মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
তৃতীয় দফায় হাউস অব কমন্সে ব্রেক্সিট চুক্তি প্রত্যাখ্যাত হওয়ার পরও ভেঙে পড়ছেন না ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টেরিজা মে। তিনি ও তার মন্ত্রিপরিষদ ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে বিচ্ছেদের এই চুক্তি চতুর্থ দফায় পার্লামেন্টে ভোটে তোলার পরিকল্পনা করছেন। তাদের প্রত্যাশা এমপিরা চতুর্থ দফায় এতে সমর্থন দেবেন। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি। শুক্রবার ৫৮ ভোটের ব্যবধানে ব্রেক্সিট চুক্তির প্রত্যাখ্যাত হওয়ার পর মে বলেছেন, ব্রিটেনকে বিকল্প একটি পন্থা খুঁজে বের করতে হবে। ওদিকে এরই মধ্যে বিকল্প আটটি প্রস্তাবের ওপরে ভোট হয়ে গেছে। তাতে কোনো প্রস্তাবই পাস হয়নি। ফলে আগামী সোমবার দ্বিতীয় দফায় আরেকটি ‘ইন্ডিকেটিভ ভোট’ হওয়ার কথা রয়েছে। অপর এক খবরে বলা হয়, আর মাত্র ১৩ দিন পরই ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে বিদায় হতে চলেছে ব্রিটেন। ইইউর সঙ্গে ব্রিটেনের ভবিষ্যৎ সম্পর্কের রূপরেখা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী টেরিজা মের প্রস্তাবিত চুক্তি তৃতীয়বারের মতো ব্রিটিশ পার্লামেন্টে মুখ থুবড়ে পড়ায় আগামী ১২ এপ্রিল ব্রাসেলসের সঙ্গে লন্ডনের সম্পর্কোচ্ছেদ অনেকটা অনিবার্য হয়ে পড়েছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ব্রিটেনকে কোনো চুক্তি ছাড়াই মহাদেশীয় জোট থেকে বিদায় নিতে হতে পারে বলে জানিয়েছে ইউরোপিয়ান কমিশন (ইসি)। এক বিবৃতিতে ইসি বলেছে, কোনো চুক্তি ছাড়াই (নো-ডিল) ১২ এপ্রিল এখন সম্ভাব্য দৃশ্যপট হয়ে পড়েছে। এজন্য ২০১৭ সালের ডিসেম্বর থেকে ইইউ প্রস্তুতি নিচ্ছে। ১২ এপ্রিল রাতে চুক্তিবিহীন বিচ্ছেদের জন্য ইইউ সম্পূর্ণ প্রস্তুত। এর আগে বিকালে টেরিজা মের প্রস্তাবিত ব্রেক্সিট চুক্তি ব্রিটেনের হাউজ অব কমন্সে ৫৮ ভোটের ব্যবধানে নাকচ হয়ে যায়। প্রস্তাবের পক্ষে ২৮৬ ও বিপক্ষে ৩৪৪টি ভোট পড়ে। এ নিয়ে তৃতীয়বারের মতো ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাবটি পার্লামেন্টে প্রত্যাখ্যাত হলো। সর্বশেষ ভোটের আগে টেরিজা মে যেকোনো মূল্যে চুক্তিটি পাস করার আহ্বান জানিয়ে এমপিদের উদ্দেশে বলেছিলেন, প্রয়োজনে ইইউ থেকে ব্রিটেনের বিদায়ের (ব্রেক্সিট) পর তিনি প্রধানমন্ত্রীর পদ ছাড়বেন। কিন্তু তার পরও চুক্তিটি পার্লামেন্টের বৈতরণী পেরোতে ব্যর্থ হওয়ায় কোনোরকম পূর্বপ্রস্তুতি ছাড়াই ইউরোপীয় বাণিজ্যিক ও শুল্ক জোট থেকে ব্রিটেনের বিদায় অনেকটা অবধারিত হয়ে পড়েছে। ব্রিটিশ পার্লামেন্টে ভোটের ফলাফলে হতাশা প্রকাশ করে ইউরোপিয়ান কমিশন বলেছে, হাউজ অব কমন্সের নেতিবাচক রায়ে ইসি হতাশা প্রকাশ করছে। ২২ মার্চ ইউরোপিয়ান কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ব্রিটেনের প্রস্থান প্রক্রিয়া সম্পন্নের সময় ১২ এপ্রিল পর্যন্ত বাড়ানো হয়। ওই তারিখের আগে কীভাবে সামনে এগোনো যায়, তার প্রস্তাব ব্রিটেনকেই দিতে হবে। ইউরোপের সঙ্গে সম্পর্কোচ্ছেদে অনড় অবস্থানের পরিণতি সম্পর্কে ব্রিটেনকে হুঁশিয়ার করে ইসির বিবৃতিতে আরো বলা হয়, ইইউ ঐক্যবদ্ধ থাকবে। বিচ্ছেদ চুক্তিতে অন্তর্বর্তীকালীন বন্দোবস্তসহ অন্যান্য যেসব সুবিধা রয়েছে, চুক্তিবিহীন বিদায়ের ক্ষেত্রে সেগুলো প্রযোজ্য হবে না। চুক্তি ছাড়া বিদায়ের ক্ষেত্রে বিভিন্ন বিষয়ে বেছে বেছে সমঝোতার কোনো সুযোগও থাকবে না বলে এতে উল্লেখ করা হয়। ভবিষ্যৎ অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্কের রূপরেখা ছাড়াই ইইউ থেকে বিদায় এড়াতে হলে ব্রিটেনের হাতে ১১ দিন সময় আছে বলে জানিয়েছেন ইউরোপিয়ান কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড টাস্ক। ব্রিটিশ পার্লামেন্টে ভোটের ফল প্রকাশের পর গতকাল রাতে তিনি বলেন, ১২ এপ্রিল রাত ১১টায় খালি হাতে বিদায় নিতে না চাইলে ব্রিটিশ সরকারের হাতে ১১ দিন সময় আছে। এর মধ্যে ব্রিটেনকে ব্রেক্সিট নিয়ে নিজেদের পরিকল্পনা স্পষ্ট জানাতে হবে। ইউরোপিয়ান কাউন্সিল প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড টাস্ক আগামী ১০ এপ্রিল ইইউর (ব্রিটেন ছাড়া) ২৭টি সদস্য রাষ্ট্রের সরকারপ্রধানদের জরুরি বৈঠক ডেকেছেন। ওই বৈঠকে ব্রিটেনের যেকোনো প্রস্তাব বিবেচনা করতে ইউরোপীয় সরকারপ্রধানরা প্রস্তুত আছেন বলে তিনি জানান। তবে সেক্ষেত্রে বৈঠকের অন্তত দুদিন বাকি থাকতে ব্রিটেনের প্রস্তাব ইইউর সদস্য দেশগুলোর রাজধানীতে স্পষ্টভাবে পৌঁছতে হবে বলে তিনি উল্লেখ করেছেন। এদিকে পার্লামেন্টে ভোটের ফল প্রকাশের পর ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ব্রেক্সিট এখন অনেক বেশি সময়সাপেক্ষ ব্যাপার হয়ে পড়ল। এমপিরা সবরকম সুযোগ নষ্ট করেছেন। শেষ খবরে জানা গেছে, ভোটের ফলাফলে হতাশ টেরিজা মে পদস্থ মন্ত্রী ও সহযোগীদের নিয়ে জরুরি বৈঠকে মিলিত হয়েছেন। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী হয়তো পদত্যাগ করবেন অথবা বিকল্প প্রস্তাব পার্লামেন্টে হাজির করবেন- এমন বিভিন্ন সম্ভাবনার কথা শোনা যাচ্ছে বলে দ্য গার্ডিয়ান জানিয়েছে। এদিকে কট্টর ইউরোপবিদ্বেষী ও রক্ষণশীল ব্রিটিশ নাগরিকদের একটি অংশ ভোটের ফল প্রকাশের পরই পার্লামেন্ট স্কোয়ারে আনন্দ মিছিল করেছে। রক্ষণশীল রাজনীতিক ও ইইউ-বিমুখ ইউকে ইনডিপেনডেন্স পার্টির (ইউকিপ) সাবেক নেতা নাইজেল ফারাজ ছাড়াও ডোনাল্ড ট্রাম্পের ভক্ত কিছু মার্কিন নাগরিক এ মিছিলে উপস্থিত ছিলেন বলে স্কাই নিউজ জানিয়েছে। মিছিলে অংশগ্রহণকারীরা ‘বাই বাই ইইউ’ শ্লোগান দিতে দেখা যায়।
১লা এপ্রিল সোমবার: অচলাবস্থা কাটিয়ে সামনের পথ নির্ধারণ করা যায় কিনা সে জন্য ব্রেক্সিট বিষয়ক বিভিন্ন প্রস্তাবের ওপর দ্বিতীয় দফায় ভোট দেবেন এমপিরা। ৩রা এপ্রিল বুধবার: এদিন আরেক দফা ‘ইন্ডিকেটিভ ভোট’ হওয়ার কথা। ১০ই এপ্রিল বুধবার: ব্রেক্সিট সম্পাদনের জন্য ব্রিটেন কোনো অনুরোধ করলে তা বিবেচনায় নেয়া হবে কিনা সে বিষয়ে জরুরি বৈঠকে বসবেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের নেতারা। ১২ই এপ্রিল শুক্রবার: এদিনকে বলা হচ্ছে ব্রেক্সিট ডে। যদি বৃটেন বিলম্বের জন্য আবেদন না করে অথবা ইউরোপীয় ইউনিয়ন কোনো বিলম্ব অনুমোদন না করে তাহলে এদিনকেই ধরা হবে ব্রেক্সিট দিবস। ২৩-২৬ মে: ইউরোপীয় পার্লামেন্টারি নির্বাচন। দ্য গার্ডিয়ান, দ্য লোকাল, বিবিসি, রয়টার্স।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।