Inqilab Logo

বুধবার, ০১ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১, ২১ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আবারো ক্লপের ফাইনাল হতাশা

প্রকাশের সময় : ২০ মে, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্পোর্টস ডেস্ক : আরো একটি ফাইনাল। ইয়ুর্গুন ক্লপের আরো একটি হতাশার কাব্যগাথা! জার্মান, ইংল্যান্ড ও ইউরোপ মিলে এ নিয়ে টানা পাঁচ-পাঁচটি ফাইনালে উঠেও শিরোপাটা অধারাই রয়ে গেল জার্মান কোচের। তাঁর হতাশার পাতায় সর্বশেষ সংযোযন পরশু ইউরোপ লিগের ফাইনাল। এগিয়ে থেকেও সেভিয়ার কাছে ৩-১ গোলে হেরেছে তাঁর দল লিভারপুল।
অথচ সেভিয়া কোচ উনাই এমেরিকের ফাইনালের কাব্যটা দেখুন কি মধুর! এ নিয়ে সেভিয়াকে টানা তিন-তিনবার উয়েফা ইউরোপা লিগের শিরোপা এনে দিলেন ৪৪ বছর বয়সী স্প্যানিশ কোচ। ইউরোপিয়ান ফুটবলে এমন কীর্তি নেই আর কোন দলের। তিনবার ইউরোপা জিতে উনাই নিজেই উঠে গেছেন আরেক উচ্চতায়। কোচ হিসেবে তিনবার ইউরোপা লিগ জয়ের কীর্তি আছে কেবল ইতালিয়ান কোচ জিওভান্নি ত্রাপাত্তনির। জুভেন্টাসকে দুই বার (১৯৭৬-৭৭, ১৯৯২-৯৩) ও ইন্টার মিলানকে একবার (১৯৯০-৯১) এই শিরোপা এন দিয়েছিলেন জিওতান্নি। এই তালিকায় নতুন সংযোজন উনাই।
এর আগে ২০০৫-০৬ ও ২০০৬-৭ মৌসুমে ইউরোপার শিরোপা ঘরে তুলেছিল সেভিয়া। সব মিলে রেকর্ড ৫ বার ইউরোপের দ্বিতীয় সেরা টুর্নামেন্টের শিরোপা দখলে নিল স্প্যানিশ দলটি। তিনবার করে এই ট্রফি জয়ের রেকর্ড আছে জুভেন্টাস, ইন্টার মিলান ও লিভারপুলের। চারবার শিরোপা জিতে আগেই ফুটবল বোদ্ধাদের কাছ থেকে ‘ইউরোপা স্পেশালিস্ট’ তকমাটা গায়ে সেটেছিল সেভিয়া। টানা তৃতীয় ও সাকুল্যে পঞ্চম শিরোপা জয়ের পর তাই সেভিয়া কোচ উমাই বলতেই পারেন, ‘আসলে ইউরোপা আমাদের টুর্নামেন্ট।’ একই সাথে আরো একটি পুরস্কার মিলেছে সেভিয়ার ভাগ্যে। আগামী মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের গ্রæপ পর্বে সরাসরি খেলবে তারা।
সেভিয়ায় যখন শিরোপা উল্লাস আনফিল্ডের দলে তখন দীর্ঘ আট বছর পর ইউরোপিয়ান কোন আসরের ফাইনালে উঠেও পরাজয়ের হতাশা। সর্বশেষ ২০০৮ সালে চ্যাম্পিয়ন্সলিগের ফাইনালে এসি মিলানের কাছে হেরেছিল লিভারপুল। ইউরোপার সর্বশেষ ট্রাফিটাও ১৫ বছরের পুরোনো। পরশু অবশ্য শিরোপা ছুঁয়ে দেখার পথে প্রথম পদক্ষেপে এগিয়ে ছিল তারাই। সুইজারল্যান্ডের বাসেলের সেন্ট জ্যাকোব পার্ক স্টেডিয়ামে ম্যাচের ৩৫তম মিনিটে ড্যানিয়েল স্ট্যারিজের গোলে প্রথম উল্লাসে মেতেছিল লিভারপুল। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই ভিন্নরূপে দেখা দেয় স্প্যানিশ প্রতিপক্ষরা। ১৭ সেকেন্ডের মাথায় কেভিন গামেইরোর গোল স্তব্ধ করে দেয় ইংলিশ দর্শকদের। ম্যাচের দৃশ্যপটও এরপর পাল্টাতে থাকে। পরের গল্পটা স্প্যানিশ মিডফিল্ডার কোকের। ৬৪ থেকে ৭০, এই ৬ মিনিটের ব্যবথানে জোড়া গোল করে দলের শিরোপা নিশ্চিত করেন সেভিয়া অধিনায়ক। ইউরোপা লিগে টানা ২৪ ম্যাচ গোল না পাওয়া কোকে ফাইনালে এসেই ছড়ালেন দ্যুতি। তাতেই ভাগ্য পুড়ল ক্লপের।
ক্লপের ফাইনাল ভাগ্যটা মন্দ বলতেই হয়। আগের ক্লাব বরুশিয়া ডর্টমুন্ডের সময় দুটি জার্মান কাপ (২০১৪ ও ২০১৫) ও ২০১৩ সালের চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে হেরেছিলেন, লিভারপুলে এসে ফাইনালের হতাশাটা হয়েছে আরো লম্বা। লিগ কাপের ফাইনালে ম্যানচেস্টার সিটির কাছে টাইব্রেকারে হারের পর ইউরোপার এই হতাশা ফাইনালের পঞ্চম সংযোজন। নিজেও জানতেন সংবাদ সম্মেলনে এমন ধরনের প্রশ্নই হয়তো অপেক্ষা করছে। আগ বাড়িয়ে তাই প্রসঙ্গটা তুললেন তিনি নিজে। অবশ্য কিছুটা রসিকতার ছলে, ‘আরো একটি ফাইনালে যাওয়ার জন্য আমি জোর চেষ্টা চালাবো।’
তবে হতাশা ঢাকার জন্য নিজেই দর্শন দাঁড় করালেন ৪৮ বছর বয়সী, ‘জীবনে ফুটবলই সবকিছু না। এটা জীবনের ছোট্ট একটা অংশ মাত্র। এর বাইরের জীবনটা আমার চমৎকার। এই যে আমি লিভারপুলের মত ঐতিহ্যবাহী একটা দলের কোচ এর জন্যে কি আমি ভাগ্যবান নই?’ দলের সদস্যদেরও আপাতত নিজের দর্শন দিয়েই সান্ত¦না দিচ্ছেন ক্লপ, ‘আজ আমরা যা খেলেছি তা আমাদের সমর্থের ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ। আমি কথা দিচ্ছি আজকের এই পরাজয় আমাদের বদলে দেবে। আমরা আরো শক্তিশালী হয়ে ফিরব।’
দেখা যাক ক্লপ তার ফাইনালের ভাগ্য বদলাতে পারে কি না। ও হ্যাঁ, ২০১২ সালের জার্মান কাপের ফাইনালে কিন্তু জিতেছিলেন ক্লপ।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আবারো ক্লপের ফাইনাল হতাশা
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ