মহাপরিচালক আবু হেনা মোস্তফা কামাল অধিদপ্তরে দায়িত্ব পালনের সময় বিধিমালা লঙ্ঘন করে অফিসের চেয়ার টেবিল ও ছোপার ১৫ লাখ টাকা ব্যয় দেখিয়েছেন। এ ক্রয়ের সঙ্গে ডিজির একান্ত সচিব ফিরোজ কবির জড়িত এ কারণে তার বিুরদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উত্থাপন করা হয়। ওই সময় ফিরোজ কবিরের বিরুদ্ধে কোন তদন্ত করতে দেওয়া হয়নি বলে প্রতিবেদনে বলা হয়। ফিরোজ কবির প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের বর্তমান মহাপরিচালক মঞ্জুরুল কাদেরে পিএস হিসেবে কর্মরত রয়েছেন।
তদন্ত কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির অধিদফতরে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিলে সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক ক্ষমতার অপব্যবহার করে প্রতিবেদনটি চাপা দিয়ে রাখেন। কিন্তু বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর নতুন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেনকে বিষয়টি জানানো হয়। প্রতিমন্ত্রী অভিযোগের গুরুত্ব বিবেচনা করে তদন্ত প্রতিবেদনটি খুঁজে বের করেন এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।