পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সদ্যসমাপ্ত ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনে অনিয়ম ও কারচুপির অভিযোগ এনে নির্বাচন বর্জন করে ছাত্রলীগ ছাড়া বাকি সব প্যানেল। এনিয়ে পুনঃনির্বানের দাবিতে বিরোধী ছাত্র সংগঠনগুলোর নেতৃত্বে ক্যাম্পাসে চলছে লাগাতার আন্দোলন। নির্বাচনের পাঁচদিন পর এসব অভিযোগের ব্যাখ্যা দেয়া হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে। গতকাল শনিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা সাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এসব ব্যাখ্যা দেয়া হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, নির্বাচন সংক্রান্ত কতিপয় বিষয়ে কিছু সম্মানিত ব্যক্তির বিভ্রান্তিকর বক্তব্য ও মন্তব্যের প্রতি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকৃষ্ট হয়েছে। এ বিভ্রান্তি নিরসনের লক্ষ্যে এই ব্যাখ্যা দেয়া হয়েছে।
ক্যাম্পাসে সহিংসতার জন্ম দিতেই এসব অভিযোগ আনা হয়েছে উল্লেখ করে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, যারা ক্যাম্পাসে সহিংসতা ও বড় ধরনের অনভিপ্রেত ঘটনার জন্ম দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে তথা দেশে অশান্তি ও অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করে হীন রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলের সুযোগ খুঁজছিলেন, তাদের উদ্দেশ্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল্যবোধ ধারণকারী শিক্ষার্থীরা পূরণ হতে দেয়নি। বিজ্ঞপ্তিতে নির্বাচনের ব্যাবস্থাপনা নিয়ে উথাপিত অভিযোগ সম্পর্কে বলা হয়, দীর্ঘ প্রায় তিন দশক পর ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনের ন্যায় এক বিরাট কর্মযজ্ঞের আয়োজনে ও ব্যবস্থাপনায় অনিচ্ছাকৃত কিছু ত্রুটি-বিচ্যুতি থাকতে পারে; যা নিখুঁত নয়। ব্যবস্থাপনার নীতিমালায় কিছু অস্পষ্টতা ও অপর্যাপ্ততা ছিল। ফলে কোথাও কোথাও বিভিন্ন প্রশ্ন, যেমন, ভোটারের হাতে অমোচনীয় কালি লাগানো, স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স ব্যবহার প্রভৃতি উত্থাপিত হয়েছে। এসবের সংস্কৃতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাচনের ইতিহাসে নেই। তবে ভবিষ্যতের জন্য ভাবনার অনেক সুযোগ করে দিল এবারের অভিজ্ঞতা। স্মরণীয় যে, ভোট গ্রহণ ও ভোট প্রদান প্রক্রিয়ায় উল্লিখিত প্রশ্নসমূহের নেতিবাচক প্রভাবের কথা কেউ বলতে পারেননি। শিক্ষার্থীদের দীর্ঘ লাইন, কালক্ষেপণ প্রভৃতি বিষয়ে উত্থাপিত বিভিন্ন মন্তব্যকে হল প্রশাসন বিবেচনায় রেখেছিল। যাতে কোনো কৃত্রিম সংকট তৈরি বা ভোগান্তি না হয় সেজন্য ভোট প্রদানের সময় ও ভোটার সংখ্যা আমলে নিয়ে পর্যাপ্ত সংখ্যক বুথ তৈরি ও ব্যালট পেপার সরবরাহ-টেবিল স্থাপন করা হয়েছিল।
কুয়েত মৈত্রী হলের ঘটনার ব্যাখ্যায় বলা হয়, এটি দুঃখজনক যে, বাংলাদেশ কুয়েত-মৈত্রী হলে একটি অনাকাক্সিক্ষত ও অপ্রত্যাশিত ঘটনা ঘটে। অবশ্য ভোটগ্রহণ শুরুর পূর্বেই এটি চিহ্নিত হওয়ায় বড় ধরনের কর্মবিপর্যয় এড়ানো সম্ভব হয়। ভোটকেন্দ্রের বুথ সংলগ্ন একটি কক্ষ থেকে ব্যবহৃত ব্যালট ভর্তি একটি ব্যাগ উদ্ধার করা হয়। বিষয়টি ভিসি অবহিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তিনি উক্ত হলের ভোটগ্রহণ কার্যক্রম স্থগিত করার নির্দেশ দেন। হলের ভারপ্রাপ্ত প্রভোস্টকে তাৎক্ষণিক দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়ে ভিসি একজন নতুন প্রাধ্যক্ষ নিয়োগ দেন। ঘটনার তথ্য অনুসন্ধানের জন্য ৫-সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেন। চিফ রিটার্নিং অফিসার নতুন করে সংশ্লিষ্ট হলের ব্যালট পেপার ছাপিয়ে নতুন ঘোষিত সময়ানুসারে ভোট গ্রহণ কার্যক্রম শুরু করেন। এখানে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কোনো অস্বচ্ছতা বা শৈথিল্যের প্রশ্ন অবান্তর।
রোকেয়া হলে ব্যালট পেপার উদ্ধার করার বিষয়ে বলা হয়, অত্যন্ত বিভ্রান্তিকরভাবে রোকেয়া হলে ব্যালট পেপার উদ্ধারের কথা বলা হয়। মূলত উক্ত ব্যালট পেপার ব্যালট বাক্সে ছিল না; চিফ রিটার্নিং অফিসার কর্তৃক প্রেরিত ট্রাংকের মধ্যে সংরক্ষিত ছিল। সেসব ব্যালট পেপারে কোনো সিল মারা ছিল না। এছাড়া ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচন আয়োজন ও পরিচালনার সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ৪৫০ জন শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী জড়িত ছিলেন। তাদের কেউ নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কাজের কোনো পর্যায়ে কোনো অনিয়মের বিষয় উথাপন করেননি বলেও জানানো হয় বিজ্ঞপ্তিতে।
ফলাফল প্রকাশে দেরি হওয়ার কারণ সম্পর্কে বলা হয়েছে, সর্বশেষ ভোটগ্রহন শেষ হওয়া সুফিয়া কামাল হলের ফলাফল পাওয়া গেছে রাত প্রায় ১২টায়। এরপর ১৮টি হলের প্রাপ্ত ফলাফল সমন্বয় করে ডাকসুর চূড়ান্ত ফল তৈরি করতে সময় লাগে সকাল ৩টা পর্যন্ত। এরপর সকাল সাড়ে ৩টায় ফলাফল আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হয়। এসব অভিযোগের বাইরে ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনে যদি ভোটের কোন অনিয়ম, অসততা, কারচুপি, জালিয়াতি প্রভৃতির বস্তুনিষ্ঠ প্রমাণ কারো কাছে থাকে, তাহলে সেসব সুনির্দিষ্টভাবে বিশ্ববিদ্যালয়কে অবহিত করার আহবান জানানো হয়। বলা হয় যদি এ ধরনের কোন অভিযোগ পাওয়া যায় তাহলে যথাযথ তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এবং ইতোমধ্যে বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন ও নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী প্রার্থী ও প্যানেল থেকে প্রাপ্ত অভিযোগগুলো খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
ফলাফল পুন:গননার আবেদন
এদিকে ঘোষিত ফলাফল পুনরায় গননা করার জন্য আবেদন করেছেন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের প্যানেলের কমনরুম ও ক্যাফেটেরিয়া বিষয়ক সম্পাদক পদপ্রার্থী কানেতা ইয়া লাম লাম। গত বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর লিখিতভাবে এ আবেদন করেন তিনি। লিখিত আবেদনে তিনি বলেন, ডাকসুর নির্বাচনে আমি কমনরুম ও ক্যাফেটেরিয়া সম্পাদক পদপ্রার্থী ছিলাম। নির্বাচনে নানা কেন্দ্রে নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠে। ফলাফলে দেখানো হয় আমি সাত হাজার ১৯৯টি ভোট পেয়েছি। শেষমুহুর্তে আমার কোন এজেন্ট না থাকায় আমার প্রাপ্ত ভোটের সংখ্যা কমিয়ে ছাত্রলীগের প্রার্থীর ভোট বাড়িয়ে দেখানো হয়েছে বলে আমি মনে করছি। এমতবস্থায় উক্ত পদে ভোট পুন:গননার জন্য আমি আবেদন করছি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।