নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
যে কোন ‘প্রথম’ই একটু বেশি আবেগের। আবেগঘন সেই মুহূর্তের সাক্ষি হলো আফগানিস্তান ক্রিকেট। নিজেদের ইতিহাসে প্রথম টেস্ট জয়ের স্বাদ পেল তারা। দেরাদুনে সিরিজের একমাত্র টেস্টে আয়ারল্যান্ডকে ৭ উইকেটে হারায় আফগানরা। টেস্ট ক্রিকেটের নবীনতম দলটি নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচেই জয় তুলে নিলো।
গত বছরের জুনে বেঙ্গালুরুতে আফগানিস্তান তাদের অভিষেক টেস্টে ভারতের কাছে দুই দিনেই হেরেছিল ইনিংস ব্যবধানে। ৯ মাস পর দ্বিতীয় টেস্টেই প্রথম জয় পেল আফগানরা। ম্যাচ শেষে এই জয়কে আফগানিস্তানের জন্য ঐতিহাসিক উল্লেখ করেন দলীয় অধিনায়ক আসগর আফগান, ‘টেস্ট ক্রিকেট খেলাটা আমাদের কাছে ছিল স্বপ্ন। আর আজ আমরা আমাদের দ্বিতীয় টেস্ট খেললাম এবং ম্যাচটা জিতলাম। আফগানিস্তানের জন্য, আফগানিস্তানের মানুষের জন্য, আমাদের দলের জন্য, আমাদের ক্রিকেট বোর্ডের জন্য এটা একটা ঐতিহাসিক দিন।’
তবে এর জন্য তার দল প্রস্তুত ছিল বলেও জানান আফগান, ‘আমরা অনেক বড় দৈর্ঘ্যরে ম্যাচ খেলেছি। আর সে কারণে স্বাভাবিকভাবেই আমরা পরিণত হয়েছি। এখন আমরা ঘরের মাঠে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটও খেলছি। আগে আমরা তিন-দিনের ও দুই-দিনের ক্রিকেট খেলতাম। কিন্তু এখন আমরা প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট খেলছি।’
পুরো ম্যাচে বল ও ব্যাট হাতে আলো ছড়িয়েছেন আফগান ব্যাটসম্যান ও বোলাররা। প্রথম ইনিংসে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামা আইরিশদের মাত্র ১৭২ রানে গুঁড়িয়ে দেন পেসার ইয়ামিন আহমাদজাই, অফ স্পিনার মোহাম্মদ নবি, অভিষিক্ত চায়নাম্যান বোলার ওয়াকার সালামখেইল ও লেগ স্পিনার রশিদ খান। টেস্টের তিন ফর্ম্যাটেই সবচেয়ে কম বয়সে ৫ উইকেট নেয়ার রেকর্ড গড়েন রশিদ। ভারত বাদে প্রথম দল হিসেবে গত ছয় বছরে ভারতের মাটিতে টস হেরে টেস্ট জেতার কৃতিত্ব তাই বোলারদেরই দিচ্ছেন আসগর, ‘আমি বোলারদের বিশেষ করে অভিনন্দন জানাতে চাই, রশিদ, ওয়াকার, ইয়ামিন, কারণ উইকেট ব্যাটিং সহায়ক ছিল।’
আফগানিস্তানের চেয়ে কম ম্যাচ খেলে প্রথম টেস্ট জয় পেয়েছে শুধু অস্ট্রেলিয়া। অস্ট্রেলিয়া অবশ্য জিতেছিল ইতিহাসের প্রথম টেস্টই, ১৮৭৭ সালের ১৯ মার্চ মেলবোর্নে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। আফগানিস্তানের মতো নিজেদের দ্বিতীয় টেস্টে প্রথম জয় পেয়েছিল ইংল্যান্ড ও পাকিস্তান। ইংল্যান্ড প্রথম জয় পেয়েছিল অভিষেকের পরের মাসে, পাকিস্তান অভিষেকের মাসেই। তালিকায় এরপর আছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ক্যারিবীয়রা প্রথম জয়ের স্বাদ পায় ষষ্ঠ টেস্টে এসে, সময় লেগেছিল দুই বছর।
এরপর আছে জিম্বাবুয়ে (১১ টেস্ট ও ৩ বছর), দক্ষিণ আফ্রিকা (১২ টেস্ট ও ১৭ বছর), শ্রীলঙ্কা (১৪ টেস্ট ও ৩ বছর), ভারত (২৫ টেস্ট ও ২৪ বছর), বাংলাদেশ (৩৫ টেস্ট ও ৫ বছর)। প্রথম জয় পেতে সবচেয়ে বেশি ৪৫ ম্যাচ লেগেছে নিউজিল্যান্ডের। কিউইদের প্রথম টেস্ট জয় এসেছে অভিষেকের ২৬ বছর পর।
নিজেদের প্রথম টেস্ট জয়ের মঞ্চ আগের দিনই তৈরি করে রেখেছিলো আফগানিস্তান। দেরাদুনের রাজিব গান্ধি স্টেডিয়ামে ১৪৭ রানের লক্ষ্যে তৃতীয় দিন শেষে তারা করে ১ উইকেটে ২৯। শেষ দুই দিনে ৯ উইকেট হাতে নিয়ে করতে হতো ১১৮ রান। কিন্তু এদিন অর দুই উইকেট হারিয়েই ইতিহাসের দ্বারপ্রান্তে পেঁয়ে যায় আসগর আফগানের দল।
আগের দিন এহসানউল্লাহ ১৬ ও রহমত শাহ ১১ রানে অপরাজিত ছিলেন। চতুর্থ দিনও ব্যাট হাতে তারা ছিলেন অবিচল। জয়র জন্য যখন তিন রান দরকার তখন বিচ্ছিন্ন হয় তাদের ১৩৯ রানের জুটি। ইহসানুল্লাহ অপরাজিত থাকেন ১২৯ বলে ৮ চার ও ২ ছক্কায় ৬৫ রান করে। রহমত আউট হন ১২২ বলে ১৩চারে ৭৬ রানের দুর্নান্ত এক ইনিংস উপহার দিযে।
এই সফরে তিন ম্যাচের টি-২০ সিরিজ ৩-০ ব্যবধানে জয়ী হয় আফগানিস্তান। পাঁচ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ ২-২ ব্যবধানে ড্র হয়।
আয়ারল্যান্ড : ১৭২ ও ২৮৮।
আফগানিস্তান : ৩১৪ ও (লক্ষ্য ১৪৭) (আগের দিন শেষে ২৯/১) ৪৭.৫ ওভারে ১৪৯/৩ (ইহসানউল্লাহ ৬৫*, রহমত ৭৬, নবি ১, শাহিদি ৪*; ডকরেল ০/৫৮, ম্যাকব্রায়ান ১/৩৫, ক্যামেরন-ডাউ ১/২৪, মারটাঘ ০/১৫, টম্পসন ০/৯, বালবার্নি ০/৮)।
ফল : আফগানিস্তান ৭ উইকেটে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ : রহমত শাহ (আফগানিস্তান)।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।