Inqilab Logo

সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আদালতের নির্দেশ উপেক্ষিত

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিশুদের শারীরিক শাস্তি

আইয়ুব আলী | প্রকাশের সময় : ২১ মার্চ, ২০১৯, ১২:০৩ এএম

চট্টগ্রামসহ দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে শিশুদের ওপর শারীরিক ও মানসিক শাস্তির বিষয়ে হাইকোর্টের রায়, মন্ত্রণালয়ের আদেশ এবং সরকারি নির্দেশনা মানা হচ্ছে না। এখনো শিশুরা বেত, ডাস্টার, স্কেল দ্বারা শারীরিক নির্যাতন এবং মানসিকভাবে নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। জানা গেছে, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনে ২০১২-২০১৮ সালে (৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৮ পর্যন্ত) ৭০টি অভিযোগ প্রেরণ করা হয়েছে যা এখনো প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
অধিকাংশ শিক্ষার্থীরা শিক্ষক কর্তৃক মারধর, চুল টানা, ময়লা পানি খেতে বাধ্য করাসহ বিভিন্ন ধরনের নির্যাতনের শিকার হয়। শিক্ষকদের শাস্তি স্বরূপ সাময়িক বরখাস্ত, চাকুরীস্থল হতে বদলি, চাকুরীচ্যুতিসহ কিছু কিছু ক্ষেত্রে অভিভাবক কর্তৃক থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। ব্লাস্টের গবেষণায় এরূপ তথ্য উঠে এসেছে।
২০১৬ সালের ১৯ মার্চ প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় ছাত্র-ছাত্রীদের শারীরিক ও মানসিক শাস্তি রহিত করে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানসমূহকে অফিস আদেশ জারি করে। আদেশসমূহ বাস্তবায়নে বর্তমান অবস্থা জানতে চেয়ে ব্লাস্টের পক্ষ থেকে জানুয়ারি থেকে জুন ২০১৮ পর্যন্ত তথ্য অধিকার আইনে সর্বমোট ১৮টি আবেদন করা হয়েছে। এর মধ্যে জাতীয় পর্যায়ে ৪টি এবং বিভাগীয় পর্যায়ে ১৪টি আবেদন প্রেরণ করা হয়।
বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড এন্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট) এবং আসক যৌথভাবে ২০১০ সালের ১৮ জুলাই রিট পিটিশন নং-৫৬৮৪/১০ দায়ের করে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট ২০১১ সালের ১৩ জানুয়ারি রায় প্রদান করেন। রায়ে উল্লেখ করা হয় যে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক দ্বারা শিক্ষার্থীদের কোন রকম শারীরিক শাস্তি এবং নিষ্ঠুর, অমানবিক, অপমানকর আচরণ শিশু শিক্ষার্থীদের জীবন ও ব্যক্তিস্বাধীনতার সাংবিধানিক অধিকার লংঘন করে। বিশেষ করে তা বাংলাদেশের সংবিধানের ২৭, ৩১, ৩২, ৩৫ (৫) অনুচ্ছেদ ও মানবাধিকারের পরিপন্থী।
শিশু আইন ২০১৩ এর ধারা ৭০ অনুসারে কোন শিশুকে আঘাত, উৎপীড়ন, অবহেলাসহ এ ধরণের ব্যবহারের মাধ্যমে শিশুর শারীরিক ও মানসিক ক্ষতি করা শান্তিযোগ্য অপরাধ। আন্তর্জাতিক আইন অনুসারেও শিশুদের আত্মসম্মান ও শারীরিক ক্ষতি হতে রক্ষা পাওয়ার অধিকার প্রদান করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক শিশু অধিকার সনদ ও আন্তর্জাতিক নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকার সনদে স্বাক্ষর প্রদানকারী দেশ হিসেবে বাংলাদেশ যে কোন শিশুর প্রতি যেন নির্যাতন, অমানবিক ও অশ্রদ্ধাজনক আচরণ না করা বিষয়ে অঙ্গীকারবদ্ধ।
জাতিসংঘ শিশু অধিকার সনদ ১৯৮৯ এর অনুচ্ছেদ- ৩ (১), ১৯ (১), ৩৭(১), ৩৭ (২), ৩৭(৩) অনুসারে শিশুদের শারীরিক শাস্তি প্রদান নিষিদ্ধ। বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকার সনদ, ১৯৬৬- এ বলা হয়েছে কোন ব্যক্তির উপর শুধুমাত্র, শারীরিক শাস্তি নয় মানসিক নির্যাতনও নিষিদ্ধ।
ব্লাস্ট চট্টগ্রাম ইউনিটের সমন্বয়কারী এডভোকেট রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, শিশুদের ওপর শারীরিক শাস্তির বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধিকরণেব্লাস্টের মাধ্যমে শিক্ষক-অভিভাবকদের নিয়ে মতবিনিময়সহ এ বিষয়ে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার সহায়তা নেয়া হবে।



 

Show all comments
  • ম নাছির উদ্দীন শাশ ২১ মার্চ, ২০১৯, ১২:৩১ পিএম says : 0
    শিশুরা অবুঝ বাবা মায়ের পরিবারের ইচ্ছার উপর তার পদ চলা। মা বাবার আশা করেন ভাল স্কুলে পড়বেন। এবার শুরু হলো প্রতিযোগিতা ভোরে মা রেডি অবুঝ শিশুর জীবন যুদ্ধ শুরু বই খাতা ব্যাগ কাদে। পারিবারিক ভাবে মানুষিক অত্যাচার শুরু হলো তার উপর। স্কুলেতো শিক্ষক মহোদয় গন হাতে বেত হিস্র আচরন করে কিছু শিক্ষক পাঠদানে আন্তরিকতা স্নেহ মমতা মাতৃত্বের ভালবাসা পাওয়া য়ায় না। কেন? কারন ঐ সকল শিক্ষা প্রতিষ্টান লাভের উদ্দেশ্য গড়া। সব চায়তে বড় ভয়াবহ খতি করছি আমরা তাকে নৈতিক শিক্ষা দিতে পারছিনা। কোরান সুন্নাহ থেকে প্রাথমিক ভাবে বন্ছিত করছি। কারন নৈতিক শিক্ষা না থাকলে সে বাবা মাকে উপযুক্ত সম্মান করে না। তাই জাতির প্রযোজনে প্রাথমিক শিক্ষা নীতি প্রনয়ন করা উচিত।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: শিক্ষা


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ