Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

৬ বছরেও মেলেনি নিজস্ব এজলাস

সাইবার ট্রাইব্যুনাল

স্টাফ রিপোর্টার : | প্রকাশের সময় : ৩০ মার্চ, ২০১৯, ১২:০৫ এএম

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনে মামলার বিচারের জন্য দেশের একমাত্র সাইবার ট্রাইব্যুনাল ৬ বছরেও পায়নি নিজস্ব কোনো এজলাস। ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালত ভবনের ষষ্ঠতলায় বিচারকের খাসকামরা রয়েছে, কিন্তু নেই কোনো এজলাস। বিশেষ জজ আদালত-৪ এর এজলাস ফাঁকা হলে বিচারকাজ পরিচালনা করতে হয় সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারককে। তবে ফাঁকা না থাকলে সাইবার ট্রাইব্যুালের বিচার কাজ স্থগিত রাখতে হয় কিংবা ওই আদালতের বিচারকাজ শেষ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়। তাই কোনো দিনই দুপুরের আগে বিচারকাজে বসতে পারেন না সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক। ফলে সারাদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা বিচারপ্রার্থীরা ভোগান্তির শিকার হন।
২০১৩ সালের অক্টোবর মাসে তিন মামলা নিয়ে চালু হয় এই ট্রাইব্যুনাল। বতর্মানে ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন মামলার সংখ্যা ১৪৭১টি। এ বিষয়ে ট্রাইব্যুনালের আইনজীবী ও কর্মকর্তারা জানান, সাইবার ক্রাইম ট্রাইব্যুনালের বেশিরভাগ মামলাই নারী সংক্রান্ত। এর মধ্যে অনেক মামলাই ঢাকার বাইরের, ফলে দূর-দূরান্ত থেকে ভুক্তভোগী ও তাদের স্বজনদের বিচারের আশায় দিনের পর দিন ঢাকায় আসতে হয়। এজলাস না থাকায় বিচারপ্রার্থীরা বসারও সুযোগ পান না, ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকেন তারা। অনেক সময় সাক্ষ্য না দিয়েই চলে যান সাক্ষীরা। আবার অনেক মামলা উচ্চ আদালতে স্থগিত হয়ে আছে।
২০১৩ সাল থেকে তিনজন বিচারক বিচার কাজ পরিচালনা করেছেন। দায়রা জজ পদমর্যাদার একজন বিচারক এই আদালতে বিচার করে থাকেন। ২০১৬ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুীর রায় ফাঁসের ঘটনায় তার আইনজীবী ব্যারিস্টার ফখরুলসহ কয়েকজনকে সাজার রায়টি ছিলো সবচেয়ে আলোচিত রায়।
২০১৩ সালে এ ট্রাইব্যুনালে বিচারের জন্য মামলা আসে ৩টি। ২০১৪ সালে ৩৩, ২০১৫ সালে ১৫২, ২০১৬ সালে ২৩৩, ২০১৭ সালে ৫৬৮, ২০১৮ সালে ৬৭৬, ২০১৯ সালের ২৭ মার্চ পর্যন্ত মামলা এসেছে ১৮৪টি। মোট মামলা ১৮৪৯টি। মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে প্রায় ৪৭৮টি। সর্বপ্রথম এ ট্রাইব্যুনালে সাজা দেয়া হয় গত ২০১৪ সালের ১৬ জুলাই জুয়েল নামে এক যুবককে। সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ডসহ ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয় জুয়েলকে। সবশেষ রায় দেয়া হয়েছে গত ৯ জানুয়ারি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, মরহুম প্রেসিডেন্ট জিল্লুর রহমান ও ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের ছবি বিকৃত করার অভিযোগে ২০১৩ সালে সাটুরিয়া থানায় সেই মামলা দায়ের করা হয়েছিলো। অনেক সফলতার মাঝেও এ ট্রাইব্যুনালে রয়েছে নানাবিধ সমস্যা। গত ৬ বছরে নিজস্ব কোনো এজলাস পায়নি ট্রাইব্যুনাল। নেই প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র। তথ্যপ্রযুক্তি আইনের অধীনে ট্রাইব্যুনাল প্রতিষ্ঠিত হলেও প্রযুক্তির ছোঁয়া কমই এখানে। ধীর গতিতেই চলছে বিচার কাজ। কিন্তু কতদিন এভাবে চলবে তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করছেন সাইবার ট্রাইব্যুনালের পিপি নজরুল ইসলাম শামীম। তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরেই অন্য এজলাসে ট্রাইব্যুনালের কাজ চালিয়ে নিতে হচ্ছে। এছাড়া প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র নেই বললেই চলে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ